অগ্নিগর্ভ বগটুই। নিজস্ব চিত্র।
সোমবার তৃণমূল নেতা ভাদু শেখের মৃত্যুর ঠিক পরের দিনই ফের অগ্নিগর্ভ রামপুরহাটের বগটুই গ্রাম। সোমবার রামপুরহাটের বগটুই গ্রামে বোমা হামলায় তৃণমূল নেতা ভাদু শেখের মৃত্যু হয়। এর পর সোমবার রাতেই বগটুই গ্রামের পশ্চিমপাড়ার ১০টি বাড়িতে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় দমকল ১০ জনের মৃত্যু হওয়ার কথা নিশ্চিত করলেও পুলিশের দাবি মৃত্যু হয়েছে সাত জনের। বীরভূমের পুলিশ সুপার নগেন্দ্রনাথ ত্রিপাঠি জানিয়েছেন, এই ঘটনায় মোট সাত জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে কী ভাবে এই আগুন লাগে সেই বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাননি তিনি। সিলিন্ডার ফেটে এই অগ্নিকাণ্ড হতে পারে বলেও তিনি মন্তব্য করেন। এই ঘটনার জেরে ফিরহাদ হাকিম-সহ তিন সদস্যের দল ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থলের দিকে রওনা দিয়েছেন।
ভাদু রামপুরহাট এক নম্বর ব্লকের বড়শাল গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান ছিলেন। চায়ের দোকানে বসে থাকার সময় ভাদুকে লক্ষ্য করে বোমা মারে দুষ্কৃতীরা। ঘটনার পর স্থানীয়েরা রক্তাক্ত অবস্থায় ভাদুকে রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা ভাদুকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
তবে ভাদু ঘনিষ্ঠ লালন শেখের দাবি, ছোট লালন, মাসাদ, সঞ্জু-সহ বেশ কিছু স্থানীয় দুষ্কৃতী ভাদুর মৃত্যুর জন্য দায়ী। তাঁরা আগে সিপিআইএম দলের সদস্য থাকলেও বর্তমানে কোনও দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না বলেও তিনি দাবি করেন। পাশাপাশি তিনি আরও জানান, ভাদু নেতা হিসেবে খুব জনপ্রিয় ছিলেন। তাই দলগত কারণেই তাঁকে মারা হয়েছে বলেও তাঁর দাবি।
সোমবার রাত সাড়ে আটটা নাগাদ ভাদুর উপর হামলা চালায় দুষ্কৃতীরা। তার ঠিক কিছু পরই আবার একই গ্রামে এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার সঙ্গে ভাদুর মৃত্যুর কিছু যোগসূত্র আছে কি না তা নিয়েও বিস্তর জল্পনা দেখা গেছে। সোমবার সন্ধ্যায় বগটুই গ্রাম তৃণমূল উপপ্রধান ভাদু শেখের খুনের ঘটনার পর মধ্যরাতেই অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে। স্থানীয় গ্রামবাসীরা বোমাবাজির শব্দ শুনেছেন বলেও সূত্রের খবর। তবে কখন কী ভাবে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে তা এখনও স্পষ্ট নয়।
এছাড়াও উঠে আসছে পাড়াগত দ্বন্দ্বের জল্পনাও। মনে করা হচ্ছে বগটুই-এর পূর্ব পাড়া এবং পশ্চিম পাড়ার মধ্যে অনেকদিন ধরেই ঝামেলা ছিল। পূর্ব পাড়া ঘনিষ্ঠ ভাদুকে পশ্চিমপাড়ার দুষ্কৃতীরা মেরেছে বলেও কানাঘুষোয় উঠে এসেছে। তার পরই না কি সোমবার রাতে হামলা চালানো হয় পশ্চিমপাড়ায়। আর তার জেরেই এই অগ্নিকাণ্ড। তবে সব কিছুই তদন্ত সাপেক্ষ। পুলিশ ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে। তবে রাজনৈতিক মহলের দাবি একটাই, তৃণমূল নেতার মৃত্যুর পরই এই অগ্নিকাণ্ড নেহাতই কাকতালীয় নই। সাম্প্রতিক সময়ে এত বড় ঘটনাও খুব কমই ঘটেছে পশ্চিমবঙ্গের বুকে। এই ঘটনার জের দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে বলেও মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞেরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy