পুরুলিয়ার আইমনডিতে কানালি জমিতে চলছে চাষ। ছবি: সুজিত মাহাতো
নিম্নচাপের ‘আশীর্বাদে’ বুধ ও বৃহস্পতিবার গড়ে প্রায় ১২১ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে পুরুলিয়া জেলায়। এই বৃষ্টি বিশেষত জেলার ‘বাইদ’ জমিতে আমন চাষে কতটা কার্যকরী হবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে তা চাষে অক্সিজেন জুগিয়েছে, মানছেন জেলা কৃষি দফতরথেকে চাষিরা।
কৃষি দফতরের তথ্য অনুযায়ী, গত ৫ অগস্ট পর্যন্ত জেলার তিন লক্ষ ৪০ হাজার হেক্টর আমন চাষের জমির কম-বেশি সাত হাজার হেক্টরে ধান রোয়ার কাজ হয়েছিল। দ্রুত অন্তত ১০০ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে চাষিরা রোয়ার কাজটুকু সারতে পারবেন, দাবি ছিল কৃষিকর্তাদের। দফতরের হিসেব বলছে, গত দু’দিনে জেলার অর্ধেকের বেশি ব্লকে গড়ে ১০০ মিলিমিটার বা তার কাছাকাছি বৃষ্টি হয়েছে। জেলা কৃষি দফতরের উপ-অধিকর্তা চন্দন পাল বলেন, “বৃষ্টির পরে পুরুলিয়া ২, বলরামপুর ও বরাবাজারের পরিস্থিতি ঘুরে দেখেছি। যা বৃষ্টি হয়েছে, তা চাষিদের ধান রোয়ার কাজে অনেকটা সুবিধা দেবে।”
কৃষি দফতরের হিসেব অনুযায়ী, জেলার আমন চাষের জমির ৫৫ শতাংশ জমি ‘বাইদ’ বা উঁচু জমি। ‘কানালি’ বা সমতল জমির পরিমাণ ৩০ শতাংশ আর বাকিটা ‘বহাল’ বা নিচু জমি। চাষিরা জানাচ্ছেন, নিম্নচাপের বৃষ্টি ‘বহাল’ ও ‘কানালি’ জমির ক্ষেত্রে কার্যকরী হলেও ‘বাইদ’ জমির পক্ষে কতটা কাজে লাগবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। বান্দোয়ানের কুমিরডি গ্রামের চাষি মধুসূদন মাহাতো, বারুডি গ্রামের চাষি ভক্তরঞ্জন মাহাতোরা বলেন, “শুক্রবার বৃষ্টি তেমন হয়নি। তাতেই দেখুন বাইদ জমিতে জল নেই। জল নেমে গিয়েছে। তবে মাটিটা ভিজে রয়েছে। এই জমিতে সামনের সপ্তাহে ফের দু’টো বড় বৃষ্টি দরকার। না হলে তেমন লাভ হবে বলে মনে হয় না।” পুরুলিয়া ১ ব্লকের গাড়াফুসড়ো গ্রামের ঘাসিরাম মাহাতোও জানান, ‘কানালি’ বা ‘বহাল’ জমিতে জল রয়েছে। তবে বাইদ জমির জন্য আরও বৃষ্টি দরকার। এই বৃষ্টিতে ধান রোয়া হয়তো যাবে। কিন্তু দু-এক দিনেই ‘বাইদ’ জমির জল নেমে যাবে।
তবে ‘আফর’ (চারা) রোয়ার সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরে, চারা রোয়া হলে তা ফলনের ক্ষেত্রে কতটা কার্যকরী হবে, তা নিয়ে ধন্দে রয়েছেন চাষিদের একাংশ। কাশীপুরের আহাত্তোড় গ্রামের চাষী প্রমথ মণ্ডলের কথায়, “এখন তো সবই উচ্চ ফলনশীল ধান। নির্দিষ্ট সময়ে রুইতে হয়। বৃষ্টির অভাবে তা করা যায়নি। তাই ধান রোয়া গেলেও ফলন কতটা হবে, তা নিয়ে ভাবনা থেকে যাচ্ছে।” এ পরিস্থিতিতে জেলা কৃষি দফতর জমিতে কম দূরত্বে চারাগুলি লাগাতে পরামর্শ দিচ্ছে। জেলা কৃষি দফতরের সহ-অধিকর্তা (তথ্য) সুশান্ত দত্ত বলেন, “স্বাভাবিক বৃষ্টি হলে চাষিরা কম-বেশি ২০ সেন্টিমিটার × ১৫ সেন্টিমিটার দূরত্বে আফর (চারা) লাগান। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে সেই দূরত্ব সামান্য কমাতে হবে। পাশাপাশি, ধানের গোছাও বড় করতে হবে। তিনটির জায়গায় চারটি করে চারা লাগাতে হবে। পরবর্তী সময়ে কোন সার দিতে হবে, দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করলে বিশেষজ্ঞেরা পরামর্শ দেবেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy