সুনীলবরণ পইতুণ্ডি। নিজস্ব চিত্র
স্ত্রীকে পুড়িয়ে মারার দায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হল স্বামীর। সাজাপ্রাপ্তের নাম সুনীলবরণ পইতুণ্ডি। বাঁকুড়ার সিমলাপালের পাশ্বর্লা গ্রামে তার বাড়ি।
বুধবার বিষ্ণুপুর আদালতের অতিরিক্ত দায়রা বিচারক আতাউর রহমানের এজলাসে এই সাজা ঘোষণা করা হয়। সরকার পক্ষের আইনজীবী গুরুপদ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘অনিতা মিশ্র (২৯) নামের ওই বধূর মৃত্যুকালীন জবানবন্দিতে জানানো হয়েছে, তাঁর গায়ে স্বামী সুনীলবরণ কেরোসিন তেল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিল। মঙ্গলবার বিচারক অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করেন। বুধবার, বিচারক সুনীলবরণকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়ে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ধার্য করেন। অনাদায়ে আরও ছ’মাস জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।’’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, ২০০২ সালে বাঁকুড়া শহরের পাঁচবাগার বাসিন্দা অনিতা মিশ্রের সঙ্গে বিয়ে হয় সিমলাপালের পাশ্বর্লার কালশুলি গ্রামের সুনীলবরণ পইতুণ্ডির। বিষ্ণুপুরের দ্বারিকা শিল্পাঞ্চলের একটি কারখানায় কাজ করত সুনীল। বিষ্ণুপুরের হাজরাপাড়ায় বাড়িভাড়া নিয়ে দুই ছেলেমেয়ে-সহ স্ত্রীকে নিয়ে থাকত। নিহত বধূর বাবা মৃত্যুঞ্জয় মিশ্রের দায়ের করা অভিযোগ থেকে জানা যায়, পণের বাকি টাকা দিতে না পারায় শ্বশুরবাড়িতে তাঁর মেয়ের উপরে নির্যাতন করা হত। তা নিয়ে বিষ্ণুপুরের ভাড়াবাড়িতেও মাঝেমধ্যেই তাঁর মেয়ে ও জামাইয়ের মধ্যে অশান্তি লেগে থাকত।
বধূর পরিবারের দাবি, ২০১০ সালের ১৬ জুন দুপুর ২টোর সময় অনিতার গায়ে আগুন লাগে। খবর পেয়ে বিষ্ণুপুর হাসপাতালে যান বধূর বাবা। অগ্নিদগ্ধ মেয়ে তখন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে বাঁকুড়া মেডিক্যালে স্থানান্তরিত করা হয়। মৃত্যুঞ্জয়বাবু ২০ জুন বিষ্ণুপুর থানায় তাঁর মেয়েকে পুড়িয়ে মারার চক্রান্তের অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের পরেই পুলিশ গ্রেফতার করে অভিযুক্ত সুনীলবরণকে। ২৫ জুন সন্ধ্যাবেলায় বাঁকুড়া মেডিক্যালে মারা যান অনিতা। মৃত্যুকালে তিনি স্বামীর বিরুদ্ধে জবানবন্দি দিয়ে যান। দশ বছর পরে সাক্ষ্য পর্ব শেষে করে বিচারক দোষী সাব্যস্ত করেন এত দিন জামিনে মুক্ত থাকা অভিযুক্ত সুনীলবরণকে। এ দিন সাজা ঘোষণার পরে আদালত চত্বরে অভিযুক্ত অবশ্য কিছু বলতে রাজি হয়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy