কাশীপুরে তৃণমূলের সভায় মদন মিত্র। ছবি: সঙ্গীত নাগ
লোকসভা নির্বাচনে কাশীপুর বিধানসভা এলাকায় বিজেপির থেকে ১৬ হাজারের কিছু বেশি ভোটে পিছিয়ে রয়েছে তৃণমূল। সেই পরিসংখ্যান তুলে ধরে গেরুয়া শিবির দাবি করছে, বিধানসভাতেও কাশীপুর হাতছাড়া হবে তৃণমূলের। সোমবার জনসভা থেকে কাশীপুরের বিধায়ক স্বপন বেলথরিয়া দাবি করলেন, বিধানসভায় তৃণমূল সেখানে ৫০ হাজারের বেশি ভোটে জিতবে।
সোমবার কাশীপুরের সেবাব্রতী সঙ্ঘের মাঠে তৃণমূলের একটি সভা ছিল। উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের নারী ও শিশুকল্যাণমন্ত্রী শশী পাঁজা, দলের নেতা তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী মদন মিত্র, রাজ্যের সাধারণ সম্পাদক জয়া দত্ত, পুরুলিয়া জেলা তৃণমূলের সভাপতি গুরুপদ টুডু, জেলার মুখপাত্র নবেন্দু মাহালি প্রমুখ।
সভার শুরুতেই বিধায়ক স্বপনবাবু পরিসংখ্যান দিয়ে দাবি করেন, লোকসভায় কাশীপুরে তৃণমূলের ভোট আগের বিধানসভার থেকে বেড়েছে। তাঁর দাবি, ২০১৬ সালে বিধানসভায় তৃণমূল পেয়েছিল ৬৮,৯০০টি ভোট। সিপিএম ৪৮,৪০০টি। আর বিজেপির ভোট ছিল ১৮,০০০। ২০১৯ সালের লোকসভায় তৃণমূলের ভোট বেড়ে হয় ৭৬,৯৬১। সিপিএমের ভোট কমে দাঁড়ায় হাজার সাতেকে। স্বপনবাবুর দাবি, ‘‘লোকসভাতে কাশীপুরে তৃণমূল হারেনি। তাঁদের প্রায় ৪২ হাজার ভোট বিজেপির কাছে বিক্রি করেছিলেন সিপিএমের নেতারা।’’
সিপিএমের পুরুলিয়া জেলা সম্পাদক প্রদীপ রায়ের বক্তব্য, ‘‘তৃণমূলের নেতারা এখন পাগলের প্রলাপ বকছেন। ভোটাধিকার মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার। ভোট বিক্রির কথা বলে স্বপনবাবু মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকারকেই অপমান করছেন।” বিজেপির জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী বলছেন, ‘‘শুধু সিপিএমের নয়, লোকসভার পরে যে ভাবে কাশীপুরে আমাদের সংগঠন বেড়েছে, তাতে এ বার বিধানসভায় তৃণমূলের ভোটও পাব। কাশীপুরে ৬০ হাজারের বেশি ভোটে আমাদের প্রার্থী জিতবেন।”
ভোটের পরিসংখ্যানের পাশাপাশি, ভিড়ের হিসেব নিয়েও শুরু হয়েছে তরজা। এ দিনের সভা ‘বিজেপিশাসিত কেন্দ্রীয় সরকারের অপশাসন ও কেন্দ্রের জনবিরোধী নীতির বিরুদ্ধে’ বলে দাবি করেছে তৃণমূল। তবে জেলার রাজনীতির ওঠাপড়ার নিয়মিত পর্যবেক্ষকেরা মনে করাচ্ছেন, গত ১০ জানুয়ারি কাশীপুরের এই এলাকাতেই সভা করেছিল বিজেপি। এসেছিলেন তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যোগ দেওয়া শুভেন্দু অধিকারী। সেই সভায় ভাল ভিড় হয়েছিল বলে দাবি বিজেপির। ফলে ,একই এলাকায় সভা করে তৃণমূলের ভিড়ের বহর দেখানোর পাল্টা প্রচেষ্টা ছিল বলে মনে করছেন অনেকে।
পুলিশের হিসেবে, এ দিন হাজার কুড়ি লোকের জমায়েত হয়েছিল। তবে তৃণমূলের জেলা পরিষদের সদস্য সৌমেন বেলথরিয়া দাবি করেছেন, সভায় ভিড় হয়েছিল প্রায় চল্লিশ হাজার মানুষের। তিনি বলেন, ‘‘শুধু কাশীপুর বিধানসভার দলীয় কর্মী-সমর্থকেরাই এসেছিলেন।” সভায় ঠাসা ভিড় ছিল। মাঠ ছাপিয়ে তা পৌঁছে গিয়েছিল রাস্তাতেও। আশপাশের বাড়ি আর দোকানের ছাদেও অনেকে উঠেছিলেন। মদনবাবুর কথায়, ‘‘মাঠ ছোট হওয়াতেই সমস্ত মানুষ সভার মধ্যে ঢুকতেই পারেনি।” পরের বার আরও বড় মাঠে সভা করার পরামর্শ বিধায়ককে দিয়েছেন তিনি। তবে বিজেপির জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগরবাবুর পাল্টা দাবি, ‘‘কাদের সভায় ভিড় বেশি হয়েছে, সেটা কাশীপুরের মানুষ দেখেছেন। তৃণমূল বাঁকুড়া থেকেও কাশীপুরের সভায় লোক এনেছিল।” সে কথা মানেননি তৃণমূল নেতারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy