এই মুহূর্তে দু’একটা পাকা বাড়ি ছাড়া নিশ্চিহ্ন প্রায় গোটা সুন্দরপুর গ্রাম। —নিজস্ব চিত্র।
অজয় নদের জলে প্লাবিত নানুরের বিস্তীর্ণ এলাকা যেন শ্মশানে পরিণত হয়েছে। অথচ আসন্ন দুর্গাপুজোর সব প্রস্তুতিই শুরু হয়েছিল। উঠোন নিকোনো, দেওয়াল চুনকাম করা বা আলকাতরার কাজ। তবে আচমকা প্লাবনের জেরে সে সবই পণ্ড হয়েছে। বীরভূম জেলার নানুরের বহু গ্রামের বাসিন্দারই গত তিন দিন ধরে কাটছে এক কাপড়ে, খোলা আকাশের নীচে।
নানুরের এমনই এক গ্রাম সুন্দরপুর। এই মুহূর্তে দু’একটা পাকা বাড়ি ছাড়া নিশ্চিহ্ন প্রায় গোটা গ্রাম। অজয়ের জলে ভেসে গিয়েছে ঘরকন্নার যাবতীয় সামগ্রী। এমনকি, আধার বা ভোটার কার্ডের মতো জরুরি নথিও হারিয়েছেন গ্রামবাসীরা। গ্রামের সকলে ঠাঁই নিয়েছেন অজয় নদের বাঁধের উপর। সুন্দরপুর জুড়ে এখন শুধুই হাহাকার। ভরসা কেবলমাত্র সরকারি সাহায্য।
সুন্দরপুর ছাড়াও বাসাপাড়া, বামুনিয়া, থুপসারা, বেজরা, রামকৃষ্ণপুর, কুড়গ্রাম-সহ নানুরের বিস্তীর্ণ অঞ্চল প্লাবিত। জলমগ্ন এলাকার বাসিন্দারা এ অবস্থায় কোথায় যাবেন, কী করে থাকবেন— তা নিয়ে দিশেহারা। প্রশাসনের তরফে ত্রাণের ব্যবস্থা করা হলেও তা পর্যাপ্ত নয় বলে অভিযোগ গ্রামবাসীদের। বামুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা ছায়া মাঝি বলেন, ‘‘অনেক কষ্ট করে তিন-চার কুঠুরি ঘর করেছিলাম। বাসনকোসন, কাপড়চোপড় সব বাঁধের জলে ভেসে গেল। আমাদের আর কিছুই নেই। সরকারের লোকেরা খাবার দিয়েছে। আর কিছু দেয়নি।’’
শনিবার নানুরে জল কমতেই পরিস্থিতির সামান্য উন্নতি হয়েছে। তবে বাড়িঘর নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়ায় উদ্বেগ কমেনি গ্রামবাসীদের। প্লাবিত এলাকার এক বাসিন্দা শেখ সাবির বলেন, ‘‘আমাদের গ্রামে (সুন্দরপুরে) ৭০-৮০টি পরিবার ছিল। তবে অজয়ের জলে সব ভেসে গিয়েছে। সরকারি সাহায্য সে ভাবে কিছুই পাওয়া যায়নি। সরকারের কাছে আবেদন, যেন আমাদের আগের মতো থাকার ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়।’’
সরকারি সাহায্যের আশায় বসে থাকেননি সুন্দরপুরের পাশের গ্রাম জাহানাবাদের বাসিন্দারা। সুন্দরপুরের বিপর্যয়ে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন তাঁরা। জাহানাবাদ গ্রামের বাসিন্দা শেখ ইব্রাহিমের কথায়, ‘‘সুন্দরপুরের সব কিছু ভাসিয়ে নিয়েছে অজয় নদ। এখানকার লোকজন সরকারি সাহায্য পাননি। আশপাশের গ্রামের লোকেরাই সুন্দরপুরবাসীদের জন্য চাল-ডালের জোগাড় করেছেন। সরকারের কাছে এই অনুরোধ, প্লাবিত এলাকার মানুষদের জন্য জামাকাপড়-ত্রিপলের ব্যবস্থা করা হোক।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy