Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪

ছেলের সাক্ষ্যে কারাদণ্ড বাবার

বছর পনেরো আগে সোনামুখীর ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের চৌধুরীপাড়ার বাসিন্দা সাগর বাগদির সঙ্গে বিয়ে হয় স্থানীয় টুকটুকি বাগদির।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
সোনামুখী শেষ আপডেট: ০১ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০২:৫৩
Share: Save:

সন্তানদের প্রতিপালনের জন্য টাকা জমিয়েছিলেন স্ত্রী। সেই টাকা না পেয়ে স্ত্রীর গলায় কাটারির কোপ মারে স্বামী। তিন বছর আগের সেই খুনের মামলায় নাবালক ছেলে-সহ কয়েকজনের সাক্ষ্যে যাবজ্জীবন সাজা হল সোনামুখীর সাগর বাগদির। শুক্রবার বিষ্ণুপুর আদালতের বিচারক আতাউর রহমানের এজলাসে দোষী সাব্যস্ত হয় সে। শনিবার তার যাবজ্জীবন সাজা এবং সেই সঙ্গে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও ছ’মাসের জেল হাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।

বছর পনেরো আগে সোনামুখীর ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের চৌধুরীপাড়ার বাসিন্দা সাগর বাগদির সঙ্গে বিয়ে হয় স্থানীয় টুকটুকি বাগদির। তাঁদের দু’টি সন্তান আছে। সরকার পক্ষের আইনজীবী অঞ্জন গড়াই জানান, ২০১৬ সালের ৮ জুন সকাল সাড়ে ন’টা নাগাদ সাগর পিছন থেকে স্ত্রীর গলায় কাটারির কোপ মারে। সেখানেই লুটিয়ে পড়েন তিনি। পরে সোনামুখী ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত বলে জানান। সাগর তার শাশুড়ি জ্যোৎস্না বাগদির উপরেও হামলা চালিয়েছিল। তিনি অবশ্য বেঁচে গিয়েছেন। জ্যোৎস্নাদেবীর লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে সোনামুখী থানার পুলিশ সে দিনই গ্রেফতার করে সাগরকে। পরের দিনে বিষ্ণুপুর আদালতে তোলা হলে জেল হয়।

সরকার পক্ষের আইনজীবী বলেন, ‘‘সাক্ষ্য-পর্বে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছিল নিহতের নাবালক ছেলের বক্তব্য। সে তার মাকে খুন করার জন্য বাবাকেই দায়ী করেছে।” আর্থিক অনটনে আসামী কোনও আইনজীবী ঠিক করতে পারেনি। লিগাল এইড আসামীর হয়ে সওয়ালের দায়িত্ব দেন ইন্দ্রনারায়ণ বিশ্বাসকে। তিনি বলেন, ‘‘আসামী উচ্চআদালতে যাওয়ার চিন্তা-ভাবনা করছে।’’

এ দিন আদালত চত্বরে দাঁড়িয়ে অপরাধী জামাইয়ের সাজা শুনে কেঁদে ফেলেন নিহতের মা জ্যোৎস্নাদেবী। তিনি দাবি করেন, ‘‘মত্ত জামাই যা রোজগার করত তাই খরচ করে ফেলত। তাই ধান বিক্রির ৩০ হাজার টাকা মেয়ে জমিয়ে রেখেছিল সন্তানদের প্রতিপালনের জন্য। ঘটনার আগের দিন সেই টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছিল জামাই। বাধা দেয় আমার মেয়ে। সেই রোষে পরের দিন সকালে মেয়ে যখন আনাজ কাটছিল, সেই সময়ে তার গলায় কাটারির কোপ মারে জামাই। আমি ছুটে গিয়ে বাধা দিতে গেলে জামাই আমার মাথাতেও কোপ মারতে যায়। হাত দিয়ে আটকে প্রাণে বেঁচেছি। অপরাধীর শাস্তিতে আমরা খুশি। কিন্তু মেয়েটাই চলে গেল।”

অন্য বিষয়গুলি:

Murder Imprisonment Sonamukhi Father And Son
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy