Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Congress Lost Jhalda

‘হাতের’ বাইরে গেল কেন! কেটেও কাটছে না জট

ঝালদা পুরসভার বিভিন্ন প্রকল্পের তহবিল আটকে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে রাজ্য প্রশাসনের বিরুদ্ধে। গত জুলাই মাসের শেষে কলকাতায় শীলা-সহ কয়েকজন কংগ্রেস পুরপ্রতিনিধির কলকাতা যাওয়া নিয়ে তৃণমূলে যোগদানের জল্পনা তৈরি হয়।

—ফাইল চিত্র।

প্রশান্ত পাল 
পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৯:৪১
Share: Save:

দিল্লির ক্ষমতা দখলে বিরোধীরা ‘ইন্ডিয়া’ জোট গড়ার পরেও কী ভাবে বাংলায় কংগ্রেসের একমাত্র পুরসভা ঝালদা তৃণমূল কেড়ে নিল, তা নিয়ে চর্চা থেমে নেই। এ দিনও প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরী থেকে আইনজীবী নেতা কৌস্তভ বাগচী তৃণমূলের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন। জেলা কংগ্রেস সভাপতি নেপাল মাহাতোও তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিরোধী পুরসভার তহবিল আটকে দিয়ে চাপ সৃষ্টি করার অভিযোগ তুলেছেন। তবে সে সব অভিযোগ মানেনি তৃণমূল।

তবে তৃণমূলের বিরুদ্ধে বারবার পুরসভার ক্ষমতা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চলছে বলে গত কয়েক মাস ধরে অভিযোগ তুলে এলেও, শেষ পর্যন্ত কংগ্রেস নেতৃত্ব তা কেন ঠেকাতে পারলেন না, সে প্রশ্নও উঠেছে বিভিন্ন মহলে।

গত অক্টোবরে নির্দলের দু’জন ও কংগ্রেসের পাঁচ পুরপ্রতিনিধি তৃণমূলের পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনেন। তাঁরা সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে তৃণমূলের পুরপ্রধানকে সরিয়ে নির্দলের শীলা চট্টোপাধ্যায়কে পুরপ্রধান নির্বাচন করেছিলেন। কিন্তু তা নিয়ে আপত্তি তোলে তৃণমূল। দল ও প্রশাসন এ নিয়ে হাই কোর্টে মামলা করে। পাল্টা মামলা করে কংগ্রেসও। আইনি লড়াইয়ের পর পুরসভার ক্ষমতা কংগ্রেস পেলেও স্বস্তি পায়নি।

ঝালদা পুরসভার বিভিন্ন প্রকল্পের তহবিল আটকে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে রাজ্য প্রশাসনের বিরুদ্ধে। গত জুলাই মাসের শেষে কলকাতায় শীলা-সহ কয়েকজন কংগ্রেস পুরপ্রতিনিধির কলকাতা যাওয়া নিয়ে তৃণমূলে যোগদানের জল্পনা তৈরি হয়। যদিও শীলার দাবি ছিল, পুর-তহবিল সংক্রান্ত বিষয়ে কলকাতায় তদ্বির করতে গিয়েছিলেন। তৃণমূলও দল ভাঙানোর চেষ্টার অভিযোগ মানেনি। নেপাল জানিয়েছিলেন, তহবিল আনতে আইনি পথে লড়বেন। সম্প্রতি হাই কোর্টে তা নিয়ে মামলাও হয়।

তার মধ্যেই বুধবার শীলা-সহ পাঁচ জনের তৃণমূলে যোগ। তবে কি শুধু তৃণমূলে যোগ দিলে তহবিল মিলবে, সেই আশাতেই তাঁদের তৃণমূলে যাওয়া? না কি অন্য কারণ রয়েছে তাঁদের কংগ্রেস ছাড়ার পিছনে? চর্চা চলছে শহরে।

শীলা থেকে নিহত তপন কান্দুর ভাইপো মিঠুনের অবশ্য দাবি, ‘‘ঝালদার মানুষের উন্নয়নের জন্যই আমরা তৃণমূলে যোগ দিলাম।’’

তবে জেলা কংগ্রেস সভাপতি নেপালের অভিযোগ, ‘‘প্রলোভন ও নিরন্তর চাপের কাছে নতি স্বীকার করেই তাঁরা শাসকদলে গিয়েছেন। বলা হচ্ছে, ঝালদা শহরের জন্য ‘সুবর্ণরেখা জল প্রকল্প’ গড়ার জন্যই তাঁরা তৃণমূলে গিয়েছেন! এ গল্প ২০১৫-র পুরভোটের আগে থেকেই ঝালদার মানুষ শুনছেন। কাজ কতটুকু এগিয়েছে? তহবিল পেতে শাসকদলে যেতে হবে, এ আবার কী কথা!’’

নেপালের কটাক্ষ, ‘‘জাতীয় স্তরে কংগ্রেস-তৃণমূল-সহ বিরোধী দল যেখানে ‘ইন্ডিয়া’ জোট গড়ে তুলেছে, সেখানে এমনটা না হলেই ভাল হত।’’

তবে সুর চড়িয়েছে অধীর এ দিন বহরমপুরে বলেছেন, ‘‘এই দখলের পিছনে পুলিশের ভূমিকা আছে, সন্ত্রাস আছে, প্রলোভন আছে। আমাদের পুরপ্রতিনিধি তপন কান্দুকে খুন করার মধ্য দিয়ে দেখিয়ে দিল, কথা না শুনলে খুন হতে হবে। সেই পরিস্থিতির মধ্যে ঝালদা পুরসভা পরিচালনা করা ছিল কঠিন কাজ। তার মধ্যেও যে তাঁরা যে এই ক’মাস পুরসভা চালিয়েছেন, এ জন্য তাঁদের ধন্যবাদ জানাই। তাঁরা মন থেকে (তৃণমূলে) যাননি। তাঁদের দেহটা গিয়েছে।’’ কংগ্রেসের আইনজীবি নেতা কৌস্তভ বাগচীর দাবি, ‘‘তৃণমূলের সঙ্গে ঘর করা আর বিষধর সাপের সাথে থাকা একই।’’

সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়া বলেন, ‘‘আমরা তো দল ভাঙাইনি। কংগ্রেস ও নির্দলের পুরপ্রতিনিধিরাই আমাদের দলে আসতে চেয়ে চিঠি দিয়েছেন। আমরা তাঁদের স্বাগত জানিয়েছি।’’ তাঁর দাবি, জাতীয় স্তরের জোট জাতীয় স্তরে
যথারীতি বহাল রয়েছে।

অন্য বিষয়গুলি:

purulia Congress
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy