প্রতীকী ছবি।
পুরুলিয়া-হাওড়া এক্সপ্রেস চালানোর কথা আগেই ঘোষণা করেছিল রেল। শুক্রবার সন্ধ্যায় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে রেল জানাল, ওই দিনেই (সোমবার ১৪ ডিসেম্বর থেকে) আদ্রা ডিভিশনে আরও সাতটি মেল / এক্সপ্রেস এবং প্যাসেঞ্জার তথা লোকাল ট্রেন চালানো হবে। সেগুলির মধ্যে রয়েছে চক্রধরপুর থেকে পুরুলিয়া, আদ্রা, বাঁকুড়া হয়ে হাওড়াগামী ‘হাওড়া-চক্রধরপুর মেল / এক্সপ্রেস’ এবং বোকারো থেকে সাঁওতালডিহি, আদ্রা, বাঁকুড়া হয়ে হাওড়াগামী ‘বোকারো-হাওড়া মেল / এক্সপ্রেস’। এরই সঙ্গে শুরু হচ্ছে খড়গপুর থেকে আদ্রা হয়ে গোমো মেল / এক্সপ্রেস এবং আসানসোল থেকে আদ্রা হয়ে খড়্গপুরগামী মেল / এক্সপ্রেস।
লকডাউনের আগে এই চারটি প্যাসেঞ্জার ট্রেন ছিল। এ বার ট্রেন চারটিকে মেল / এক্সপ্রেসে পরিণত করায় যাত্রীদের বাড়তি ভাড়া গুনতে হবে বলে বাসিন্দাদের একাংশের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়েছে। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রাক্তন সিপিএম সাংসদ তথা লোকসভায় রেলের স্থায়ী কমিটির প্রাক্তন চেয়ারম্যান বাসুদেব আচারিয়া। তিনি বলেন, ‘‘প্যাসেঞ্জার থেকে মেল / এক্সপ্রেস করে দেওয়া হলে স্বাভাবিক ভাবেই ট্রেনের ভাড়া কয়েক গুণ বেড়ে যাবে। এতে গরিব মানুষজন প্রচুর সমস্যায় পড়বেন। আসলে রেল তার সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে সরে যাচ্ছে, এটাই ফের প্রমাণিত হল।” ওই চারটি ট্রেনের সঙ্গে চালু হচ্ছে আদ্রা থেকে আসানসোল মেমু লোকাল ও আদ্রা-মেদিনীপুর প্যাসেঞ্জার এবং বোকারো-রাঁচী প্যাসেঞ্জার ট্রেনগুলিও।
রেল সূত্রের খবর, এ দিন বেলায় রোল বোর্ড আদ্রা ডিভিশনের এই ট্রেনগুলি ফের চালানোর ব্যাপারে অনুমোদন দেয়। তারপরেই দক্ষিণ-পূর্ব রেলের তরফে ট্রেনগুলি শুরুর ঘোষণা করা হয়েছে। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সঞ্জয় ঘোষ বলেন, ‘‘যাত্রীদের সুবিধার কথা ভেবেই সোমবার থেকে আদ্রা ডিভিশনে মোট আট জোড়া এক্সপ্রেস ও প্যাসেঞ্জার শুরু করা হচ্ছে। রেলের তরফে যাত্রীদের কাছে অনুরোধ জানানো হচ্ছে, কোভিড পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য-বিধি মেনে তাঁরা যেন ট্রেনে ভ্রমণ করেন।”
আদ্রার পাশের দুই ডিভিশন খড়্গপুর ও আসানসোলে ইতিমধ্যেই প্যাসেঞ্জার ও লোকাল ট্রেন শুরু হয়েছে। তারপরেও কেন আদ্রা ডিভিশনে প্যাসেঞ্জার ট্রেন শুরু হচ্ছে না, এই অভিযোগে সরব হয়েছিল নিত্যযাত্রী মহল থেকে শুরু করে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। বিভিন্ন সময়ে স্টেশনগুলিতে এবং আদ্রায় রেলের ডিভিশনাল সদর দফতরে লোকাল, প্যাসেঞ্জার ট্রেন শুরুর দাবিতে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। চলে অবস্থান-বিক্ষোভও।
শেষ পর্যন্ত আট জোড়া এক্সপ্রেস-সহ প্যাসেঞ্জার ও লোকাল শুরু হলেও তাঁরা কিন্তু পুরোপুরি সন্তুষ্ট নয়। বিশেষ করে অফিসের সময়ে আদ্রা থেকে পুরুলিয়াগামী এবং আদ্রা থেকে গোমোগামী কোনও প্যাসেঞ্জার ট্রেনের কথা ঘোষণা না থাকায় হতাশ ওই দুই শাখার নিত্যযাত্রীরা। আদ্রা-ভাগা নিত্যযাত্রী সমিতির জ়োনাল সম্পাদক তপন মজুমদার বলেন, ‘‘খড়্গপুর থেকে গোমো পর্যন্ত যে ট্রেনটি শুরু করা হচ্ছে, তাতে ওই শাখায় নিত্যযাত্রীদের কোনও সুবিধাই হবে না। আমাদের দাবি ছিল, সকালে অফিসের সময়ে অতীতে চলা আদ্রা-খানুডি প্যাসেঞ্জার চালু করা হোক।’’
অন্য দিকে, আগে যে ট্রেনগুলি প্যাসেঞ্জার ছিল, এ বার সেই ট্রেনগুলিকে মেল / এক্সপ্রেস করে দেওয়ায় ক্ষোভ ছড়িয়েছে। চক্রধরপুর-হাওড়া, বোকারো-হাওড়া— এই দুই ট্রেনে সাধারণ মানুষজন যাতায়াত করেন। মেল / এক্সপ্রেস হওয়ায় ভাড়া বাড়লে তাঁদের সমস্যায় পড়তে হবে বলে অভিযোগ উঠেছে। আগে খড়্গপুর-গোমো ও আসানসোল-খড়্গপুর ট্রেন দু’টি প্যাসেঞ্জার থাকলেও এ বার মেল / এক্সপ্রেস করে দেওয়ায় তাতেও বেশি ভাড়া দিতে হবে বলে ক্ষোভ ছড়িয়েছে। আদ্রা-খড়্গপুর শাখার নিত্যযাত্রী সমিতির যুগ্ম সম্পাদক দেবু চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এই ট্রেন দু’টি দীর্ঘদিন ধরেই প্যাসেঞ্জার ছিল। হঠাৎ করে ট্রেন দু’টিকে মেল / এক্সপ্রেস করে দেওয়ায় ভাড়া নিয়ে সমস্যায় পড়তে হবে নিত্যযাত্রীদের।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy