Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

দু’মাসেই পিচ উঠল রাস্তার

মাস দুয়েকও হয়নি রাস্তার কাজ শেষ হয়েছে। তারই মধ্যে কোথাও পিচ উঠে গিয়ে, কোথাও পিচ বসে গিয়ে করুণ দশা রানিগঞ্জ-মোরগ্রাম ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের পাঁচড়া মোড় থেকে খয়রাশোল যাওয়ার রাস্তা। এলাকার মানুষের বক্তব্য, একটি বর্ষা পেরিয়ে যাওয়ার আগেই এমন হাল হলে এই নতুন রাস্তার ভবিষ্যৎ কী?

পিচের রাস্তার উপরে কাদা! —নিজস্ব চিত্র।

পিচের রাস্তার উপরে কাদা! —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুবরাজপুর শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০১৬ ০০:০৪
Share: Save:

মাস দুয়েকও হয়নি রাস্তার কাজ শেষ হয়েছে। তারই মধ্যে কোথাও পিচ উঠে গিয়ে, কোথাও পিচ বসে গিয়ে করুণ দশা রানিগঞ্জ-মোরগ্রাম ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের পাঁচড়া মোড় থেকে খয়রাশোল যাওয়ার রাস্তা। এলাকার মানুষের বক্তব্য, একটি বর্ষা পেরিয়ে যাওয়ার আগেই এমন হাল হলে এই নতুন রাস্তার ভবিষ্যৎ কী?

ঘটনা হল, ওই রাস্তাটি এবং খয়রাশোলে ঢোকার মূল দু’টি রাস্তার কাজ শুরু হওয়ার আগে কম জল ঘোলা হয়নি। শাসকদলের মদতে সিন্ডিকেট গড়ে কাজে বাধা দেওয়া হচ্ছে, তোলা আদায় করা হচ্ছে— রাস্তা দু’টি তৈরির আগে এমনই অভিযোগ ছিল ঠিকাদার সংস্থার। প্রশাসনিক তৎপরতায় সমস্যা মেটে। কাজ শেষ হওয়ার পরে সেই রাস্তা দু’টিরই এমন করুণ হাল দেখে তাই বিরক্ত রাস্তা ব্যবহারকারীরা।

প্রশাসন সূত্রের খবর, গত বছর এপ্রিলে পূর্ত দফতরের আধীনে কলকাতার এক ঠিকাদার সংস্থা খয়রাশোল ব্লকের দু’টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার বরাত পায়। প্রথমটি রানিগঞ্জ-মোরগ্রাম ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের পাঁচড়া মোড় থেকে খয়রাশোল পর্যন্ত রাস্তা (‌দৈর্ঘ্য ৮.৬ কিলোমিটার) এবং দুবরাজপুর থেকে সারিবাগান পর্যন্ত (‌দৈর্ঘ্য ৫.৬ কিলোমিটাক) রাস্তা। খবরটা জানার পরে খুশি হয়েছিলেন এলাকাবাসী। কারণ দীর্ঘ দিন ধরে অবহেলায় আর খানাখন্দে ভরা আগের রাস্তা কার্যত পিচ রাস্তারও মর্যদা হারিয়েছিল। দু’টি রাস্তার জন্য বরাদ্দ যথাক্রমে সাড়ে ৮ কোটি ও সোয়া ৫ কোটি। রাস্তা তৈরি হওয়ার পরে কালো পিচের উপর ঝকঝকে কালো রাস্তার উপরে সাদা ডিভাইডার ও পাশে হরেক বোর্ড আটকে দেওয়ায় বেশ ভাল লাগছিল। কিন্তু বৃষ্টি শুরু হতেই ছন্দপতন। আস্তে আস্তে নষ্ট হতে শুরু করে রাস্তাগুলি। বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পাঁচড়া-খয়রাশোল রাস্তাটি, সারিবাগান থেকে খয়রাশোল পর্যন্ত কমপক্ষে ১০ জায়গায় রাস্তা চূড়ান্ত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ঠিকাদার সংস্থার পক্ষে অবশ্য সামনাসামনি কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। তবে আড়ালে সংস্থার অনেকেই জানিয়েছেন, ইলামবাজারের অজয় সেতু বন্ধ থাকায় রানিগঞ্জ ও দুর্গাপুর থেকে পাণ্ডবেশ্বর ও ভীমগড়ের কাছে অজয় সেতু পেরিয়ে বীরভূমের আসা ভারী লরি ও অন্যান্য যানবাহন চলাচলের জন্যই এমন অবস্থা। যে বহন ক্ষমতা মেপে রাস্তাটি তৈরি হয়েছিল, তার তুলনায় অনেক বেশি ভারী যানবাহন প্রায় মাসখানেক ধরে চলাচল করছে। তাই এই বিপত্তি। খয়রাশোলের বাসিন্দারা যদিও রাস্তার মান নিয়েই প্রশ্ন তুলছেন। তাকে সমর্থন করছেন জেলার সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরীও। তিনি বলছেন, ‘‘অজয় সেতুর জন্য যান চলাচল বেড়েছে, এটা ঠিকই। কিন্তু, মান খারাপ না হলে মাত্র দু’মাসের মাথায় এ ভাবে রাস্তা খারাপ হতে পারে না। আমরা অবশ্যই জেলা পূর্ত দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলব।’’

রাস্তা বেহাল হয়েছে মেনে নিয়েছেন পূর্ত (সড়ক) এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার অশোক কুমার। তিনি বলছেন, ‘‘বিষয়টি আমাদের নজরে রয়েছে। অবশ্যই রাস্তাটি মেরামত করে দেবে সংস্থা। ইলামবাজারের অজয় সেতু সংস্কারের পরে ওই সেতু খুলে গেলেই রাস্তাটি মেরামত করা হবে।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE