Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Kosi Forest

ফিরে এসে আস্তানা কোশির জঙ্গলে 

প্রত্যাবর্তন: বিষ্ণুপুর-আরামবাগ রাজ্য সড়ক পেরোচ্ছে হাতির দল। মোলকারি গ্রামের কাছে শুক্রবার সকালে। ছবি: শুভ্র মিত্র

প্রত্যাবর্তন: বিষ্ণুপুর-আরামবাগ রাজ্য সড়ক পেরোচ্ছে হাতির দল। মোলকারি গ্রামের কাছে শুক্রবার সকালে। ছবি: শুভ্র মিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বিষ্ণুপুর শেষ আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০২০ ০১:২৪
Share: Save:

তাড়িয়ে নিয়ে গিয়েও বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর থেকে সরানো গেল না হাতির দলকে। বৃহস্পতিবার ভোরে দলমার ৩০টি হাতি বিষ্ণুপুরের বনাঞ্চলে ঢুকেছিল। শুক্রবার সকালে সেগুলির ঘাঁটি ছিল আমডহরা বিটের মাঝপাড়া গ্রামের জঙ্গলে। বিকেলে পাওয়া খবরে সেগুলি রয়েছে বাসুদেবপুর বিটের কোশির জঙ্গলে, ধোবা পুকুরের পাশে। লাগোয়া গ্রামগুলির চাষিরা পড়েছেন চিন্তায়।

বাঁকাদহ রেঞ্জের আমডহরার মাঝপাড়া গ্রামের যৌথ বনসুরক্ষা কমিটির সদস্য, বনকর্মী ও এলিফ্যান্ট স্কোয়াডের লোকজন বৃহস্পতিবার বিকেলে আস্থাশোল জঙ্গলে যান। ছড়িয়ে থাকা হাতিগুলিকে জড়ো করে পশ্চিম মেদিনীপুরের দিকে ফেরত পাঠানোর চেষ্টা শুরু হয়। কিন্তু হাতিগুলি উল্টো পথে ছুটতে শুরু করে। চলে যায় আস্থাশোল, বারিশোল, হুলমারা, হাতগাড়া গ্রাম হয়ে। বাগডোবার ভালকির জঙ্গল, সেচ খাল, রেলপথ পার করে পেরিয়ে যায় বিষ্ণুপুর-আরামবাগ রাজ্য সড়ক। পৌঁছয় মোলকারি গ্রামের কাছে। তখন রাত প্রায় সাড়ে ১২টা।

বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, রাত পৌনে ২টো নাগাদ হাতিগুলি ক্ষীরাইবনি গ্রামের কাছে দ্বারকেশ্বরে নামে। কিন্তু উল্টো পাড়ে প্রকাশ, উলিয়াড়া, পানরডাঙর, হিংজুড়ি, পাতলাপুরের মতো গ্রামের মানুষজন ফসল বাঁচাতে সারা রাত মশাল জ্বালিয়ে রেখেছিলেন। বোমা ফাটছিল। ভোরে হাতিগুলি আবার পিছনের পথ ধরে।

শুক্রবার সকালে রাজ্য সড়ক টপকে, আস্তানা করে কোশির জঙ্গলে। লোটিহিড়, নতুনগ্রাম, মুড়াবাড়ি, তিরবঙ্ক, পানশিউলি, বাগডোবা, চুয়াশোল, মড়ারের মতো আশপাশের গ্রামগুলির চাষিরা এখন পড়েছেন চিন্তায়।

তিরবঙ্ক গ্রামের কাছে তিলাশোল বাঁধের ধারে আনাজ চাষ করেছেন নতুনগ্রামের দুলু মুর্মু, সুখুরাম মুর্মুরা। বৃহস্পতিবার রাতে হাতির দল যাওয়ার পথে ফসলের দফারফা করেছে। তাঁরা জানান, বর্ষার বৃষ্টি ঠিক মতো না হওয়ায় ধান চাষ করতে পারেননি। বাঁধের জলে রবি মরসুমে বিন, শশা, বেগুন, টোম্যাটো, বরবটি ফলিয়েছিলেন। দুলু, সুখুরামরা বলেন, ‘‘দাম পাচ্ছিলাম। সেটুকুও গেল। দিনের চালটা কেনারও টাকা নেই। ক্ষতিপুরণের আবেদন অনেক দিনের ব্যাপার। এখন চলবে কী করে?’’ ঘরেও না হানা দেয় হাতি, সেই আশঙ্কায় তটস্থ হয়ে রয়েছেন তাঁরা।

এডিএফও (বিষ্ণুপুর পাঞ্চেত) অনুপম খান জানান, হাতিগুলি যাতে দামোদর নদ টপকাতে না পারে, সেই চেষ্টা করা হচ্ছে। ডিএফও (বিষ্ণুপুর পাঞ্চেত) নীলরতন পাণ্ডা বলেন, ‘‘যাঁদের ফসলের ক্ষতি হয়েছে তাঁরা নিয়ম মেনে ক্ষতিপূরণ পাবেন।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Kosi Forest Elephant
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE