ফিরদৌসিকে দেওয়া হল কার্ড। নিজস্ব চিত্র
কথা বলতে পারেন না। দাঁড়াতে বা হাত দিয়ে কিছু ভাল করে ধরতে গেলেও কষ্ট হয় ফিরদৌসি খাতুনের। সোমবার, জাতীয় ভোটার দিবসের দিন জেলাশাসক যখন তাঁর দিকে যত্নে এগিয়ে দেন তাঁর ভোটার কার্ড।
এ দিন যে তাঁকে নাগরিক হিসাবে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হল তাতে খুশি সদ্য আঠারো ছোঁয়া বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ওই তরুণী। মুখে বলতে না পারলেও আকার ইঙ্গিতে সেকথা জেলাশাসককে স্পষ্ট বুঝিয়ে দিতে পেরেছেন সিউড়ি ১ ব্লকের কড়িধ্যা বিদ্যানিকেতনের অষ্টম শ্রেণির ওই ছাত্রী। প্রশাসন নতুন ভোটার হিসেবে তাঁদের মেয়েকে এ ভাবে গুরুত্ব দেওয়ায় খুশি ওঁর বাবা সাদেক আলি খান ও মা নয়নতারা বেগম দু’জনেই।
কড়িধ্যা কালীপুরে একটি স্টিলের ফার্নিচার তৈরির কারখানা রয়েছে সাদেকের। মোটামুটি স্বচ্ছল পরিবার। ওই দম্পতির তিন কন্যাসন্তান। কিন্তু বড় মেয়ের জন্মের পর থেকেই সাদেক আলি এবং নয়নতারা বুঝে যান আর পাঁচটা সন্তানের মতো নয় তাঁদের বড় সন্তান। সেরিব্রাল পলসি আক্রান্ত মেয়ে পুরোপুরি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে পারবে না, চিকিৎসকদের এমন কথা শোনার পরও চেষ্টা করে গিয়েছেন মেয়েকে যতটা সম্ভব খুশি রাখতে, স্বাভাবিক রাখতে। সাদেক বলছেন, ‘‘সাধ্যমতো চিকিৎসা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। কিন্তু আরও চিকিৎসার প্রয়োজন। নানা বাধা সত্ত্বেও স্কুলে ভর্তি করেছি মেয়েকে।’’ কিছু দিন আগে পর্যন্ত জিভ নাড়াতেই পারতেন না ফিরদৌসি। বছর দুই আগে অস্ত্রোপচারের পর দু একটি শব্দ বলতে পারেন তিনি।
তাঁর বয়স আঠেরো ছুঁতেই ভোটার তালিকায় নাম তোলাতে বাড়িতেই হাজির হয়েছিল প্রশাসন। মানবিক প্রকল্পের আওতায় এসেছেন তিনি। মা নয়নতারা বলছেন, ‘‘ও শারীরিক ভাবে দুর্বল। কথা বলতে না পারলেও মস্তিষ্ক কাজ করে। নির্দেশ বুঝতে পারে মেয়ে। আবেগ আছে। তাই ভোটার কার্ড পেয়ে খুশি।’’ জেলাশাসক বিজয় ভারতী পরে যখন তাঁকে ভোটার কার্ড দেখাতে বলেন, সেটা মায়ের পার্স থেকে বের করে দেখাতে অসুবিধা হয়নি ফিরদৌসির।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy