জয়েন্ট বিডিও-র গাড়ির জানলা দিয়ে মুখ বাড়িয়ে ‘ঘেউ’, ‘ঘেউ’ ডাক যুবকের।
রেশন কার্ডে নাম আর পদবির বানান ভুলে বার বার নাকাল হতে হচ্ছিল এক যুবককে। ভুল সংশোধনের আবেদনও করেছেন একাধিক বার। তাতেও কাজ হয়নি। প্রতি বার কোনও না কোনও ভুল হয়েছে। শেষ বার শ্রীকান্তিকুমার দত্ত নামে ওই যুবকের পদবি রেশন কার্ডে লেখা হয়েছে ‘কুত্তা’। ক্ষোভে এবং অপমানে ‘দুয়ারে সরকার’ শিবিরে গিয়ে প্রতিবাদ করলেন শ্রীকান্তি। রাস্তায় জয়েন্ট বিডিওকে গাড়িতে যেতে দেখেই রেশন কার্ড হাতে নিয়ে ছুটে গেলেন তিনি। তার পর গাড়ির জানলার সামনে গিয়ে কুকুরের মতো রব করলেন তিনি। ইতিমধ্যে সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে গিয়েছে সেই ভিডিয়ো।
স্থানীয় সূত্রে খবর, সম্প্রতি স্থানীয় ‘দুয়ারে সরকার’ শিবিরে আসছিলেন বাঁকুড়া-২ ব্লকের জয়েন্ট বিডিও বিমান কর। তিনি বসেছিলেন চালকের পাশের আসনে। শিবিরে ঢোকার মুখে, গাড়ির খোলা জানলা দিয়ে মুখ বাড়িয়ে শ্রীকান্তি একটানা ‘ঘেউ, ঘেউ’ করে ডেকে চলেন। প্রথমে বিষয়টা বুঝতে না পেরে হকচকিয়ে যান জয়েন্ট বিডিও। তিনি জানতে চান, কী হয়েছে? ঠিক তখনই ওই যুবক হাতে থাকা রেশন কার্ডের প্রতিলিপি ইশারায় দেখতে বলেন ওই আধিকারিককে। একই সঙ্গে তিনি অনবরত ‘ঘেউ, ঘেউ’ শব্দ করতে থাকেন তিনি।
এই প্রতিবাদে কাজ হয়েছে। বিষয়টি বুঝতে পেরে জয়েন্ট বিডিও শ্রীকান্তিকে সঙ্গে নিয়েই ‘দুয়ারে সরকার’ শিবিরে যান। সেখানেই তিনি অন্যান্য কর্মী এবং আধিকারিককে নির্দেশ দেন, অবিলম্বে ভ্রম সংশোধন করার। সূত্রের খবর, ওই ঘটনার পরের দিনই সংশোধিত রেশন কার্ড পেয়েছেন শ্রীকান্ত।
এই ঘটনার সূত্রপাত ২০১৫ সালে। ডিজিটাল রেশন কার্ডের জন্য বাঁকুড়া-২ ব্লকের বিডিও অফিসে আবেদন জানান বাঁকুড়ার কেশিয়াকোল গ্রামের বাসিন্দা শ্রীকান্তি। সেই আবেদনের পর নতুন রেশন কার্ড হাতে পান তিনি। কিন্তু দেখেন রেশন কার্ডে তাঁর নাম লেখা রয়েছে শ্রীকান্তি মণ্ডল। ভুল পদবি সংশোধনের জন্য আবেদন করেন তিনি। এর পরের বার তাঁর নামে ভুল হয়। গত ১১ নভেম্বর নিজের রেশন কার্ড ডাউনলোড করতে গিয়ে শ্রীকান্তি দেখেন তাঁর নামের বানান সংশোধন হলেও এ বার পদবি ‘দত্ত’-র বদলে হয়েছে ‘কুত্তা’। এর পর গত ১৬ নভেম্বর এলাকায় ‘দুয়ারে সরকার’ শিবিরে গিয়ে জয়েন্ট বিডিওকে গাড়িতে বসে থাকতে দেখে ‘ঘেউ, ঘেউ’ শব্দ করে প্রতিবাদ জানান তিনি। এ নিয়ে বাংলা বিষয়ে স্নাতকোত্তর পাশ করা শ্রীকান্তি বলেন, ‘‘রেশন কার্ডে নাম এবং পদবির বানান সংশোধনের চক্করে প্রশাসনের দরজায় দরজায় ঘুরেও লাভ হয়নি। এ বার দুয়ারে সরকার শিবিরে যাওয়ার পর ওই আধিকারিককে দেখে আমার এই প্রতিবাদের কথা মাথায় আসে।’’
ওই বিষয়ে বাঁকুড়া-২ ব্লকের বিডিও শুভব্রত চক্রবর্তী বলেন, ‘‘গত ১৬ নভেম্বর ওই যুবক ‘দুয়ারে সরকার’ শিবিরে তাঁর রেশন কার্ডে থাকা ভুল সংশোধন করার আবেদন জানিয়েছিলেন। তৎক্ষণাৎ তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আবেদনের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রেশন কার্ডে থাকা অনিচ্ছাকৃত ভুল শুধরে নেওয়া হয়েছে।’’ আর শ্রীকান্তি বলছেন, ‘‘সরকার যখন আমাকে লিখিত ভাবে ‘কুত্তা’ পদবি দিয়েছে, তখন কুকুরের মতো শব্দ করেই প্রতিবাদ জানিয়েছি। তাতেই কাজ হয়েছে। যা এত দিনে সম্ভব হয়নি ওই ঘটনার পর দিনই তা সংশোধন হয়ে গেল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy