রবিবার সকালে আকাশ অন্ধকার করে ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি। সিউড়িতে। ছবি: তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়
রবিবার সকাল থেকেই আকাশ ছেয়ে ছিল কালো মেঘে। সকাল সাড়ে আটটা থেকে মুষলধারে নামে বৃষ্টি, সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়া। দীর্ঘ সময় একটানা ঝড়-বৃষ্টিতে তাপমাত্রা উপভোগ্য হয়েছে। ছুটির দিনে প্রায় বর্ষার আবহাওয়ায় অনেকের বাড়িতে পদ জমেছে। তবে ঘণ্টাখানেকের ঝড়বৃষ্টিতে ফসলের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে আশঙ্কা। বিশেষ করে সিউড়ি মহকুমায়।
গোটা জেলা জুড়েই বৃষ্টি হয়েছে। বোলপুরে আবার শিলাবৃষ্টি হয়েছে। তবে সিউড়ি মহকুমার বিভিন্ন অংশে বৃষ্টির পরিমাণ বেশি ছিল। বৃষ্টিপাতের সঠিক পরিমাপ সোমবার সকালের আগে না পেলেও কৃষি ও আবহাওয়া দফতরের অনুমান অন্তত ২৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে সিউড়ি মহকুমায়। অনেক কৃষি খেতে জল জমেছে। ক্ষতির পরিমাণ কত শতাংশ, সেটাও জানা যায় নি। কৃষি, উদ্যানপালন দফতরের আধিকারিক ও চাষিদের কথায়, ‘‘ফসলের ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা যথেষ্টই।’’
কৃষি দফতর ও চাষিদের মতে, আনাজ চাষ কমবেশি জেলার সব জায়গায় করা হলেও খয়রাশোলের অজয় ও হিংলো নদের মধ্যবর্তী চাপলা, মুক্তিনগর, পারুলবোনা, শাল বা ময়ূরাক্ষ্মীর মতো নদী ঘেঁষা গ্রাম পলপাই, পাইগড়া, দুবরাজপুরের লোবা, সিউড়ির তিলপাড়া খটঙ্গা এলাকায় বেশি হয়ে থাকে। ওই এলাকার চাষিদের কথায়, ‘‘লকডাউনের জেরে এমনিতেই আনাজের দর নেই তেমন। তার উপরে ঝড়বৃষ্টিতে ঝিঙে, শসা, তরমুজ, কুমড়োর মতো লতানে ফসল, লঙ্কা, করলা, তিল, বাদাম এমনকি বোরো চাষে যথেষ্ট ক্ষতি করছে।’’
খয়রাশোলের মুক্তিনগর গ্রামের কমল হালদার, সুকুমার ঢালি, চাপলা গ্রামের বাপি প্রামাণিক, বালিতার চাষি ভুবন লাহা,পারুলবোনার মেঘলাল মণ্ডলেরা বলছেন, “আমাদের গ্রামগুলি থেকে শুধু খয়রাশোল বা দুবরাজপুর নয়, বর্ধমানের পাণ্ডবেশ্বর, হরিপুর, আসানসোল, দুর্গাপুর-সহ বিভিন্ন জায়গায় প্রতিদিন বহু আনাজ সরবরাহ করা হয়। করোনার জেরে আন্তঃজেলা সীমান্ত সিল থাকায় এমনিতেই মার খাচ্ছিলাম।
শুক্রবার ব্যাপক শিলাবৃষ্টি হয়েছিল। রবিবার সকালের তুমুল বৃষ্টিতে প্রচুর ক্ষতি হয়ে গেল।’’ চাষিরা জানাচ্ছেন, মাচায় থাকায় পটলের তেমন ক্ষতি না হলেও মাঠে লঙ্কা, কুমড়ো-শসা-ঝিঙে চাষে ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতি হয়েছে তরমুজেরও। চাষিরা জানাচ্ছেন, এই এলাকায় প্রচুর বাদাম চাষ হয়ে থাকে। এই সময় বাদামের ফুল আসে। মাঠে জল জমলে সেই ফুল ঝরে যাবে।
রবিবার সকালের বৃষ্টিতে ফসলের ক্ষতির কথা মানছেন সিউড়ির তিলপাড়া অঞ্চলের চাষি বিনয় গড়াই, সুকুমার গড়াই, খটঙ্গা অঞ্চলের পাণ্ডু মুর্মুর মতো আনাজ চাষিরাও। তাঁরা বলছেন, ‘‘কেউ দু’দিন, কেউ তিন দিন আগেই জমিতে সেচ দিয়েছিলাম। ফলে জলের চাহিদা সে ভাবে ছিল না। রবিবার সকালে যে হারে বৃষ্টি হয়েছে, তাতে লাউ কুমড়ো উচ্ছে বরবটি পটল চাষে খুব ক্ষতি হল। ক্ষতির পরিমাণ বাড়বে রোদ উঠলেই। তখন গাছ নেতিয়ে যাবে ফলন মার খাবে।’’
জেলা উদ্যানপালন দফতরের এক কর্তা বলছেন, ‘‘বৃষ্টিতে লতানে ফললের ক্ষতি হবে এটা স্বাভাবিক। তবে জমিতে জল যদি না দাঁড়ায় এবং ফসল যদি মাচায় থাকে। তাহলে ক্ষতি বিশেষ হবে না। ’’ রামপুরহাটের আয়াস গ্রামের আনাজ চাষি নবকুমার মণ্ডল বলছেন, ‘‘রামপুরহাটে যে পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে তাতে ক্ষতি বিশেষ হয়নি। তবে শিলা বৃষ্টি হলে ক্ষতির পরিমাণ বেশি হত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy