প্রতীকী ছবি।
এক বছর আগে বুথের সামনে পুলিশের হাত থেকে বন্দুক ছিনিয়ে নিয়ে ব্যালট বক্স তুলে নিয়ে গিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। রবিবার রাইপুরের জামবনি ও চাকা বুথে আধাসেনার এসএলআর-এর পাশ দিয়ে বুথে নির্ভয়ে ভোট দিলেন গ্রামবাসী। তবে এ দিন ভোটারদের মুখে মুখে ফিরেছে, পঞ্চায়েত ভোটের দিনের সেই ভোট-লুটের আতঙ্কের কথা।
জামবনি বাঁজি কুসুম প্রাইমারি স্কুলে যাওয়ার পথে দেখা হল কানাই মান্ডি, ভীম সর্দার, গুরুদাস মান্ডিদের সঙ্গে। ভোট দিয়ে ফিরে দে বাড়ির দাওয়ায় বসে গল্প করছিলেন তাঁরা। তাঁরা বলেন, ‘‘ভোট দিয়েছি। তবে কেন্দ্রীয় বাহিনী না থাকলে হয়তো বুথে যাওয়ার সাহস পেতাম না। গত পঞ্চায়েত ভোটে যা হয়েছিল, জীবনে দেখেনি।’’ বুথে যাওয়ার পথেই দেখা গেল বিজেপির শিবির। পদ্মফুল আঁকা দলীয় পতাকার নীচে বসে লক্ষ্মীকান্ত মাহাতো, জলধর লোহাররা অভিযোগ করেন, ‘‘বুথে সন্ত্রাস নেই। তবে কয়েকটি পাড়ার লোকজন এখনও ভোট দিতে আসেননি। শুনছি, সেখানে তৃণমূলের ছেলেরা হুমকি দিয়ে গিয়েছে।’’ বুথ থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে তৃণমূলের শিবির। সেখানে বসে থাকা স্মরজিৎ মুর্মু, মধুসূদন লোহারেরা দাবি করেন, ‘‘ভয় দেখানোর কথা কে বলছে? সব ঠিক আছে। দরকার হলে বুথে ঢুকে দেখুন।’’
ঘড়ির কাঁটা তখন দুপুর সাড়ে বারোটা। বুথের সামনে ভোট দিতে আসা হাতেগোনা কয়েকজন দাঁড়িয়ে। প্রিসাইডিং অফিসার জানালেন, সব দলই এজেন্ট দিয়েছে। ততক্ষণে ৫০ শতাংশের বেশি ভোট পড়ে গিয়েছে। ভোট দিয়ে বেরিয়ে মানস লোহার বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত ভোট দিতে এসে দেখেছিলাম, জনা পঞ্চাশেক অচেনা লোক বুথ ঘিরে রেখেছে। ভোটকর্মীরা ভয়ে জমিতে লুকিয়ে। বুথে ঢোকার আর সাহস হয়নি। এ বার ভোট দিলাম।’’
সেখান থেকে প্রায় ১৫-২০ কিলোমিটার দূরের চাকা-রঘুনাথপুর জুনিয়র হাইস্কুল। এখানেই পুলিশের বন্দুক কেড়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। ওই বুথে ঢুকতেই কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান হাসি মুখে বলে ওঠেন, ‘‘ডর কাঁহা?’’ প্রিসাইডিং অফিসার জানালেন, ততক্ষণে ৬০ শতাংশের বেশি ভোট পড়ে গিয়েছে। ভোট দিতে আসা রবীন্দ্রনাথ মাঝি, বিকাশ তপাদার বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় বাহিনী রয়েছে বলে ভরসা পেয়ে ভোট দিতে এলাম।’’ গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে রানিবাঁধে লদ্দা গ্রামে ভোট-লুটের উদ্দেশে এলাকায় যাওয়ার অভিযোগে তৃণমূল নেতার গাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছিল বাসিন্দারা। এ দিন ওই বুথেও আধাসেনা দেখা গিয়েছে। নির্বিঘ্নেই চলছে ভোট। বিকেল ৪টে নাগাদ প্রিসাইডিং অফিসার জানালেন ৮০ শতাংশ ভোট পড়ে গিয়েছে। আনন্দ মাহাতো,নিমাই মাহাতোরা বলেন, ‘‘গ্রামে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কর্মী রয়েছেন। কিন্তু কোনও বিবাদ নেই। পঞ্চায়েত ভোটে বহিরাগত দুষ্কৃতীরা আসায় গন্ডগোল বেঁধেছিল। এ বার বাইরের লোকেরা নেই। খুব শান্তিতে ভোট দিয়েছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy