উষ্ণতার জন্য। পুরুলিয়া ২ ব্লকের লেদাবেড়া গ্রামে। —নিজস্ব চিত্র।
বড় দিনের আগে শীতে কাঁপছে পুরুলিয়া ও বাঁকুড়া জেলা। আবহাওয়া দফতরের হিসেবে, মঙ্গলবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল পুরুলিয়ায় ৯.১, বাঁকুড়া ও বিষ্ণুপুরে ৯.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে জেলা কৃষি দফতর জানাচ্ছে, এ দিন পুরুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৭.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। চার দিনের ব্যবধানে তাপমাত্রা এক ধাক্কায় কয়েক ডিগ্রি নেমে যাওয়ায় শীতে জবুথবু দুই জেলার মানুষজন।
পুরুলিয়ার জাহাজপুর কল্যাণ কৃষিবিজ্ঞান কেন্দ্রের আবহাওয়া বিভাগের দায়িত্বে থাকা সুদীপ্ত ঠাকুর বলেন, “উত্তর-পশ্চিম দিকে এই মূহূর্তে কোথাও নিম্নচাপ বা ঘূর্ণাবর্ত নেই। বাধাহীন ভাবে ঠান্ডা বাতাস ঢোকার সুযোগ পাচ্ছে। বাতাসে জলীয় বাষ্পও কম। তাই আচমকা পারদের এই পতন।” আগামী তিন-চার দিন এই পরিস্থিতি থাকবে বলে জানান তিনি।
জেলা কৃষি দফতর জানাচ্ছে, গত এক সপ্তাহ ধরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রার পারদ ৯ ডিগ্রির আশপাশে ঘোরাফেরা করলেও মঙ্গলবার তা অনেকটা নেমে যায়। পারদের এই আচমকা পতনে প্রভাব পড়েছে জনজীবনে। বেলা ১০টার আগে পথঘাটে লোকজনেরও তেমন দেখা মিলছে না। এ দিকে, সন্ধ্যা হতে না হতে কার্যত ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে পথঘাট। বিভিন্ন রুটের সকালের দিকের যাত্রিবাহী বাসগুলিতে হাতেগোনা যাত্রী ওঠানামা করছেন বলে জানান বাসকর্মীরা। তপন কুম্ভকার নামে এক বাসকর্মীর কথায়, “ভোর ৫টার আগে বাসে উঠতে হয়। গত দু-তিন দিন ধরে চার-পাঁচ জন করে যাত্রী নিয়ে বাস ছাড়তে হয়েছে।” আদ্রার বাসিন্দা পেশায় গাড়িচালক সুভাষ সহিস বা পুরুলিয়া জেলা পরিষদের কর্মী মোহন বাউরিরাও জানান, শীতে কার্যত জমে যাওয়ার জোগাড়! পুরুলিয়া শহরের সাহেববাঁধে প্রাতঃভ্রমণে বেরোনো শহরের হুচুকপাড়ার বাসিন্দা সত্যদাস কুণ্ডুর কথায়, “ভোর ৬টায় বেরোই। কিন্তু এতই ঠান্ডা পড়েছে যে সাড়ে ৭টার আগে আসতে পারছি না।”
শীতে তবে মানুষের রসবোধ জমাট বাধেনি। সমাজমাধ্য়মে শীতের দাপট নিয়ে দিনভর চর্চায় থেকেছে নানা মজাদার ছবি বা মিম-ও। শীতে ভিড় বেড়েছে চায়ের দোকানেও। শহর থেকে মফস্সল, সর্বত্র একই ছবি। পুরুলিয়া শহরের ট্যাক্সিস্ট্যান্ডে চায়ের দোকান থাকা সোমনাথ সেন, অমিত সেনদের কথায়, “এতই ঠান্ডা যে উনুন থেকে ছেঁকে খদ্দেরদের চা দিলেও বলছে ঠান্ডা। শীতে বিক্রি অনেক বেড়েছে।”
এ দিকে, বড়দিনের আগেই জমাট ঠান্ডায় ভিড়ে কার্যত ঠাসা বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্রগুলি। অযোধ্যাপাহাড়, গড়পঞ্চকোট, জয়চণ্ডীপাহাড়, বড়ন্তি বা রঞ্জনডি জলাধার, কয়রাবেড়া, মুরগুমা-সহ নানা এলাকায় হোটেল বা অতিথি আবাসে ঠাঁই নেই। পাহাড়ের একটি অতিথি আবাসের মালিক মোহিত লাটা বলেন, “পর্যটকদের ভিড় বাড়তে শুরু করেছে। ইতিমধ্যে যাঁরা আসছেন বা এসেছেন, তাঁরা জেলার এই শীতের কামড় উপভোগ করছেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy