বিদেশি ছাত্রকে অপহরণের অভিযোগে ধৃত আরও ন’জনকে বোলপুর আদালতে তোলা হল রবিবার। —নিজস্ব চিত্র।
মায়ানমার থেকে বিশ্বভারতীতে পড়তে এসেছিলেন তিনি। সেই বিদেশি ছাত্রের কাছে কী করে এ দেশের পরিচয়পত্র এল, সেটাই ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের। তাঁকে অপহরণ করা হয়নি বলেও দাবি করেছে ধৃতদের অনেকে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বীরভূম পুলিশের এক শীর্ষ কর্তা রবিবার বলেন, “এ দেশের প্যান কার্ড-সহ বেশ কিছু জিনিস অপহৃত যুবকের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে। ওই যুবক আন্তর্জাতিক কোনও বেআইনি কারবারের সাথে যুক্ত রয়েছেন কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কিছু বলা সম্ভব নয়।”
পুলিশ সূত্রে খবর, দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে ওই ছাত্রকে। তবে বিদেশি নাগরিক হওয়ায় এখনও তাকে গ্রেফতার করা যায়নি বলে পুলিশ সূত্রে দাবি। মানুষের চুল বিক্রির অবৈধ চোরাচালানকারীদের সঙ্গে তিনি যুক্ত থাকতে পারেন বলেও পুলিশ সূত্রে খবর। প্যান কার্ড বানিয়ে ওই ছাত্র নিজেকে ভারতের নাগরিক বলে দাবি করতেন বলেও পুলিশ জানতে পেরেছে। কিন্তু মায়ানমারের নাগরিক হওয়া সত্ত্বেও তিনি কী ভাবে এখানকার প্যান কার্ড দিয়ে পরিচয় পত্র বানালেন তা তদন্ত করছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার দুপুরে বোলপুরের ইন্দিরাপল্লীর ভাড়াবাড়ি থেকে ১২- ১৪ জন যুবক দু’টি গাড়িতে এসে ওই বিদেশি ছাত্রকে তুলে নিয়ে যায়। এলাকার বাসিন্দারা তখন বুঝে উঠতে পারেননি যে, যারা ওই ছাত্রটির খোঁজে এসেছিল তারা সকলেই ‘অপহরণকারী’। ঘটনায় বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের তরফে বোলপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করা হলে তদন্ত নামে বীরভূম জেলা পুলিশ। শনিবার দুপুরে পূর্ব মেদিনীপুর লাগোয়া ওড়িশার তালসারির সমুদ্র সৈকত থেকে অপহৃত বিদেশি ছাত্রকে উদ্ধার করে মোট ১২ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃতদের মধ্যে তিন জন দুবরাজপুর, একজন নানুর ও বাকি আট জন পূর্ব মেদিনীপুরের বাসিন্দা।
ধৃতদের মধ্যে দুবরাজপুরের তিন জনকে শনিবার বোলপুর আদালতে তোলা হলে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারক। ঘটনায় বাকি ৯ অভিযুক্তকে রবিবার বোলপুর আদালতে তোলা হলে তাদেরও ১৪ দিনের জেলে হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। আদালতে অভিযুক্তদের নিয়ে যাওয়ার পথে এ দিন প্রশ্ন করা হলে সংবাদমাধ্যমের সামনে তারা দাবি করে, “আমরা কোনও ভাবেই তাকে (বিদেশি ছাত্রকে) অপহরণ করিনি। সে নিজের ইচ্ছেয় গিয়েছিল আমাদের সঙ্গে।’’ ধৃতদের দাবি, চুলের ব্যবসা করায় ওই ছাত্র তাদের থেকে ৬১ লক্ষ টাকা নিয়েছিলেন। তার মধ্যে ৯ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা দিয়েছিলেন ওই ছাত্র। বাকি টাকা বিদেশি ছাত্র দিচ্ছিলেন না বলে ধৃতদের দাবি।
ধৃতেরা দাবি করে, ওই ছাত্র তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখাও বন্ধ করে দিয়েছিলেন। এরপরই বাকি টাকা পাওয়ার ক্ষেত্রে বোঝাপড়ার জন্য তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল বলে ধৃতদের দাবি। পুলিশ সূত্রে খবর, ওই ছাত্র ধৃতদের সঙ্গে এই ব্যবসায় কী ভাবে জড়িত ছিল তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ভারতের প্যান কার্ড নিয়ে সে কী করত তাও খোঁজ করা হচ্ছে। আগামী দু’একদিনের মধ্যে বোলপুর সংশোধনাগারে ছাত্রকে নিয়ে গিয়ে অপহরণকারীদের সনাক্তকরণ করানো হবে বলেও জানা গিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy