এই পোস্ট অফিসেই চলছে ভোগান্তি। নিজস্ব চিত্র।
‘লিঙ্ক নেই’—জেলার ব্যাঙ্ক বা ডাকঘরগুলিতে গিয়ে এই সমস্যার মুখোমুখি হননি, এমন মানুষ হাতে গোনা। তাই বলে টানা পাঁচ দিন ধরে লিঙ্ক থাকবে না জেলার একটি ডাকঘরে! ঠিক এমনটাই ঘটেছে দুবরাজপুরের সাব পোস্ট অফিসে। তার জেরেই চূড়ান্ত দুর্ভোগের শিকার কয়েক হাজার গ্রাহক।
ডাকঘর সূত্রে জানা গিয়েছে, ১ ডিসেম্বর থেকেই ইন্টারনেট লিঙ্ক উধাও হয়ে গিয়েছে। ফলে ডাক পরিষেবা পুরোপুরি বন্ধ। ডাকঘরে সঞ্চয় করে রাখা টাকা প্রয়োজনে তোলা বা মান্থলি ইনকাম স্কিমে সুদের টাকা তোলার কোনও উপায় নেই গ্রাহকদের। উপায় নেই মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়া ফিক্সড ডিপোজ়িট, কিষান বিকাশ পত্র বা এনএসসি ভাঙানোরও। চাষের কাজ, মেয়ের বিয়ে, শ্রাদ্ধ, চিকিৎসার খরচ যে প্রয়োজনেই টাকা তোলার প্রযোজন পড়ুক, ডাকঘর গেলে স্রেফ না শুনতে হচ্ছে গ্রাহকদের। চিঠিপত্র আদান প্রদানের কাজও বন্ধ।
গ্রাহকদের পরিষেবা এবং তাঁদের প্রশ্নের সদুত্তর দিতে না-পারায় সমস্যায় পড়েছেন দুবরাজপুর সাব পোস্ট অফিসের কর্মী ও আধিকারিকেরা। সাব পোস্ট ম্যানেজার শ্রীনিবাস নায়ক বলেন, ‘‘সার্ভার বিকল হওয়ার পরে পরেই মেল করে খবর পাঠিয়েছি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে। আশ্বস্ত করা হয়েছিল, দু-তিন দিনে ঠিক করে দেওয়া হবে। কিন্তু, শনিবারও কেউ আসেননি। এ ভাবে গ্রাহকদের রোজ রোজ না করে দিতে আর ভাল লাগছে না।’’
ডাকবিভাগ সূত্রের খবর, বহুবছর আগের সাব পোস্ট অফিস এটি। গ্রাহক সংখ্যা অনেক। সারাজীবনের সঞ্চয় এই ডাকঘরে এমআইএস করে রেখেছেন, এমন গ্রাহকের সংখ্যা কয়েক হাজার। এ ছাড়া স্বল্প সঞ্চয়, ফিক্সড ডিপোজ়িট মিলিয়ে আরও কয়েক হাজার গ্রাহক রয়েছেন। প্রতিদিন ডাকঘরে জমা পড়ে প্রায় ৪৫ থেকে ৫০ লক্ষ টাকা। তোলাও হয় ৩৫ থেকে ৪০ লক্ষ টাকা। সে সব কাজ গত পাঁচ দিন ধরে সেটা পুরোপুরি বন্ধ।
দুবরাজপুরের বাসিব্দা বরুণ মণ্ডল বারবার ঘুরছেন পোস্ট অফিসে। তাঁর জামানো টাকা তোলার প্রয়োজন বৌদির চিকিৎসার জন্য। ভাগ্নীর বিয়ের জন্য টাকার প্রয়োজন দেবাশিস মিত্রের। দু’জনেরই কাজ হয়নি। টাকা জমা দিতে এসে ফিরে গিয়েছেন বধূ সীমা দাস। বড় অঙ্কের চেক জমা পড়েছে। সেটা আদৌ অ্যাকাউন্টে ঢুকেছে কি না দেখতে এসেছিলেন হায়দার আলি। জানতে পারেননি।
ডাকবিভাগের কর্মীরা জানান, সাব পোস্ট অফিস হওয়ায় দুবরাজপুর ডাকঘরের অধীনে আরও ১০টি শাখা পোস্ট অফিস রয়েছে। পুরোপুরি না-হলেও সাব পোস্ট অফিসের লিঙ্ক বিকল থাকায় ওই ১০টি শাখা পোস্ট অফিসের গ্রাহকদেরও ভুগতে হচ্ছে। পাহাড় প্রমাণ কাজ জমে গিয়েছে। চিঠিপত্রের ৩২টি ব্যাগ পড়ে রয়েছে। ডাকঘরের কর্মীরা বলছেন, ‘‘কোর ব্যাঙ্কিং সিস্টেম চালু হওয়ার পরে ইন্টারনেট ছাড়া এক পা এগোনো সম্ভব নয়। কিন্তু কবে পরিষেবা স্বাভাবিক হবে, আমরাও জানি না।’’ ডাক বিভাগের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘বিষয়টি সার্কেল (কলকাতা) অফিসে জানানো হয়েছে। ওখান থেকেই টেকনিশিয়ানরা আসবেন। আশা করি দ্রুত সমস্যা মিটবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy