Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪

অধ্যক্ষ তালাবন্দি, হল না ক্যাম্পাসিং

পড়ুয়া ও শিক্ষকদের একাংশ আড়ালে দাবি করেছেন, ঘটনার পিছনে হাত রয়েছে শাসকদলের ছাত্র সংগঠন টিএমসিপির কিছু ছাত্রনেতার।

কলেজের অধ্যক্ষ গৌতম চট্টোপাধ্যায়কে আটকে রাখল ছাত্ররা। নিজস্ব চিত্র

কলেজের অধ্যক্ষ গৌতম চট্টোপাধ্যায়কে আটকে রাখল ছাত্ররা। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
হেতমপুর শেষ আপডেট: ২১ অগস্ট ২০১৯ ০০:২২
Share: Save:

দাবি ঠিক কী, সেটাই স্পষ্ট নয়। অথচ, মুষ্টিমেয় কয়েক জন ছাত্রের ইন্ধনে প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা কলেজের অধ্যক্ষকে তালা বন্ধ করে রাখা হল। করা হল ভাঙচুর। ঘটনার জেরে কলেজ ছেড়ে যেতে বাধ্য হলেন ক্যাম্পাসিং-এর জন্য আসা একটি বাণিজ্যিক সংস্থার প্রতিনিধিরা।

মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১২টা থেকে পৌনে চারটে পর্যন্ত নজিরবিহীন কাণ্ডের সাক্ষী থাকল দুবরাজপুরের হেতমপুর কৃষ্ণচন্দ্র কলেজ। কলেজের অধ্যক্ষ গৌতম চট্টোপাধ্যায় তাঁকে হেনস্থার জন্য দায়ী ছাত্রদের নাম নির্দিষ্ট করে বলতে চাননি। তবে পড়ুয়া ও শিক্ষকদের একাংশ আড়ালে দাবি করেছেন, ঘটনার পিছনে হাত রয়েছে শাসকদলের ছাত্র সংগঠন টিএমসিপির কিছু ছাত্রনেতার। শেষ পর্যন্ত কলেজের প্রাক্তন ছাত্রনেতারা এসে অধ্যক্ষকে মুক্ত করেন।

২০১৭ সালে ছাত্রভর্তি নিয়ে অন্যায় আবদার না মানায় টিএমসিপি কর্মীদের বিরুদ্ধে কলেজের শিক্ষাকর্মীদের হেনস্থার অভিযোগ উঠেছিল। ফের একই ঘটনায় ব্যথিত অধ্যক্ষ বলছেন, ‘‘চাইছি যাতে কলেজ ও ছাত্রছাত্রীদের ভাল হয়। কিন্তু, প্রতি মুহূর্তে নিজেদের
স্বার্থের জন্য কয়েক’টি ছেলে এসে কাজে বাগড়া দিচ্ছে। ক্যাম্পাসিংয়ের জন্য আসা কোম্পানির চলে যাওয়া সকলের জন্যই ভীষণ খারাপ হল। বদনাম হল কলেজের।’’

প্রতিক্রিয়া চেয়ে তৃণমূল ছাত্র সংগঠনের জেলা সভাপতি সুরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়কে বারবার ফোন করা হলেও ধরেননি। ওই কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতি তথা রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ‘‘কোন ছাত্র সংগঠন সেটা বিচার্য নয়। অত্যন্ত নিন্দনীয় ঘটনা। দোষী ছাত্রদের বিরুদ্ধে যাতে ব্যবস্থা নেওয়া হয় সেটা দেখব।’’

কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলার একমাত্র হেতমপুর কলেজে ক্যাম্পাসিং হয়। প্রতি বছরই আইটি সেক্টর, প্রকাশনা সংস্থা, নামকরা বাণিজ্যিক সংস্থায় চাকরি পায় কলেজের বেশ কিছু ছাত্রছাত্রী। চাকরি পেতে কেমন প্রস্তুতির প্রয়োজন, তাও শেখানো হয়। মঙ্গলবারও একটি মাল্টি ন্যাশানাল বাণিজ্যিক সংস্থা ক্যাম্পাসিং ও গ্রুমিং সেশনের জন্য হেতমপুরে আসে। অভিযোগ, সেই সময় কিছু ছাত্র ওই সংস্থার কর্মীদের বেরিয়ে যেতে বাধ্য করে। কলেজের কাঁচের জানালায় ভাঙচুর চালায়। তার পরেই ঝামেলার সূত্রপাত।

অধ্যক্ষের কথায়, ‘‘গুটি কয়েক ছাত্র এসে প্রশ্ন করে, কার অনুমতিতে ওই বাণিজ্যিক সংস্থাকে ডেকেছি। তাদের জানাই, অধ্যক্ষ হিসেবে পড়ুয়াদের ভাল-মন্দ দেখার দায় আমার। আমিই ডেকেছি। তোমরা এই প্রশ্ন করার কে।’’ অধ্যক্ষ জানান, এতে খেপে গিয়ে ওই ছাত্রেরা বলতে থাকে, রাখি উৎসবে যুবকল্যাণ দফতর থেকে আসা আড়াই হাজার টাকা তাদের না দিয়ে কী ভাবে খরচ করা হল। অধ্যক্ষ মনে করান, কলেজ নির্বাচন না হওয়ায় ছাত্র সংসদ নেই। ফলে টাকা খরচের সিদ্ধান্ত কলেজ ফিনান্স কমিটির। কেন ব্যক্তিগত ভাবে টাকা তুলে দেওয়া হবে। কলেজ সূত্রের খবর, এর পরেই চেম্বারে আটকে রাখা হয় অধ্যক্ষ ও শিক্ষাকর্মীদের।

অন্য বিষয়গুলি:

Hetampur TMCP Campusing
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy