Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
forgery

Rupashree Forgery: বীরভূমে রূপশ্রী প্রকল্পে জালিয়াতির পিছনে কি বড়সড় চক্র? তদন্তের নির্দেশ প্রশাসনের

নলহাটির নওয়াপাড়া এবং তিলোরার আট জনের বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগ। দুর্নীতির কথা প্রকাশ্যে আনেন নলহাটির বিডিও। এ বার ওই কাণ্ডে নয়া মোড়।

রূপশ্রী জালিয়াতিতে নয়া মোড়।

রূপশ্রী জালিয়াতিতে নয়া মোড়। প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নলহাটি শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০২১ ১৬:০৭
Share: Save:

বীরভূমে রূপশ্রী প্রকল্পে জালিয়াতির পিছনে কি কোনও বড়সড় চক্র কাজ করছে? এমনটাই ইঙ্গিত মিলছে। ওই কাণ্ডে অভিযুক্ত মহিলারা এবং তাঁদের আত্মীয় পরিজনদের দাবি, কমিশনের বিনিময়ে টাকা পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে গ্রামে গ্রামে নথিপত্র জোগাড় করেছেন আবেল শেখ নামে স্থানীয় এক যুবক। অন্য দিকে জালিয়াতি কাণ্ডে নাম জড়িয়েছে নলহাটি দু’নম্বর ব্লকের বিডিও হুমায়ুন চৌধুরীরও। যদিও সেই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন ওই বিডিও। জালিয়াতি-কাণ্ডের তল পেতে ওই ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে জেলা প্রশাসন।

শনিবার বীরভূমেনলহাটির নওয়াপাড়া এবং তিলোরার গ্রামের মোট আট জনের বিরুদ্ধে রূপশ্রী প্রকল্পের টাকা হাতাতে জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছিল। ওই দুর্নীতির কথা প্রকাশ্যে এনেছিলেন নলহাটির বিডিও। কিন্তু ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ওই ঘটনা ভিন্ন দিকে মোড় নিল। আট অভিযুক্তদের মধ্যে ছ’জন নওয়াপাড়া এবং বাকি দু’জন তিলোরার বাসিন্দা। তাঁরা হলেন, মোমেনা খাতুন, রুবেনা খাতুন, হাসেনা খাতুন, লাসুনিয়া খাতুন, মুরসিদা খাতুন, গৌরি মাল, আশা মাল এবং সমাপ্তি দাস। রূপশ্রী প্রকল্পের টাকা পাওয়ার ঘটনা টেনে এনে সমাপ্তি বলছেন, ‘‘আমি সে সময় শ্বশুরবাড়িতে ছিলাম। বাবা ফোন করে রূপশ্রী প্রকল্পের কথা জানিয়েছিল। তার পর আমার কাগজপত্র বাবা জমা দিয়েছিল। এর পর সাড়ে ১২ হাজার টাকা ওরা নিয়েছে। আমাদের অর্ধেক টাকা দিয়েছে। ওরা বলেছিল, ‘এটা তোমাদের পাওনা টাকা নয়। তাও পাচ্ছ। আমরা ওই জন্যই সাড়ে ১২ হাজার টাকা নিচ্ছি। টাকা বিডিও নেবে, আমরাও নেব’— ওরা এটাও বলেছিল।’’ ওই ঘটনায় পুলিশি তদন্ত নিয়ে উদ্বিগ্ন সমাপ্তি। তাঁর বক্তব্য, ‘‘বিডিও অফিসে আগে তদন্ত করা উচিত ছিল।’’

সমাপ্তির বাবা সুনীল দাস বলছেন, ‘‘মেয়ের বিয়ে হয়েছে ৪ বছর। গ্রামে কাগজপত্র জমা নিচ্ছিল আবেল শেখ। জিজ্ঞাসা করায় বলল, ‘যে মেয়েরা রূপশ্রী পায়নি তাদের কাগজপত্র জমা নেওয়া হচ্ছে।’ আরও বলল, ‘প্রকল্পের ২৫ হাজার টাকার মধ্যে সাড়ে ১২ হাজার টাকা আমরা পাব। এর পর প্রয়োজনীয় নথিপত্র এবং ছবি নিয়ে গেল আবেল। ও পার্টির কেউ নয়। তবে বিডিও অফিসে ওর সম্পর্ক ভাল। জমা দেওয়ার ১৯ দিনের মাথায় টাকা এসেছিল। ব্যাঙ্কে আবেলের মতো অনেকে ছিল। ওরা সাড়ে ১২ হাজার টাকা নিয়েছিল।’’ ওই কাণ্ডে অপর এক অভিযুক্ত মোমেনা খাতুনের বাবা সায়রউদ্দিন বলেন, ‘‘আমরা কিছুই জানি না। প্রকল্পের ২৫ হাজার টাকার মধ্যে অর্ধেক পেয়েছিলাম। আর বাকি টাকা আবেল পেয়েছে। এখন যদি টাকা ফেরত দিতে হয় তা হলে দেব।’’

বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভের সুরে নওয়াপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান মহম্মদ ইমদাদুল হক বলেন, ‘‘রূপশ্রী প্রকল্প বিডিও দেখেন। ওঁরাই তদন্ত করেন। এটা কী করে হল, তা অজানা। এই ঘটনায় বিডিও অফিস জড়িত আছে বলে মনে হচ্ছে। আবেল শেখ তৃণমূল কর্মী নন। উনি দলেরও কোনও পদে নেই। এলাকার অনেকেই লেখাপড়া জানেন না। তাঁদের কাছ থেকে নথি নিয়ে আর্থিক তচ্ছরুপের অংশীদার করা হয়েছে দুঃস্থ মানুষদের। আমরা এ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হব।’’ তাঁর প্রশ্ন, ‘‘টাকা অ্যাকাউন্টে ঢোকার পর, বিডিও কেন হঠাৎ এই দুই গ্রামে তদন্ত করতে নামলেন? আগে কেন তদন্ত হয়নি?’’

বিষয়টি নিয়ে নলহাটি ২ নম্বর ব্লকের বিডিও বলেন, ‘‘পুলিশ তদন্ত করছে। কার নাম উঠে আসবে পুলিশ জানবে। আগে অভিযোগ আসেনি। আরটিআই করার পর যখন জেলা থেকে অভিযোগ আসে, তখন তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি। পুলিশ আমার সঙ্গে কথা বলেছে। ছাড়া যাবে না। এটা বড় ব্যাপার। আরও অনেক কিছু জানা যাবে।’’ আবেলকে তিনি চেনেন না বলেও জানিয়েছেন হুয়ামুন।

জেলাশাসক বিধান রায় বলেছেন, ‘‘আমরা সমস্ত বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। রামপুরহাটের মহকুমাশাসককে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’ ওই কাণ্ড প্রকাশ্যে আসার পর থেকে খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না আবেল শেখেরও।

অন্য বিষয়গুলি:

forgery Birbhum Rupashree Prakalpa nalhati
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy