আদ্রা রেলস্টেশন।
কয়েকটি ট্রেনকে বেসরকারি সংস্থার হাতে তুলে দেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের তোড়জোড়ের জল্পনা সামনে আসতেই ক্ষোভ ছড়িয়েছে আদ্রার রেলকর্মী মহলে। কাজ হারানোর আশঙ্কা করছেন রেল কর্মীদের ইউনিয়নগুলি। একই সঙ্গে বেসরকারি সংস্থাকে ট্রেন চালানোর দায়িত্ব দেওয়া হলে যাত্রীদের সুরক্ষার দিকটি নিয়েও আপোস করা হবে বলে অভিযোগ তুলতে শুরু করেছে বাম, ডান— প্রায় সমস্ত রেলকর্মী সংগঠন। রেলকর্মী সংগঠনগুলি জানাচ্ছে, কেন্দ্রীয় সরকারের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ সর্বশক্তি দিয়েই করা হবে। কেন্দ্রীয় সরকারকে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করাতে চাপ বাড়াতে ইতিমধ্যেই এনএফআইআর তাদের জাতীয় সম্মেলনে এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে রেলে সার্বিক ধর্মঘট ডাকার বিষয়ে আলোচনা করেছে। তবে আদ্রা ডিভিশনের এক কর্তা বলেন, ‘‘আমাদের কাছে ট্রেনের বেসরকারি করণের কোনও নির্দেশ আসেনি। যদি আলোচনা হয়, তবে তা অতি উচ্চস্তরে চলছে।’’
সূত্রের খবর, দূরপাল্লার পাশাপাশি এ বার কিছু লোকাল ট্রেনকেও বেসরকারি সংস্থার হাতে তুলে দেওয়ার পথে এক ধাপ এগিয়েছে রেল মন্ত্রক। আগামিকাল শুক্রবার রেল মন্ত্রকে এ নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক ডাকা হয়েছে। সূত্রের খবর, ওই বৈঠকে কিছু ট্রেনকে বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।
রেলকর্মী সংগঠনগুলির আশঙ্কা, শুক্রবারের ওই বৈঠকে কয়েকটি দূরপাল্লা-সহ কিছু লোকাল ট্রেন চালানোর দায়িত্ব বেসরকারি সংস্থার হাতে তুলে দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা হবে। আর তারপরেই ক্ষোভ ধূমায়িত হচ্ছে রেলকর্মী সংগঠনগুলির মধ্যে। বুধবার আদ্রা ডিভিশনের বিভিন্ন রেলকর্মী ইউনিয়নের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে সেই আঁচ পাওয়া গিয়েছে।
ট্রেন চালানোর দায়িত্ব বেসকারি সংস্থাকে দেওয়া হলে তারা তীব্র বিরোধিতার পথে নামবে বলে জানাচ্ছে এনএফআইআর অনুমোদিত মেনস কংগ্রেস, এআইআরএফ অনুমোদিত মেনস ইউনিয়ন, তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন অনুমোদিত দক্ষিণ-পূর্ব রেলওয়ে মেনস তৃণমূল কংগ্রেসের মত রেলকর্মীদের সংগঠনগুলি। ট্রেন চালানোর দায়িত্ব বেসরকারি সংস্থাকে দেওয়া হলে বিরোধিতার পথেই যাবে বলে জানাচ্ছে বিএমএস অনুমোদিত রেলকর্মী সংগঠন ডিপিআরএমএস।
কিন্তু কেন বিরোধিতার পথে যেতে চাইছে রেলকর্মী সংগঠনগুলি? দক্ষিণ-পূর্ব রেলের দুই বড় সংগঠন মেনস কংগ্রেস ও মেনস ইউনিয়েনের দাবি, বেসরকারি সংস্থার হাতে ট্রেন চালানোর দায়িত্ব দিলে সংস্থাগুলি যাত্রীদের সুরক্ষার সঙ্গে আপোস করবে। একই সঙ্গে বেশি মুনাফা করার জন্য টিকিটের দাম কয়েকগুণ বাড়তে পারে বলেও জানাচ্ছে তারায়
মেনস কংগ্রেসের নেতা সুব্রত দে বলছেন, ‘‘বেসরকারি সংস্থাগুলি মুনাফা করতে টিকিটের দাম কয়েকগুণ বাড়াবে। ট্রেনে ভ্রমণ করলে রেলকর্মী ও অবসরপ্রাপ্ত রেলকর্মীরা যে সুবিধা পান, তাও তুলে দেবে সংস্থাগুলি।” একই সঙ্গে প্রচুর সংখ্যায় রেলকর্মী কাজ হারাবেন বলেও আশঙ্কা তাঁদের।
ট্রেনে যাত্রীদের খাবারের দায়িত্ব বেসরকারি সংস্থার হাতে তুলে দেওয়ার পরেই খাবারের মান নিয়ে রাজধানীর মত ট্রেনেও বিস্তর অভিযোগ আসছে। সেই প্রসঙ্গ টেনে মেনস ইউনিয়নের নেতা গৌতম মুখোপাধ্যায় দাবি করেন, ‘‘বেসরকারি সংস্থাকে ট্রেন চালানোর দায়িত্ব দিলে একই ঘটনা ঘটবে। কারণ ট্রেন চালানোর ক্ষেত্রে নিজের কর্মীদের উপরে রেল প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণ থাকে। বেসরকারি সংস্থার কর্মীদের উপরে রেল প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণ থাকবে কি? এর প্রভাব পড়বে যাত্রী সুরক্ষায়।”
ইতিমধ্যেই ইউনিয়নগুলি কেন্দ্রীয় সরকারের এই পরিকল্পনার বিরুদ্ধে কালাদিবস পালন, গন ধর্না, বিক্ষোভ অবস্থান শুরু করেছে। কেন্দ্রীয় সরকার সিদ্ধান্তে অনড় থাকলে আরও বড় আন্দোলনের কর্মসূচি নেওয়া হচ্ছে বলে জানাচ্ছেন ইউনিয়নের নেতারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy