ঘোষণা: বন্ধ আখড়া। জয়দেবে বুধবার। নিজস্ব চিত্র।
এমন ছবি আগে কখনও দেখেনি অজয় নদের ধারের এই পুণ্যভূমি।
আজ, বৃহস্পতিবার মকরসংক্রান্তি। এই সময়টা তিল ধারণেরও জায়গা থাকে না এখানে। লক্ষাধিক পুণ্যার্থীর ভিড়ে গমগম করে গোটা এলাকা। বাউল-ফকিরদের গান, মকরস্নানকে ঘিরে চার দিনের মেলা—সব মিলিয়ে সে এক অনন্য অভিজ্ঞতা। করোনার কোপে এ বার সব উধাও!
বুধবার এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, মেলা বসেনি। বাউল ফকিরের সেই চেনা কোলাহল নেই। স্রেফ আবেগের টানে পুণ্যস্নান করতে কিছু সংখ্যক ভক্ত আসতে শুরু করেছেন জয়দেব-কেঁদুলিতে। সংক্রমণের আশঙ্কায় এ বছর জয়দেব মেলা না-করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। তার পরিবর্তে শুধুমাত্র পূজার্চনা এবং পুণ্যার্থীদের মকরস্নানের জন্য অনুমতি দেওয়া হয়েছে। ফলে, ভক্তদের সমাগম অন্য বারের তুলনায় নগণ্য।
প্রশাসনের তরফে শর্তসাপেক্ষে স্থায়ী কিছু আখড়া খুলে রাখার অনুমতি দেওয়া হলেও বাইরে থেকে কোনও আখড়াকে বসতে দেওয়া হয়নি। মেলা বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়ায় বসতে দেওয়া হয়নি কোনও স্টল ও দোকান। শুধুমাত্র স্থানীয় কিছু খাবারের দোকান এবং করোনা বিধি মেনে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের কয়েকটি স্টল বসার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
স্থায়ী যে সমস্ত আখড়া রয়েছে, এ দিন দেখা গেল তার কোনওটিতে তালা ঝুলছে, আবার কোনওটির বাইরে লিখে দেওয়া হয়েছে— ‘এ বার জয়দেব মেলা স্থগিত রাখা হল, পরবর্তী মিলন উৎসবের অপেক্ষায় রইলাম আমরা’।
গুটিকয়েক যে আখড়া বসেছে, সেখানেও ভক্ত নেই বললেই চলে। হুগলির শ্রীরামপুর থেকে প্রতি বছর জয়দেব মেলায় আখড়া বসান প্রবীর আনন্দ বাউল, সনাতন দাস বাউলেরা। এ বছর আখড়া বসাতে না পারায় তাঁরা বিষণ্ণ।
প্রবীণআনন্দ বলেন, “প্রায় ১৫ বছর ধরে আমি এই মেলায় আখড়া বসিয়ে আসছি। এ বছর আখড়া করতে না পারায় খুবই মন খারাপ। তা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না।” একই কথা শোনা গিয়েছে বাউল শিল্পী বাপি দাস বাউলের মুখে। এ বছর মেলা না হওয়ায় মন খারাপ ব্যবসায়ীদেরও।
স্থানীয় খাবারের দোকান ব্যবসায়ী জগন্নাথ দাস, শক্তিপদ দাসেরা বললেন, “সেই লকডাউনের সময় থেকে ব্যবসার অবস্থা চরম খারাপ। ভেবেছিলাম করোনা বিধি মেনে জয়দেব মেলা হলে একটু আর্থিক সুরাহা হবে। কিন্তু, এ বার সে পথও বন্ধ। অনেক ক্ষতির মুখে পড়ব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy