প্রতীকী ছবি।
সম্পত্তি সংক্রান্ত বিবাদে তরোয়ালের কোপে মায়ের দু’হাত কেটে ফেলার অভিযোগ উঠল ছেলের বিরুদ্ধে। অস্ত্রের কোপে গুরুতর জখম বাবাও। শনিবার সকাল ১০টা নাগাদ বাঁকুড়ার ইন্দাস থানার বামনিয়া গ্রামের ঘটনা। অভিযুক্ত প্রশান্ত ভৌমিককে আটক করা হয়েছে। পুলিশের দাবি, জেরার সময়ে ধৃত তাদের জানিয়েছে, রাগের মাথায় এমন কাজ করে ফেলে সে। যদিও তদন্তকারীদের দাবি, ঘটনাটি পূর্ব পরিকল্পিত। এসডিপিও (বিষ্ণুপুর) প্রিয়ব্রত বক্সী বলেন, ‘‘আগের রাতেই প্রশান্ত গ্রামের এক কামারশালা থেকে ন’শো টাকা দিয়ে দেড় ফুটের তরোয়ালটি কিনে নিজের ঘরে এনে লুকিয়ে রেখেছিল।’’
জখম দম্পতি প্রফুল্ল ভৌমিক (৬৮) ও বীণা ভৌমিকের (৬৫) তিন ছেলে। পরিবারের অল্প কিছু জমি রয়েছে। ছেলেরা সবাই গ্রামে বা বাইরে মজুরি করেন। বড় ছেলে, বছর চল্লিশের প্রশান্ত এই ঘটনায় অভিযুক্ত। মেজ ছেলে প্রদীপ অবিবাহিত। পড়শিদের একাংশ জানিয়েছেন, ছোট ছেলে পরিতোষ ‘বাড়ির অমতে’ বিয়ে করে স্ত্রীকে নিয়ে বাইরে গিয়ে থাকছিলেন। মাস ছ’য়েক আগে ফিরে আসেন। বাড়িতে মিটমাটও হয়ে যায়। সেই সময়ে প্রশান্ত বাইরে কাজ করত। স্ত্রীকে নিয়ে ফিরে আসে সে-ও। একই বাড়িতে স্ত্রী ও দুই ছেলেকে নিয়ে আলাদা থাকত। হাঁড়িও আলাদা ছিল। এসে ইস্তক সে ভাগের জমি তার নামে লিখে দেওয়ার জন্য গোঁ ধরে বলে।
পুলিশের দাবি, তদন্তে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি গ্রাম ষোলোআনা প্রফুল্লবাবু ও তাঁর ছেলেদের নিয়ে বসে। তখন ঠিক হয়, প্রফুল্লবাবু তাঁর পাঁচ বিঘা জমির মধ্যে এক বিঘা প্রশান্তকে দেবেন। প্রফুল্লবাবুর মেজ ছেলে প্রদীপ ভৌমিক শনিবার বলেন, ‘‘সম্পত্তির ঠিক ভাগ হবে বলেই দাদাকে বলা হয়েছিল। কিন্তু হঠাৎ কেন এই ঘটনা ঘটাল জানি না।’’ জেরায় পুলিশের কাছে প্রশান্ত দাবি করেছে, শনিবার সকালে বাবা তাকে ডেকে পাঠিয়ে বাড়ির কাছে ছোট একটি জমি দেওয়ার কথা বলেন। প্রশান্ত এক বিঘার দাবিতেই অনড় থাকেন। তা থেকেই কথা কাটাকাটি শুরু। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী, প্রফুল্লবাবুর ছোট বৌমা মিনু ভৌমিক বলেন, “হঠাৎ বড় ভাসুর শাশুড়ির উপরে চড়াও হয়। আমি বাধা দিতে গেলে হুমকি দেয়। শাশুড়ির অবস্থা দেখে জল আনতে ছুটে যাই। এসে দেখি, শ্বশুরমশাইকেও কুপিয়েছে।’’
অস্ত্রের কোপে বীণাদেবীর দু’হাত কব্জির উপর থেকে কেটে বেরিয়ে আসে। প্রফুল্লবাবুর ডান পা, ঘাড় ও ডান হাতে গভীর ক্ষত হয়। ওই অবস্থাতেই তাদের বারান্দায় ফেলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায় প্রশান্ত। খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। আটক করা হয় প্রশান্তকে। উদ্ধার করা হয় অস্ত্র। জখম দম্পতিকে প্রথমে ইন্দাস ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও পরে বর্ধমান মেডিক্যালে নিয়ে যাওয়া হয়। বর্ধমান মেডিক্যালের ডেপুটি সুপার অমিতাভ সাহা বলেন, ‘‘প্রয়োজনীয় চিকিৎসা এবং ওষুধপত্র দিয়ে তাঁদের কলকাতা পাঠানো হয়েছে।’’
পুলিশ জানিয়েছে ওই দম্পতির মেজ ও ছোটো ছেলে বাবা-মায়ের সঙ্গে কলকাতায় রয়েছেন। শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি। এসডিপিও বলেন, ‘‘তাঁরা ফিরলেই ৩৪১, ৩২৪, ৩২৬ এবং ৩০৭ ধারায় মামলা দায়ের করা হবে।’’ এ দিন ইন্দাস থানার ওসি এবং সোনামুখীর সিআই-কে নিয়ে এসডিপিও বামনিয়া গ্রামে যান। পুলিশের দাবি, গ্রামের পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। ঘটনাস্থলে মোতায়েন রয়েছে রক্ষী। এ দিনের ঘটনায় হতবাক পুরো গ্রাম।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy