বিসর্জনে ডিজে। নিজস্ব চিত্র
দুর্গা পুজো থেকে সরস্বতী পুজো ডিজে সাউন্ড বক্সের দৌরাত্মে অতিষ্ঠ শান্তিনিকেতন-বোলপুরের বাসিন্দারা। রবিবার জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষা। কয়েকদিন পরেই মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শুরু হবে। তার আগে সরস্বতী পুজোর শুরু থেকে বিসর্জন পর্যন্ত তারস্বরে ডিজে সাউন্ড বক্স বাজায় লেখাপড়া মাথায় উঠেছে পরীক্ষার্থীদের। শুধু পরীক্ষার্থীরাই নন, এলাকার প্রবীণ মানুষেরাও টানা তিন-চারদিন ধরে শব্দব্রহ্মের জেরে অসুস্থ বোধ করছেন।
বোলপুরে গত কয়েক বছরে বারোয়ারি সরস্বতী পুজোর সংখ্যা বেড়েছে। পুজোর আয়োজন যেমনই হোক না কেন বিসর্জনের সময় ডিজে সাউন্ড বক্সে কার আওয়াজ কতটা বেশি তার প্রতিযোগিতা চলে। সরস্বতী পুজো একদিনের হলেও বারোয়ারি পুজোয় মণ্ডপে প্রতিমা রেখে দেওয়া হয় তিন-চার দিন। ডিজে সাউন্ড বক্সও চলে সমান তালে। শহরে যাঁরা সাউন্ড সিস্টেম ভাড়া দেন তাঁরাও ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে চড়া স্বরে বাজে এমন বক্সই রেখেছেন বলে জানিয়েছেন। কিন্তু এই ধরনের সাউন্ড সিস্টেম যে শব্দবিধি লঙ্ঘন করছে তা নিয়ে অভিযোগ করেছেন শান্তিনিকেতনের পরিবেশকর্মী ঊর্মিলা গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, ‘‘যাঁরা অধিক রাত পর্যন্ত এই ভয়ঙ্কর সাউন্ড সিস্টেম বাজাচ্ছেন তাঁদের শুভ বুদ্ধি উদয় হোক এটাই কামনা করি। তা না হলে কোনও ভাবেই হয়তো এই দূষণ নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। বিশাল বিশাল বক্সগুলি যে ভাবে বাজানো হয় তা পাশাপাশি থাকা মানুষজনকে অসুস্থ করার জন্য যথেষ্ট।’’ শান্তিনিকেতনে এমনিতেই শব্দ দূষণ নিয়ে বারবার সরব হয়েছেন পরিবেশ কর্মীরা। শব্দবিধি প্রসঙ্গে আদালতের নির্দেশ নিয়ে একাধিকবার আলোচনা – সমালোচনাও হয়েছে। কিন্তু সেসবের তোয়াক্কা করেন না অধিকাংশ পুজো বা অনুষ্ঠানের আয়োজকেরা এমনটাই অভিযোগ এলাকাবাসীর।
এবারের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী স্বপ্নজা সরকারের বক্তব্য, ‘‘আজকাল যে কোনও পুজোর বিসর্জন মানেই তারস্বরে বক্স ও ডিজের ছড়াছড়ি। দিনদিন সেই ডিজের দাপট বেড়েই চলেছে সে দুর্গা পুজোই হোক বা সরস্বতী পুজো। আজকাল বিসর্জনে ডিজে সাউন্ড বাজানো একটা ফ্যাশন হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর ফলে একদিকে যেমন শব্দদূষণ হয়ে চলেছে, ডিজে সাউন্ডের দাপটে শরীর খারাপ হয়ে যাচ্ছে। কয়েকদিন পরেই মাধ্যমিক পরীক্ষা। কি করে পড়ব যাঁরা বাজাচ্ছেন যদি দয়া করে জানান।’’
উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী শুচিশুভ্র সাহাও বলে, ‘‘চারিদিকে যে ভাবে ডিজে সাউন্ড বাজানো হচ্ছে তাতে পড়ার যথেষ্ট অসুবিধা হচ্ছে। সামনেই আমাদের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা। এটা কি কোনও ভাবে বন্ধ করা যায় না?’’ গবেষক ও সাহিত্য কর্মী সুকুমার দাস বলেন, ‘‘দেশজুড়ে পরিবেশ সচেতনতার নানা আয়োজন, কোথাও স্বচ্ছ ভারত অভিযান তো কোথাও নানা রকমের শিবির। দূষণ নিয়ে মামলা-মোকদ্দমা করেন অনেকে। জরিমানাও হয়। কিন্তু এতকিছুর পরেও কেন এই ডিজে সাউন্ডের দাপট কমছে না সেটাই আজ সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে সবার কাছে।’’ এ বিষয়ে বোলপুরের মহকুমাশাসক অভ্র অধিকারীর বক্তব্য, ‘‘অভিযোগ পেলেই উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy