সপার্ষদ: বিজেপির সভায় রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। সঙ্গে অনুপম হাজরা, শ্যামাপদ মণ্ডলেরা। বৃহস্পতিবার লাভপুরে। নিজস্ব চিত্র
দলীয় কর্মসূচিতে বৃহস্পতিবার বীরভূমের বিভিন্ন জায়গায় সভা, পদযাত্রা করলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। বৃহস্পতিবার সকালে সাঁইথিয়াতে বিজেপি কর্মীদের নিয়ে পদযাত্রা সেরে দুপুরে বোলপুরে চা চক্রে স্থানীয় কিছু মানুষের সঙ্গে স্বাস্থ্য, শিক্ষা-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সমস্যার বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন তিনি। তৃণমূল বিধায়ক মহুয়া মৈত্রের সঙ্গে তাঁর কথোপকথন ও দেবশ্রী রায় প্রসঙ্গে দল ভাবনাচিন্তা করছে বলে জানান তিনি।
বোলপুরে চা চক্রের শুরুতে তিনি বলেন, ‘‘বীরভূম সব চেয়ে বড় সন্ত্রাসের জায়গা হয়ে গিয়েছে। তৃণমূলের এমন কোনও অফিস নেই যেখানে বোমা ফাটেনি। তৃণমূলের এমন কোনও নেতা নেই যাঁর বাড়িতে বোমা পাওয়া যায় না,। এমনকি ডিএম অফিসেও বোমা ফেলা হচ্ছে। মানুষ পরিবর্তন চাইছেন। আমরা গণতান্ত্রিক লড়াই করে চলেছি আর এ ভাবেই একদিন পরিবর্তন আসবে।’’ পাল্টা তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল বলেন, ‘‘একুশের ভোট হবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখ দেখেই।’’ চা চক্র সেরে লাভপুরের সভায় যোগ দিতে যান দিলীপবাবু।
কিছু দিন আগে লাভপুরে মুকুল রায়ের সভাস্থল জলে ভাসিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। সভা ভণ্ডুল হয়েছিল সে বার। এবার অবশ্য বাধা উপেক্ষা করেই সভা করেন দিলীপবাবু। নতুন করে বিজেপির রাজ্য সভাপতির পদে আসার পর থেকেই আক্রমণাত্মক দিলীপ ঘোষ। শাসক দলের নেতারা যে বিভিন্ন খাতে জনগণের টাকা নিয়েছেন সেই প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘আগে যে সব নেতারা ভাঙা সাইকেলে ঘুরে বেড়াতেন, একটা বিড়ি তিন বার খেতেন, তাঁরাই এখন দামি গাড়ি চড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। আগে যাঁদের বাড়ির চালের ফুটো দিয়ে জল পড়ত তাঁরা এখন পাকা বাড়িতে বাস করেন।’’ লাভপুর পঞ্চায়েত সমিতি লাগোয়া মাঠে সভার আয়োজন করেছিল বিজেপি। তার কাছাকাছি শিক্ষক দিবসের কয়েকটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল তৃণমূলও। বিজেপির সভায় ছিলেন অনুপম হাজরা, জেলা সভাপতি শ্যামাপদ মণ্ডল, দুই প্রাক্তন জেলা সভাপতি অর্জুন সাহা, রামকৃষ্ণ রায়।
এই সভাতেই দিন কয়েক আগে মীরবাঁধে খুন হওয়া বিজেপি কর্মী ডালু ওরফে হিলাল শেখের বাবা, মা ও স্ত্রীকে পাশে নিয়ে দিলীপবাবুকে বলতে শোনা যায়, ‘‘সারা রাজ্যে আমাদের কর্মী-সমর্থক খুন হচ্ছেন। মানুষ এখন রুখে দাঁড়াচ্ছেন। এক দিন আর তৃণমূলকে খুঁজে পাওয়া যাবে না।’’ নিহত বিজেপি কর্মীর পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দেন রাজ্য সভাপতি। এ দিনের সভায় কয়েক জন তৃণমূল কর্মী সমর্থক তাঁদের দলে যোগ দিয়েছেন বলে স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের দাবি। তৃণমূল নেতারা অবশ্য তাঁদের দল ছেড়ে কেউ বিজেপিতে যোগ দেননি বলেই পাল্টা দাবি করেছেন।
সভায় দিলীপ ঘোষের যাওয়ার পথে প্রতিটি এলাকায় শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল জেলা তৃণমূলের পক্ষ থেকে। স্থানীয় বিজেপি নেতাদের অভিযোগ, শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠানকে সামনে রেখে বিজেপি কর্মীদের সভায় যেতে বাধা দেওয়া হয়েছে। হুমকি দেওয়া হয়েছে। এ দিনের সভায় শুধুমাত্র লাভপুর বিধানসভা এলাকা থেকে ৪০ হাজার কর্মী সমর্থক জমায়েতের লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছিল বিজেপি।
বিজেপি নেতাদের অভিযোগ, তৃণমূলের বাধার পরেও ২০ হাজার মানুষের জমায়েত হয়েছিল। বিজেপির জেলা সহ-সভাপতি বিশ্বজিৎ মণ্ডল বলেন, ‘‘তৃণমূল নানা ভাবে বাধা সৃষ্টি না করলে লোক সমাগমের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়ে যেত।’’ ওই অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূলের লাভপুর ব্লক সভাপতি তরুণ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বাইরে থেকে লোক এনেও মাঠের একটা কোণও ভরাতে পারেনি বিজেপি। তাই মুখরক্ষা করতে আমাদের ঘাড়ে দোষ চাপাচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy