তিনটি গাছ কাটার পর খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে গাছ কাটা বন্ধ করল বনকর্মীরা । বিষ্ণুপুর রবীন্দ্রস্ট্যাচু মোড় । ছবিঃ অভিজিৎ অধিকারী ।
বন দফতরের অনুমতি ছাড়াই গাছ কাটা হয়েছে, এমন অভিযোগে দানা বেঁধেছে বিতর্ক। শুক্রবার সকালের ঘটনায় শোরগোল পড়ে বিষ্ণুপুরের রবীন্দ্র স্ট্যাচু মোড় এলাকায়। অনেক আগেই রাস্তা সম্প্রসারণ ও বৈদ্যুতিক খুঁটি স্থানান্তরের জন্য বন দফতরে গাছ কাটার আবেদন জমা দেওয়া হয়েছিল বলে দাবি পুরসভার। এ দিকে বন দফতর জানাচ্ছে, গাছ কাটার বিষয়ে কোনও অনুমতি তারা দেয়নি। বিনা অনুমতিতেই বিষ্ণুপুর শহরের রবীন্দ্র স্ট্যাচু মোড়ে তিনটি বড় গাছ কেটে ফেলা হয়েছে বলে দাবি তাদের।
ঘটনা হল রবীন্দ্র স্ট্যাচু মোড়কে নতুন করে সাজাতে প্রথম পর্যায়ের কাজ শুরু করেছে বিষ্ণুপুর পুরসভা। এলাকার সৌন্দর্যায়নে মাটির নীচে তৈরি হবে প্রশস্ত নিকাশি নালা, অন্যত্র সরাতে হবে বৈদ্যুতিক খুঁটিগুলি। অভিযোগ, সে সব কাজের জন্যই এ দিন সকালে বিষ্ণুপুর মহকুমা শাসকের কার্যালয়ের পাশে পুরনো তিনটি বড় গাছ কাটা শুরু হয়। সেই খবর ছড়িয়ে পড়েছে সমাজমাধ্যমেও। এ দিকে স্থানীয় সূত্রে খবর পেয়ে গাছ কাটা আটকাতে বিষ্ণুপুর রেঞ্জের তরফে তড়িঘড়ি এলাকায় পৌঁছন চৌকান বিট আধিকারিক ও বন কর্মীরা। আধিকারিকদের গাছ কাটার অনুমতি দেখাতে পারেননি বরাতপ্রাপ্ত ঠিকাদার কার্তিক লোহার। স্থানীয় কাজল রায়, উজ্জ্বল বাউরির মতো অনেকেই বলেন, “সকালে এসে দেখছি গাছ কাটা হচ্ছে। ভাবলাম নিশ্চয়ই অনুমতি নিয়ে কাটছে। তারপরে দেখি বন দফতরের কর্মীরা এসে গাছ কাটা বন্ধ করে দিল। আমরাও চাই গাছগুলি রেখে উন্নয়ন হোক।” ভারপ্রাপ্ত ঠিকাদার কার্তিক বলেন, “পুরসভা থেকে ছাতিম-সহ মোট নয়টি গাছ কাটার কথা ছিল। ডালপালা আমার থাকবে, বাকিটা পুরসভার। দু’টি নিম ও একটি শিরিষ গাছ কাটা হয়েছে। বন দফতর থেকে এসে গাছ কাটা বন্ধ করে দিল। আমি কী করে জানব অনুমতি নেওয়া হয়নি!”
তবে এ নিয়ে বিষ্ণুপুর পুরসভার পুরপ্রধান গৌতম গোস্বামীর দাবি, “এলাকার উন্নয়নের জন্য বহু দিন ধরে ধাপে ধাপে পরিকল্পনা করা হয়েছে। আমরা নিয়ম অনুযায়ী বন দফতরে আবেদন করেছি। তা ছাড়া এ নিয়ে মহকুমা শাসকের দফতরে একটি বৈঠক হয়েছিল এবং সেখানে ছিলেন বনাধিকারিকেরাও।” পুরপ্রধানের যুক্তি উড়িয়ে বিষ্ণুপুর রেঞ্জ আধিকারিক তপোব্রত রায় জানান, রবীন্দ্র স্ট্যাচু মোড়ে রাস্তা সম্প্রসারণ ও সৌন্দার্যায়নের জন্য পাঁচটি গাছ কাটার আবেদন করে পুরসভা। অনুমতি দিতে আরও কিছু কাগজপত্র লাগবে বলে জানানো হয়েছে। গাছ কাটার অনুমতি এখনও দেওয়া হয়নি।
খবর ছড়াতেই শাসক দলকে নিশানা করে বিজেপির বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলার মুখপাত্র দেবপ্রিয় বিশ্বাস বলেন, “উন্নয়নের আড়ালে প্রভাবশালীদের স্বার্থ রক্ষার তোড়জোড়। মানুষ তা বুঝতে পেরেছে বলেই এই ভোটে শহর তৃণমূল ধরাশায়ী হল। আজ পুরসভার গাছ কাটা রুখতে হচ্ছে বন দফতরকে। এর চেয়ে লজ্জা তৃণমূলের আর কীহতে পারে?” স্থানীয় সূত্রের দাবি, বাসিন্দাদের অধিকাংশও চাইছেন এলাকার পুরনো গাছগুলি অক্ষত রেখেই শহর সাজানো হোক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy