একটি হাতি উঁকি দিতেই ছবি মোবাইল-বন্দি করতে ভিড়। জয়পুরের মোলকারি গ্রামে। ছবি: শুভ্র মিত্র
হাতিকে প্রণাম করতে গিয়েছিলেন এক ব্যক্তি। শুঁড়ে পেঁচিয়ে তাঁকে রাস্তায় আছাড় দিয়েছিল গজরাজ। গত রবিবার বিকেলে বিষ্ণুপুরের আস্থাশোলে ওই ঘটনায় আহত পল্টু পণ্ডিতের (৫০) মৃত্যু হয়েছে বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজে। মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের কারণে তাঁর মৃত্যু হয় বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন।
ঘটনার পরে পল্টুবাবুকে বিষ্ণুপুর জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ার রাতে বাঁকুড়া মেডিক্যালে স্থানান্তরিত করা হয়। সোমবার বিকেলে তাঁর মৃত্যু হয়।
বন দফতর সূত্রের খবর, গড়বেতা থেকে হাতির একটি দল ঢুকে পড়েছিল বাঁকাদহ রেঞ্জের আস্থাশোলে। ওই দলে কয়েকটি ছোট হাতিও ছিল। বিষ্ণুপুর-পাঞ্চেত ডিভিশনের ডিএফও নীলরতন পাণ্ডার বক্তব্য, ‘‘হাতির দলটিকে দেখতে গিয়েছিলেন পল্টু এবং তাঁর বন্ধুরা। মত্ত অবস্থায় থাকা পল্টুবাবু একটি হাতির কাছে গিয়েছিলেন। হাতিটি ধাক্কা মারলে তিনি পড়ে যান।’’ বন দফতরের ওই আধিকারিক বলেন, ‘‘পল্টুবাবুর ধারণা হয়েছিল, হাতিটি তাঁর উপরে রেগে গিয়েছে। এরপর তিনি হাতিটিকে প্রণাম করতে যান। তখনই তাঁকে শুঁড়ে জড়িয়ে মাটিতে আছাড় দেয় হাতিটি।’’
বন দফতরের বিষ্ণুপুর-পাঞ্চেত ডিভিশন সূত্রের খবর, মঙ্গলবার জয়পুর রেঞ্জের মাচানতলা বিট এলাকায় ঢুকে পড়েছে হাতির দলটি। দলে ৪৫-৫৫টি হাতি রয়েছে। সেই খবর শোনার পরেই উপচে পড়ছে উৎসাহী মানুষের ভিড়। স্কুল ফেরত শিক্ষক থেকে আইসক্রিম বিক্রেতা— সকলেই ছুটছেন বিষ্ণুপুর জয়পুর রাজ্য সড়কে মোলকারি গ্রামে।
ওই গ্রামের কাছেই বন দফতরের জয়পুর রেঞ্জের কোশির জঙ্গলে রয়েছে হাতিগুলি। বন দফতর জানাচ্ছে, সূর্য ডোবার পরেও মোলকারি গ্রামে ভিড় পাতলা হচ্ছে না। দুর্ঘটনার আশঙ্কায় বারবার তাঁদের ফিরে যেতে বলছেন বন দফতরের কর্মীরা। কিন্তু তাতে কাজ হচ্ছে না। এক বনকর্মীর কথায়, ‘‘এ ভাবেই দুর্ঘটনা ঘটে। অতি উৎসাহীদের জন্য নাজেহাল হতে হয় আমাদের। হাতির দলও বিরক্ত হয়।’’ এ দিকে, মাঠের ফসল এবং ঘরবাড়ি বাঁচাতে ‘এলিফ্যান্ট স্কোয়াড’-এর সদস্যদের নিয়ে সোমবার বিকেল থেকে মোলকারি গ্রামে হাজির ডিএফও।
বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, রাতে মাঝে মাঝে হাতির দল রাস্তার এদিক-ওদিকে ঘুরে বেড়িয়েছে। ‘এলিফ্যান্ট স্কোয়াড’-এর সদস্যেরা রাস্তায় যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করেন। গভীর রাতে গোঁসাইপুরের কমলার আমবাগান হয়ে দ্বারকেশ্বর পেরিয়ে বাঁকুড়া উত্তর বন বিভাগের জঙ্গলে ঢুকতে গিয়ে বাধা পায় হাতির দলটি। ভোর হতেই জয়পুরের বেলিয়া, মোবারকপুর, ঘোঘরা হয়ে রাজ্য সড়ক টপকে জয়পুর রেঞ্জের কোশির জঙ্গলে হাজির হয়েছে তারা। হাতি যাতে ফের গ্রামে না ঢোকে, সে দিকে নজর রাখা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy