ঝালাপালা: এই মাইক বাজিয়েই সচেতন করা হয়। নিজস্ব চিত্র
মাস কাবার করে হঠাৎ জেগে উঠল বিষ্ণুপুর জেলা হাসপাতাল। সোমবার বেলা তখন ১১টা। মাইকে তারস্বরে রক্তদানের আহ্বান। গমগম করে উঠল হাসপাতাল। পিলে চমকে উঠল রোগীদের। কান্না জুড়ল নবজাতকেরা।
ব্যাপারটা কী? ১ অক্টোবর ছিল জাতীয় স্বেচ্ছা রক্তদান দিবস। সোমবার, নভেম্বরের ৬ তারিখ তার শোভাযাত্রা হচ্ছে জেলা হাসপাতাল চত্বরে। ছিল ট্যাবলো। পা মিলিয়েছেন শহরের বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্য, বিষ্ণুপুর থানার সিভিক ভল্যান্টিয়ার, হাসপাতালের কর্মী এবং আধিকারিকেরা। সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের সামনে থেকে শুরু হয়ে অসুস্থ নবযাতক ইউনিট, জেলা হাসপাতলের জরুরি বিভাগের সামনে দিয়ে পুরো হাসপাতাল চত্বর ঘুরে যাত্রা শেষ হল ব্লাড ব্যাঙ্কের সামনে। চারচাকা গাড়ির উপরে বাঁধা মাইকের শব্দে ততক্ষণে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন রোগীরা। তাঁদেরই একজন বলেন, ‘‘রোগীদেরই তো রক্ত দরকার হয়। রক্তদান করতে বলে তাঁদের কানের মাথা খাওয়া হচ্ছে কেন? এই ব্যাপারটা তো হাসপাতালের বাইরে করার কথা।’’ অসুস্থ পরিজনকে দেখতে হাসপাতালে এসেছিলেন অনিমেষ ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘এটা মাছের বাজার না হাসপাতাল? অন্যকে সচেতন করার আগে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সচেতন হওয়া দরকার। পুলিশকেও বলিহারি। মিছিলে হাঁটল, কিন্তু মাইকটা বন্ধ করতে বলল না।’’
এই সমস্ত মিটিয়ে হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কের বিরাম ভবনে সচেতনতা নিয়ে একটি আলোচনাসভাও হয় এ দিন। রক্তদানের সঙ্গে যুক্ত থাকা একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সম্পাদিকা মুকুলিকা রায় বলেন, ‘‘আসলে সমস্তটাই লোক দেখানো। দায়ে সারা। আলোচনাসভা আর মিছিলে মাথার গুনতিটাই ওঁদের দরকার ছিল। কেউ আদৌ সচেতন হলেন কি না জানি না, তবে রোগীদের একচোট ভোগান্তি হল।’’
ভুল যে হয়েছে সেটা মানছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বিষ্ণুপুর জেলা হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কের দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত মেডিক্যাল অফিসার রামপ্রসাদ মণ্ডল বলেন, ‘‘সত্যিই খেয়াল ছিল না। এ ভুল আর হবে না।’’ হাসপাতাসের সুপার তথা বিষ্ণুপুর স্বাস্থ্যজেলার এসিএমওএইচ পৃথ্বীশ আকুলি বলেন, ‘‘ভুল হওয়ার আগে সতর্ক হওয়া উচিত ছিল। আসলে পদযাত্রার জন্য লোক ডাকাডাকি করতে হয়েছিল তো, সে জন্যই মাইক আনা হয়েছিল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy