Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪

খবর পেয়েও বাড়িতে ঢোকেননি হৃদয় ঘোষ

ঘটনার সময়ে তিনি বাড়িতে ছিলেন না। কোথায় ছিলেন, খবর পেয়ে ঠিক কী কী করেন— তার পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ দিলেন হৃদয় ঘোষ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
সিউড়ি শেষ আপডেট: ২৯ জুন ২০১৬ ০১:০৫
Share: Save:

ঘটনার সময়ে তিনি বাড়িতে ছিলেন না। কোথায় ছিলেন, খবর পেয়ে ঠিক কী কী করেন— তার পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ দিলেন হৃদয় ঘোষ।

মঙ্গলবার সিউড়ি আদালতে পাড়ুইয়ের বাঁধনবগ্রামে সাগর ঘোষ হত্যা মামলায় সাক্ষ্য দিতে এসে এ সব তথ্য দিলেন নিহতের ছেলে হৃদয়। সরকারি আইনজীবী রণজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়েছেন, জেলা জজ সুপ্রতীম ভট্টাচার্যের এজলাসে মামলার সক্ষ্যদান চলছে। পরবর্তী সাক্ষ্যদানের জন্য আগামী ২৮ জুলাই থেকে ১ অগস্ট পর্যন্ত দিন ধার্য করেছেন বিচারক। গত ২৭ মে সাক্ষ্য দেওয়া শুরু করেছিলেন হৃদয়। তাঁর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে এ দিন।

২০১৩ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে খুন হন সাগরবাবু। হাইকোর্টের নির্দেশে ওই হত্যাকাণ্ডের তদন্ত করছে বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট)। তৃণমূল নেতা শেখ মুস্তফা-সহ আট জনের বিরুদ্ধে চার্জশিটও জমা পড়েছে। মামলায় এর আগে নিহতের স্ত্রী সরস্বতীদেবী, পূত্রবধূ শিবানীদেবী, ভাগ্নে সুমন ঘোষ এবং এক পড়শির সাক্ষ্য নিয়েছে আদালত। সাক্ষীরা ধৃত অভিযুক্তদের চিহ্নিতও করেছেন।

গত দিনের সাক্ষ্যে হৃদয় দাবি করেছিলেন, হামলার আশঙ্কায় তিনি ঘটনার দিন নিজের বাড়িতে না থেকে গ্রামেই এক মাসতুতো দিদির বাড়িতে ছিলেন। সেখানেই রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ ভাগ্নে সুমনের মোবাইলে তাঁর বাবার গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর আসে। এ দিন হৃদয় সরকারি আইনজীবীর প্রশ্নের উত্তরে বলেন, ‘‘ওই ফোন পাওয়ার পরে নিমাই দাসও (স্থানীয় নেতা) ফোন করে একই খবর দিয়েছিলেন। তিনি পারলে একটি গাড়ি ডেকে আনার পরামর্শ দিয়েছিলেন। বহু চেষ্টা করেও গাড়ির ব্যবস্থা করতে পারিনি।’’ ভাগ্নে এবং তার এক বন্ধুকে নিয়ে বাড়ির দিকে ছুটে যান। পুলিশ গোটা বাড়ি ঘিরে রাখায় এবং তাঁর বিরুদ্ধে বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা থাকায় তিনি আর ভিতরে ঢোকার সাহস পাননি বলে হৃদয়বাবু দাবি করেছেন। তত ক্ষণে পুলিশের গাড়িতেই সাগরবাবুকে বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। হৃদয় আদালতকে আরও বলেন, ‘‘পাড়ুই থানার ওসি ও মেজবাবুর সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছিল। নিরাপত্তার কথা ভেবে দিদির বাড়িতে ফিরে যাই। সেখান থেকে খঞ্জনপুরে যাই। তার পরে সাইকেল নিয়ে বোলপুরে আর এক বোনের বাড়ি যাই। তখনই জানতে পারি বাবাকে বর্ধমান মেডিক্যালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।’’ পরের দিন সকাল ১০টায় তিনি যখন বর্ধমানে যান, তখন সাগরবাবুর অস্ত্রোপচার চলছে। সন্ধায় বোলপুর হয়ে পাপুরি গ্রামে গিয়ে হৃদয় রাত কাটান। পরের দিন টিভিতে বাবার মৃত্যুর খবর পান।

এ দিন হৃদয় আদালতে জানিয়েছেন, তিনি মা ও স্ত্রীর কাছে শুনেছেন ভগীরথ, সুব্রত, আসগর, ইউনুস ও শেখ চাঁদরুলরা তাঁর বাবাকে খুন করেছে। হৃদয়ের স্ত্রী শিবানীদেবীও চার্জশিটে নাম না থাকা এই চাঁদরুলের নাম আদালতকে নিজের সাক্ষ্যে জানিয়েছিলেন। সরকারি আইনজীবী জানিয়েছেন, চার্জশিটে নাম না থাকা আর এক জনের নাম হৃদয় এ দিন নিয়েছেন। অভিযুক্তেরা এ দিনও দাবি করেন, তাঁরা নিরপরাধ। মিথ্যা মামলায় তাঁদের ফাঁসানো হচ্ছে।

অন্য বিষয়গুলি:

sagar ghosh murder
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE