তারাপীঠে মন্দির চত্বরে ভিড়। নেই মাস্কটুকুও। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম
পুজোর পরে রাজ্য এবং জেলাতে নতুন করে করোনা সংক্রমণ যখন বৃদ্ধি পাচ্ছে তখন তারাপীঠে চতুর্দশী তিথিতে মাতারা দর্শনার্থীদের ভিড় উপচে পড়ল। সেখানে কোভিড বিধির লেশমাত্র দেখা গেল না। পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রাখা তো দূর অস্ত, অধিকাংশের মুখে মাস্কটুকুও দেখা গেল না। তারামাতা সেবায়েত সমিতির পক্ষ থেকে কেবলমাত্র মাস্ক পরার জন্য মাইকিং করা হলেও অনেক সেবায়েতের মুখেও মাস্ক ছিল না। আবার মন্দির চত্বরে প্রবেশ করার কোনও গেটে স্যানিটাইজার ব্যবহার করা বা মন্দির চত্বরে বিরাম মঞ্চ থেকে নাটমন্দির হোমযজ্ঞাদি করার জায়গা, বামাক্ষ্যাপার মন্দির থেকে শ্মশান চত্বর কোথাও দর্শনার্থীদের মধ্যে পারস্পরিক দূরত্ব বিধি মেনে চলতে দেখা গেল না। মন্দির চত্বরেও কোভিড বিধি মেনে চলার ক্ষেত্রে পুলিশ প্রশাসনের নজরদারিও লক্ষ্য করা গেল না। ফলে রাজ্য এবং রাজ্যের বাইরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজার হাজার দর্শনার্থীদের মধ্যে গোপনে কোভিড সংক্রমণের আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে বলেই শঙ্কা প্রকাশ করেছেন জেলার স্বাস্থ্য আধিকারিকদের অনেকে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শুক্লা চতুর্দশী তিথিকে মাতারার আর্বিভাব তিথি হিসাবে ধরা হয়। এই তিথিতে জয়দত্ত সওদাগর মাতারার পুজো দিয়েছিলেন। প্রাচীন রীতি অনুসারে এই তিথিতে মাতারাকে মূল মন্দিরের গর্ভগৃহ থেকে মন্দির চত্বরের বিরাম মঞ্চে ভোরের স্নানের পর থেকে সারা দিন রাখা হয়।
তারামাতা সেবায়েত সমিতির সভাপতি তারাময় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘শুক্লা চতুর্দশী তিথিতে মাতারাকে বিরাম মঞ্চে পশ্চিম দিকে শ্মশানের দিকে মুখ করে রাখা হয়। অনেকে মনে করেন পশ্চিম দিকে বীরভূম সীমানা লাগোয়া ঝাড়খণ্ডের শিকারিপাড়া থানার মলুটিতে মাতারার বোন মৌলিক্ষা মা আছেন। সেই কারণে বছরের এই একটি দিনে বোনের সঙ্গে দেখা করতে মাতারাকে পশ্চিম দিকে মুখ করে রাখা হয়। আবার এই দিনই তারাপীঠ সংলগ্ন খরুন, আটলা এই সমস্ত গ্রামের পারিবারিক দুর্গাপুজোর কর্তারা দুর্গাপুজোর পরে মাতারার পুজোর জন্য মানসিক নিবেদন করেন। প্রাচীন রীতি অনুযায়ী এই দিনই মাতারাকে স্পর্শ করে দর্শনার্থীরা পুজো নিবেদন করার সুযোগ পান। সেই কারণে সারা দিন মাতারার পুজো দেওয়ার জন্য দর্শনার্থীদের ভিড় হয়। কিন্তু গত দু’বছর ধরে করোনা অতিমারির কারণে তারাপীঠ মন্দিরে দর্শনার্থীদের ভিড় এড়াতে সংক্রমণ ঠেকাতে বিভিন্ন সময় মন্দিরে দর্শনার্থীদের প্রবেশ বন্ধ রাখা হয়। গত বছর চতুর্দশী তিথিতেও দূরত্ব বিধি বজায় রাখা সহ কোভিড বিধি মেনে চলার জন্য দর্শনার্থীদের অনেক বেশি সচেতন করা হয়েছিল।
মঙ্গলবার ভোর থেকেই মন্দির চত্বরে দর্শনার্থীদের ভিড় উপচে পড়েছে। সকাল এগারোটার সময় মন্দির চত্বরে গিয়ে দেখা গেল দর্শনার্থীদের প্রবেশের জন্য কোনও রকম স্যানিটাইজার ব্যবহার করা হচ্ছে না। উপস্থিত দর্শনার্থীরা মাতারার পুজো দেওয়ার জন্য পরস্পর গায়ে গা ঠেকিয়ে পুজো দিচ্ছেন। অধিকাংশ দর্শনার্থীদের মুখে মাস্ক নেই, সেবায়েতদেরও অনেকে মাস্ক বিহীন অবস্থায় পুজোর ব্যবস্থা করছেন।
তারাপীঠ মন্দিরে কোভিড বিধি না মানা প্রসঙ্গে তারাপীঠ মন্দির সেবায়েত সমিতির সভাপতি বলেন, ‘‘মন্দির কমিটি থেকে মাস্ক পরে মন্দিরে প্রবেশ করার জন্য একাধিকবার মাইকিং করা হলেও দর্শনার্থীদের মধ্যে সচেতনতার অভাব থাকলে আমাদের করার কী আছে? ভিড় নিয়ন্ত্রণ করার জন্য পুলিশ প্রশাসন সাধ্যমতো ব্যবস্থা নিয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy