ভরসা: পাতা বুনছেন মহিলারা। নিজস্ব চিত্র।
করোনা পরিস্থিতিতে কড়াকড়ির জেরে ফলে বন্ধ রয়েছে পাঁচামি পাথর শিল্পাঞ্চলের কাজ। তার জেরে রুজির সমস্যায় মহম্মদবাজার ব্লকের চরিচা পঞ্চায়েতের কদমহিড় গ্রামে প্রায় ১২০টি পরিবার। শালপাতা বুনেই কোনও রকমে সংসার চলছে ওই সব পরিবারের।
পাথর শিল্পাঞ্চলের এই এলাকায় জলের সমস্যা থাকায় বর্ষার সময় বছরে একবারই জমিতে চাষ হয়। এই এলাকায় নেই তেমন সাবমার্সিবল পাম্প। ফলে জলের অভাবে ফাঁকাই পড়ে থাকে সমস্ত জমি। যার ফলে আদিবাসী অধ্যুষিত এই এলাকার অধিকাংশ বাসিন্দাই যুক্ত পাঁচামি পাথর শিল্পাঞ্চলের কাজে। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে বিধিনিষেধের জেরে অনেকদিন ধরেই বন্ধ রয়েছে শিল্পাঞ্চলের কাজ। তাই বাধ্য হয়ে জঙ্গলে গিয়ে পাতা তুলে বাড়িতে নিয়ে এসে তা বুনে দোকানে বিক্রি করেই জীবিকা নির্বাহ করতে হচ্ছে এলাকার মানুষকে। এখন বৃষ্টির জলে জমিতে চাষ হলেও অনেকেই এতদিন ধরে কাজ বন্ধ থাকায় অর্থের অভাবে চাষও করতে পারছেন না বাসিন্দারা। শালপাতা বিক্রি করেই কোনও রকমে পেট চালাতে হচ্ছে তাঁদের।
গ্রামের মহিলারা জানাচ্ছেন, গ্রাম থেকে প্রায় দশ কিলোমিটার দূরে গিয়ে চরিচা জঙ্গল থেকে পাতা তুলে আনতে হয় তাঁদের। গ্রামের ১০ থেকে ১৫ জন মহিলা মিলে একটা দিন ঠিক করে জঙ্গলে গিয়ে বস্তায় ভরে পাতা নিয়ে আসেন বাড়িতে। তারপর সেগুলি দু-তিন দিন ধরে কাঠি দিয়ে বুনে রোদে শুকিয়ে দোকানে দোকানে বিক্রি করেন।
পাতা বোনার পর তা শুকিয়ে তিন দিন পরে বান্ডিল তৈরি করে বিক্রি করা হয়। এক বান্ডিলে কুড়িটি করে শালপাতা দেওয়া হয়। দাম পাওয়া যায় ৭ টাকা থেকে ১২ টাকা করে।
স্থানীয় বাসিন্দা সরস্বতী মুর্মু, পাতামণি মুর্মু, খুকুমণি মুর্মু ও পাকু মুর্মুরা জানান, এই এলাকার জমিতে বছরে একবারই চাষ করা হয়। সেই সময়ই পাওয়া যায় কাজ। তাছাড়া অন্য সময় সকলেই কাজ করতে যান পাঁচামি পাথর শিল্পাঞ্চলে। কিন্তু এখন সেটাও বন্ধ। তাই এই মুহূর্তে কোনও কাজ মিলছে না তাঁদের। ওই মহিলাদের কথায়, ‘‘বাধ্য হয়ে নিজেদের জীবন রক্ষা করতে জঙ্গল থেকে পাতা তুলে নিয়ে এসে বাড়িতে শালপাতা বুনে বিক্রি করতে হচ্ছে দোকানে। তিন দিন কাজ করে খুব বেশি হলে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা করে উপার্জন হয়। আর তা দিয়েই কোনও রকমে পেট চলছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy