আশঙ্কা: নদীর উপরে চলছে সেতু নির্মাণের কাজ। হিংলো নদীতে। ছবি: নিজস্ব চিত্র
হিংলো নদীর উপর নির্মীয়মান সেতু একদিকে অনেকটা এগিয়ে এসেছে। এতে নদীর গতিপথই বদলে যাবে। গ্রামবাসীদের আশঙ্কা, বন্যায় ভাসবে গাঁ-ঘর।
জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের ওই সিদ্ধান্তের জন্য এমন আশঙ্কায় ভুগছেন খয়রাশোলের আট দশটি গ্রামের মানুষ। সম্প্রতি জেলা প্রশাসনের সর্বস্তরে নিজেদের আশঙ্কার কথা লিখিতভাবে জানিয়ে হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন সাড়ে তিনশোরও বেশি মানুষ। উদ্বিগ্ন পড়শি গ্রামের মানুষও। বর্ষার সময় হিংলোর ভয়াবহ রূপের কথা ভেবেই দিশেহারা তাঁরা।
শুধু এলাকাবাসী নন আবেদনে সই করেছেন এলাকার বিধায়ক নরেশ বাউড়ি, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অসীমা ধীবর, জেলাপরিষদ, পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য থেকে গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্যরা।
প্রসঙ্গত, রানিগঞ্জ-মোরগ্রাম ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের মধ্যেই খয়রাশোলের শাল ও হিংলো নদীর সঙ্কীর্ণ কজওয়ে দুটি ছিল। প্রতি বর্ষায় দুর্ভোগ। একাধিকবার ভেসে যেত সড়ক। দুর্ভোগ এড়াতে কজওয়ে গুলির পরিবর্তে দুটি সেতু অনুমোদিত হয়েছে দু’বছর আগে। বরাত পেয়েছে কলকাতার একটি ঠিকাদার সংস্থা।
গত বছর অক্টোবরে তারা কাজ শুরু করে। সঙ্কীর্ণ দুটি কজওয়ের পাশ দিয়ে বিকল্প সেতু ও সংযোগকারি রাস্তা তৈরি বর্তমানে মূল সেতু গড়ায় হাত দিয়েছে সংস্থা। শাল নদীতে সেতু নিয়ে কোনও সমস্যা নেই। কিন্তু হিংলো নদীর সেতু ভীমগড়ের দিকে বেশ কিছুটা এগিয়ে যাওয়া নিয়েই চিন্তায় পড়েছেন সিমজুড়ি, ঢোড়েবাজার মুক্তিনগর, রতনপুর, রসিদপুর পাহাড়পুর, বালিতা পারুলবোনা-সহ বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষ।
বাসিন্দারা বলছেন, নদী যতটা প্রশস্ত এবং আগে যতটা পর্যন্ত কজওয়ে ছিল ভীমগড়ের দিক নতুন সেতু গড়ার সময় প্রায় ১৫০ ফুট সেতু এগিয়ে একটি পিলার তোলা হচ্ছে। আপত্তি সেখানেই। এলাকাবাসীর দাবি, যে অংশে নদীর চিহ্নই নেই সেখানে এতটা এগিয়ে পিলার তৈরি করলে বর্ষায় এবং হিংলো জলাধার থেকে জল ছাড়লে কৃষিজমি ভেসে গিয়ে সিমজুড়ি গ্রাম হয়ে জল ঢুকবে। এবং প্লাবিত হবে পরের পরে গ্রাম কেন না অদূরেই রয়েছে অজয় নদ। আমরা চাই সেতুর শেষ দুটি পিলারের মধ্যে মাটি ভরাট করে জল আটকানোর ব্যবস্থা করুক জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ।
মহকুমাশাসক (সিউড়ি সদর মহকুমা) কৌশিক সিংহ বলেন, ‘‘বেশ কয়েকটি গ্রামের পক্ষে থেকে প্রশাসনকে এ কথা জানানোর পরেই জেলাশাসক ও আমার পক্ষ থেকে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষকে চিঠি করে বিষয়টি দেখতে বলা হয়েছে।’’
অন্যদিকে জাতীয় সড়কের ডিভিশন ১২-র এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার নিশিকান্ত সিংহ বলছেন, ‘‘বিষয়টি জেনেছি। জেলা প্রশাসনও আমাকে জানিয়েছে। গ্রামবাসীদের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে ইতিমধ্যে করিগরি বিশেষজ্ঞ টিমকে ভিজিট কতে বলা হয়েছে। ওই রিপোর্ট পেলেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’’
তিনি আশ্বাস দেন, এলাকাবাসীর ক্ষতি হবে এমন কাজ আমরা করব না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy