ফের বেআইনি নির্মাণের অভিযোগ। নিজস্ব চিত্র।
গন্ধেশ্বরী নদীর গর্ভ দখল করে ফের বেআইনি নির্মাণের চেষ্টার অভিযোগ উঠল স্থানীয় এক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে। বাঁকুড়া শহরের সতীঘাট এলাকায় নদীর গর্ভে নির্মাণের ভিত খনন হতেই চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। স্থানীয়রা বিষয়টি তড়িঘড়ি পুরসভা ও পুলিশ প্রশাসনের নজরে আনতেই নির্মাণ বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়।
বাঁকুড়া শহরের দু’পাশ দিয়ে বয়ে গিয়েছে গন্ধেশ্বরী ও দারকেশ্বর নদ। এই দুই নদীকেই ‘বাঁকুড়া শহরের প্রাণ’ বলা হয়। শহরে জল সরবরাহ করার পাশাপাশি পরিবেশ রক্ষার ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা রয়েছে এই নদীগুলির। দীর্ঘ অবহেলার জেরে মৃতপ্রায় হয়ে পড়া গন্ধেশ্বরী নদীর প্রাণ ফেরাতে সম্প্রতি ওই নদীর গর্ভে ড্রেজ়িং করা হয়। তাতে গন্ধেশ্বরী নদী কিছুটা পুনর্জীবন পেলেও নদীর পাড় এমনকি, মাঝেমধ্যে নদীগর্ভ দখলেরও অভিযোগ উঠে আসতে শুরু করে। বৃহস্পতিবার সে রকমই এক অভিযোগকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে বাঁকুড়া শহর লাগোয়া সতীঘাট এলাকায়। স্থানীয়দের অভিযোগ, বাঁকুড়ার বাইপাসের ধারে গন্ধেশ্বরী নদী গর্ভের একাংশ দখল করে সেখানে গত কয়েক দিন ধরে ভিত খনন করাচ্ছিলেন স্থানীয় ব্যবসায়ী সমীর ঘোষাল। নির্মাণের জন্য নামানো হয়েছিল ইট, বালিও। স্থানীয়দের দাবী, ওই ব্যবসায়ী যে নির্মাণের পরিকল্পনা করেছিলেন, তাতে নদীর আসল গতিপথ রুদ্ধ হয়ে বন্যার আশঙ্কা বহুগুণে বৃদ্ধি করত। সেই আশঙ্কা মাথায় রেখে স্থানীয়েরা বৃহস্পতিবার সকালে খবর দেন বাঁকুড়া পুরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার দিলীপ আগরওয়ালকে। খবর পেতেই ঘটনাস্থলে ছুটে যান ওই কাউন্সিলার। এর পর তিনি খবর দেন বাঁকুড়া পুরসভা ও বাঁকুড়া সদর থানায়। পরে পুরসভার ইঞ্জিনিয়ার ও বাঁকুড়া সদর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ওই নির্মাণ কাজ বন্ধের নির্দেশ দেয়।
বাঁকুড়া শহরের বাসিন্দা সুব্রত চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘নদীর বুকে যে ভাবে ওই নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছিল, তাতে নদীর স্বাভাবিক গতিপথ রুদ্ধ হত। এর ফলে মজে যাওয়া গন্ধেশ্বরী নদী নিজের স্রোত হারিয়ে মরা নদীতে পরিণত হত। পাশাপাশি বর্ষায় জল অবরুদ্ধ হয়ে দু’পাড়ের বসতিকে ভাসিয়ে নিয়ে যেত।’’ সতীঘাট এলাকার বাসিন্দা তাপস দে বলেন, ‘‘প্রশাসনের নাকের ডগায় যে ভাবে নদীর বুকে নির্মাণ হচ্ছে, তাতে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েই প্রশ্ন উঠছে। নদীর বুকে এই অবৈধ নির্মাণ ও দখলদারি রুখতে প্রশাসনকে আরও কঠোর হতে হবে।’’
নদীর বুকে এই নির্মাণের অভিযোগ যাঁর বিরুদ্ধে, সেই সমীরের যুক্তি, ‘‘সকলেই নদীর জায়গা দখল করে ব্যবসা করছে। আমিও একজন বেকার। তাই ভেবেছিলাম এই নির্মাণ করে নির্মাণ সামগ্রীর ব্যবসা খুলব। সেই উদ্দেশ্যেই এখানে ইট ও বালি মজুত করেছিলাম।’’
বাঁকুড়া পুরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার দিলীপ আগরওয়াল বলেন, ‘‘স্থানীয়দের কাছে অভিযোগ পেতেই এলাকায় এসে দেখি নদীর বুকে ভিত খনন করা হয়েছে। নদী গর্ভ এভাবে দখল করে নির্মাণ করা শুধু বেআইনি নয়, আইনত দণ্ডনীয়ও। সে কথা ভেবেই বিষয়টি পুরসভা ও পুলিশের নজরে নিয়ে এসেছিলাম।’’
বাঁকুড়া পুরসভার উপ-পুরপ্রধান হীরালাল চট্টরাজ বলেন, ‘‘অভিযোগ পাওয়া মাত্রই পুরসভার ইঞ্জিনিয়ার ঘটনাস্থলে যান। তাঁর কথা না শোনায় বাঁকুড়া সদর থানায় বিষয়টি জানানো হয়। পরে পুলিশের সাহায্য নিয়ে পুরসভা নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy