Advertisement
২৮ ডিসেম্বর ২০২৪
Rabindranath Tagore

Rabindranath Tagore:ফের সুরে বাজছে রবীন্দ্রনাথের পিয়ানো

পরবর্তী সময়ে যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে শতাব্দী-প্রাচীন পিয়ানোটি প্রায় নষ্ট হতে বসেছিল।

স্মৃতি: সেই পিয়ানো। নিজস্ব চিত্র

স্মৃতি: সেই পিয়ানো। নিজস্ব চিত্র

প্রশান্ত পাল 
শেষ আপডেট: ২৫ জুন ২০২২ ০৫:৩৭
Share: Save:

দীর্ঘদিনের নীরবতা কাটিয়ে মুখর হয়ে উঠল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্পর্শধন্য ঐতিহ্যবাহী পিয়ানো। সৌজন্যে, পুরুলিয়া রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যাপীঠের তিন প্রাক্তনী।

বিদ্যাপীঠ সূত্রে জানা যায়, ১৯১৯ বা ১৯২৩ নাগাদ রবীন্দ্রনাথ শিলং পাহাড়ে বেড়াতে গিয়ে যে পিয়ানোটি বাজিয়েছিলেন, তা পরবর্তী সময়ে বিশিষ্ট রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী সন্তোষকুমার সেনগুপ্তের কাছে আসে। তাঁর সঙ্গে বিশেষ হৃদ্যতা ছিল পুরুলিয়া রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যাপীঠের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক স্বামী হিরন্ময়ানন্দের। ষাটের দশকের শেষ পর্বে পিয়ানোটি বিদ্যাপীঠকে উপহার দেন তিনি।

বিদ্যাপীঠের বর্তমান সম্পাদক স্বামী শিবপ্রদানন্দ বলেন, “ওই পিয়ানোটি সন্তোষকুমার সেনগুপ্তের বিদ্যাপীঠকে উপহার দেওয়ার পিছনে সম্ভবত অন্য কারণও ছিল। তত দিনে পুরুলিয়া বিদ্যাপীঠে নিবেদিতা কলামন্দির আত্মপ্রকাশ করেছে। সেই কলামন্দিরে তখন বেনারস ঘরানার প্রবীণ সঙ্গীত বিশারদ তুলসীদাস ভট্টাচার্য শাস্ত্রীয় সঙ্গীত ও ভজনের তালিম দিতেন। পাশাপাশি, বিশ্বভারতীর সঙ্গীত ভবনের অধ্যক্ষ শৈলজারঞ্জন মজুমদার ও রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছাত্র সব্যসাচী গুপ্ত ছাত্রদের রবীন্দ্রসঙ্গীত শেখাতেন। বিশিষ্ট শিক্ষক সুকেশ জানাও রবীন্দ্রসঙ্গীতের পাঠ দিতেন। এ ছাড়া, তবলা, পাখোয়াজ, এস্রাজও সেতার শেখানোরও বিশেষ আয়োজন ছিল।”

বিদ্যাপীঠ সূত্রে জানা যায়, ১৯৬৫-৬৬ নাগাদ পিয়ানোটি বিদ্যাপীঠে আসে। ১৯৬৭-তে বেলুড় মঠ কর্তৃপক্ষের নির্দেশে স্বামী হিরন্ময়ানন্দ, স্বামী চন্দ্রানন্দের হাতে বিদ্যাপীঠের সম্পাদকের দায়িত্ব অর্পণ করেন। স্বামী শিবপ্রদানন্দের কথায়, “সম্ভবত নিবেদিতা কলামন্দিরের এমন আবহ সন্তোষকুমার সেনগুপ্তকে আরও বেশি করে পিয়ানোটি উপহার দিতে প্রাণিত করেছিল। তাই তিনি বিদ্যাপীঠ কর্তৃপক্ষকে পিয়ানোটি অর্পণ করে নিশ্চিন্ত বোধ করেছিলেন।”

তবে পরবর্তী সময়ে যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে শতাব্দী-প্রাচীন পিয়ানোটি প্রায় নষ্ট হতে বসেছিল। প্রায় আড়াই বছর আগে, বিদ্যাপীঠের তিন প্রাক্তনী সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়, সঞ্জয় চট্টোপাধ্যায় ও তাপস নিয়োগী পিয়ানোটি পুনরায় ব্যবহারের উপযুক্ত করে তুলতে উদ্যোগী হন। সম্পাদক জানান, কলকাতার মার্কাস স্ট্রিটের একটি বাদ্যযন্ত্রের প্রতিষ্ঠানের সৌজন্যে পিয়ানোটি সুর ফিরে পেয়েছে। তার পরে, গত ১৯ জুন পিয়ানোটি ফের বিদ্যাপীঠে তার পুরনো জায়গা, নিবেদিতা কলামন্দিরে স্থান পেয়েছে। সঞ্জয় বলেন, “বিদ্যাপীঠে পড়তে দেখতাম, পিয়ানোটি কাপড়ে ঢাকা থাকত। বর্তমান সম্পাদক স্বামী শিবাপ্রদানন্দ দায়িত্ব নেওয়ার পরে, উনিই সেটি মেরামত করতে আগ্রহ দেখিয়েছিলেন। ওঁর ইচ্ছাই আমরা পূরণ করেছি।” তাঁর সংযোজন, “প্রাচীন পিয়ানোটি সারাতে বেশ বেগ পেতে হয়েছিল। তবে শেষমেষ তা সুর ফিরে পেয়ে কলামন্দিরে ফিরেছে, এটাই বড় পাওনা।”

ইতিহাস বিজড়িত পিয়ানোটি বিদ্যাপীঠের ছাত্র ও শিক্ষকদের ঐতিহ্যের সঙ্গে জুড়ে রাখার পাশাপাশি, সুরের অনন্য ধারায় তাঁদের বেঁধে রাখবে, আশা বিদ্যাপীঠ কর্তৃপক্ষের।

অন্য বিষয়গুলি:

Rabindranath Tagore Ramkrishna mission
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy