মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
এক জন দু’বার তাঁর লোকসভা কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়েছেন। দ্বিতীয় জন পোড়খাওয়া রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। অন্য দলের টিকিটে হলেও পাঁচ বারের বিধায়ক।
বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রে শতাব্দী রায় ও বোলপুর আসনে অসিত মালকে কেন প্রার্থী করল দল— ভিডিয়ো বার্তায় তার ব্যাখ্যা দিলেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুধু বার্তা দেওয়াই নয়, দু’জনকেই বিপুল ভোটে নির্বাচিত করার আহ্বানও জানালেন।
‘বীরভূম ডিস্ট্রিক্ট তৃণমূল কংগ্রেস’ নামে জেলা তৃণমূলের ফেসবুক-এ আপAলোড করা দু’টি ভিডিয়ো-বার্তায় গোড়াতেই মমতা তুলে ধরেছেন কেন ওই দু’জনকে প্রার্থী করা হল। সেই ভিডিও বার্তা প্রচুর শেয়ার-ও হয়েছে। তৃণমূল বলছে, দলের দুই প্রার্থী তো বিপুল ভোটে জিতবেই। জনগণের প্রতি দলনেত্রীর আবেদনে প্রতিপক্ষের সঙ্গে তাঁদের জয়ের ব্যবধান আরও বাড়বে।
শতাব্দী রায়কে নিয়ে বলতে গিয়ে মমতা বলেছেন, ‘‘বীরভূম কেন্দ্রে আমাদের প্রার্থী শতাব্দী রায়। শতাব্দী কিন্তু তাঁর কেন্দ্র অন্ত প্রাণ। শতাব্দী দিল্লিতে থাকে। সংসদ কিন্তু ভীষণ মন দিয়ে করে। ওকে আপনারা আগেও জিতিয়েছেন। কই কোনও লোকসান তো হয়নি। শতাব্দীকে জেতানোর পরে দেখেছেন বীরভূমের কাজে কত উন্নতি হয়েছে। আমি অনুরোধ করব শতাব্দীকে ভোট দিন।’’
১০ বছর আগে ‘লালদুর্গ’ হিসেবে পরিচিত বীরভূমে ‘বহিরাগত প্রার্থী’ হিসেবে ঘাসফুল ফুটিয়ে সকলকে চমকে দিয়েছিলেন শতাব্দী। দ্বিতীয় বারেও বিপক্ষকে তিনি হেলায় হারিয়েছেন। তৃতীয় বারের জন্যও বীরভূম লোকসভা আসনে সেই ‘তারকা প্রার্থী’র উপরেই ভরসা রেখেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সে জন্য ভীষণ খুশি প্রার্থী নিজে, কৃতজ্ঞও। তার উপর তাঁর হয়ে দলনেত্রীর ভিডিয়ো বার্তাকে ইতিবাচক ও গুরুত্বপূর্ণ বলে চিহ্নিত করেছেন শতাব্দী।
বুধবার সিউড়ি ২ ব্লকে প্রচারের ফাঁকে শতাব্দী বলেন, ‘‘দিদি দলের সব প্রার্থীর জন্যই বার্তা দিয়েছেন। জনতার কাছে ওঁর আবেদন অন্য মাত্রা দেবে।’’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
বোলপুর কেন্দ্রের প্রার্থী অসিত মালকে কেন প্রার্থী করা হয়েছে, সে কথাও বলেছেন মমতা। ভিডিয়ো বার্তায় তাঁর মন্তব্য, ‘‘বোলপুর আমার প্রাণের জায়গা। রাঙা মাটির জায়গা। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জায়গা। আমার খুব প্রিয় প্রার্থী অসিত মালকে এখানে প্রার্থী করা হয়েছে। অসিত মাল আগে বিধায়ক ছিলেন। ভাল কাজ করেছেন। আমার বিশ্বাস আগামী দিনেও তিনি ভাল কাজ করবেন। সমস্ত কুৎসা অপপ্রচারের বিরুদ্ধে গিয়ে অসিত মালকে ভোট দিন।’’
১৯৭৭ সালে হাঁসন কেন্দ্রে নির্দল প্রার্থী হিসেবে প্রথম বার নির্বাচনের ময়দানে নেমেছিলেন অসিতবাবু। সে বার পরাজিত হলেও, ১৯৮২ সালে কংগ্রেসের প্রতীকে লড়ে জয়ী হন। আর ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে। কংগ্রেসের চিহ্নে ২০১১ সাল পর্যন্ত ৭ বার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পাঁচ বার বিধায়ক নির্বাচিত হন তিনি। ২০১৪ সালের ২১ জুলাই তৃণমূলে যোগ দেন অসিত। তৃণমূলের টিকিটে ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটে প্রার্থী হন সেই হাঁসনেই। কিন্তু কংগ্রেসের মিল্টন রসিদের কাছে ২৫ হাজারের বেশি ভোটে পরাজিত হন।
তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, তৃণমূলে যোগদানের পর থেকে অনুব্রত তো বটেই, দলের শীর্ষ নেতা সুব্রত বক্সি, পার্থ চট্টোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিমদের ‘সুনজরে’ ছিলেন অসিত। ধীরে ধীরে তৃণমূলের ‘ঘরের ছেলে’ হয়ে ওঠেন তিনি। অন্য দিকে গতবারের তৃণমূলের টিকিটে বিপুল ভোট জয়ী অনুপম হাজরাকে (যদিও এখন তিনি বিজেপির হয়ে কলকাতার যাদবপুর কেন্দ্রের প্রার্থী) নিয়ে প্রথম থেকেই বিব্রত ছিল দল।
বোলপুর কেন্দ্রে প্রার্থী করার পরে, এ বার দলনেত্রী তাঁর সমর্থনে ভোট দেওয়ার জন্য ভিডিয়ো বার্তা পাঠিয়েছেন, তাতে খুশি অসিতও। এ দিন আউশগ্রাম ২ ব্লকে প্রচারের ফাঁকে অসিতবাবু জানান, ‘‘সৈনিক হিসেবে দল যে দায়িত্ব দিয়ে তা পালন করবো। দলনেত্রীর এই বার্তায় আরও অনুপ্রাণিত হলাম।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy