জলে ভরেছে ধানের জমি। বৃহস্পতিবার লাভপুরে। নিজস্ব চিত্র
দিন তিনেক আগেই জমিতে কুঁয়ে নদীর জল ঢুকতে শুরু করেছিল। সেই জল তো নামেইনি বরং ক্রমেই জল বেড়ে আরও ধানে ভরা জমি। পুজোর মুখে তাই হাহাকার নেমে এসেছে লাভপুরের বহু গ্রামে।
প্রশাসন এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে , লাভপুরের বুক চিরে বয়ে গিয়েছে কুঁয়ে নদী। প্রায় প্রতি বছর নদীতে জল বাড়লেই বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় এখানকার বেশ কিছু গ্রামে। বিশেষত ঠিবা পঞ্চায়েত এলাকায়। এক দিকে কুঁয়ে, অন্য দিকে উজানে আসা লাঙ্গলহাটা বিলের জলে তলিয়ে যায় বহু গ্রাম। ভেসে যায় ঘর গৃহস্থালি, এমনকি মানুষও। তলিয়ে যায় জমির ফসল। এ বারে এখনও পর্যন্ত কোনও গ্রামে জল না ঢুকলেও তলিয়ে গিয়েছে বহু ধানের ভরা জমি। এর ফলে বহু চাষি পরিবারে হাহাকার নেমে এসেছে।
বিঘে প্রতি ৭-৮ হাজার টাকা খরচ করে পাঁচ বিঘে জমিতে আউশ ধানের চাষ করেছিলেন হরিপুরের মানস মণ্ডল। একই পরিমাণ জমিতে ধানের চাষ ছিল কাঁদরকুলোর চণ্ডীচরণ ঘোষের। দু'জনের অর্ধেকের বেশি জমিতে ধানের থোড় চলে এসেছিল। বিঘে প্রতি ৮-৯ কুইন্টাল হারে ফলন পাওয়ার কথা। দিন দশেকের মধ্যে ধান কেটে পুজোর বাজার করার কথা ভেবে রেখেছিলেন তাঁরা। কিন্তু নিন্মচাপের বৃষ্টিতে সেই আশায় জল ঢেলে গিয়েছে। থোড় হয়ে আসা বিঘে তিনেক করে জমি তিন দিন ধরে জলে ডুবে রয়েছে। তাঁরা বলেন, ‘‘এর পর জল নামলে ধানগাছ পচে শেষ হয়ে যাবে। এখন কী করে পুজোর বাজার করব, আর কী করে পেটের ভাতের জোগাড় হবে ভেবে পাচ্ছি না।’’
বলরামপুরের আলিমুদ্দিন শেখ, হাসিবুল শেখরা বিঘে সাতেক জমিতে ধান চাষ করেছিলেন। তার মধ্যে বিঘে চারেক করে জমির ধান তলিয়ে গিয়েছে। তাঁরা বলেন, ‘‘কৃষিঋণ নিয়ে ধান চাষ করেছিলাম। ধান বিক্রি করে আমরা রবিচাষের খরচ জোগাড় করি। এখন কী করে রবিচাষ হবে বা কী করেই বা ঋণ পরিশোধ করব তা ভেবে পাচ্ছি না।’’
সংশ্লিষ্ট ঠিবা পঞ্চায়েতের প্রধান নুরসিয়া খাতুন বলেন, ‘‘ধান তলিয়ে যাওয়া এলাকার বহু চাষি ক্ষতির মুখে পড়েছেন। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের গোচরে আনা হয়েছে।’’ লাভপুর ব্লক সহ কৃষি অধিকর্তা কাজল সাহা বলেন, ‘‘ব্লকে প্রায় ২২,৫০০ হেক্টর জমিতে আউশ এবং আমন ধানের চাষ হয়েছিল। তার মধ্যে প্রায় ৩০০ হেক্টর জমির ধান জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। ওই সব জমির ধানের ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।’’ লাভপুরের বিধায়ক অভিজিৎ সিংহ বলেন, ‘‘ক্ষতিগ্রস্ত চাষিরা যাতে সরকারি নিয়ম মেনে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ পান, তা দেখতে ইতিমধ্যেই জেলাশাসক এবং জেলা কৃষি দফতরকে বলেছি। জেলাশাসক এলাকা পরিদর্শন করেও গিয়েছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy