শোকাতুর: বাঘমুণ্ডির ডুঙরিডি গ্রামে নিহতের পরিজনেরা। নিজস্ব চিত্র।
গভীর জঙ্গল থেকে উদ্ধার হল যুবকের থেঁতলানো দেহ। পাশেই হাতির পায়ের ছাপ। স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শঙ্খ সোরেন (৩২) নামে নিহত ওই যুবকের বাড়ি অযোধ্যা পাহাড়ের ডুঙরিডি গ্রামে। হারানো মোষের খোঁজে শনিবার বিকেলে গ্রাম থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে গভীর জঙ্গলে ঢুকেছিলেন। ভোরে দেহ মেলে। সব কিছু দেখে, হাতির হানায় তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে পুলিশের অনুমান। দেহ পাঠানো হয়েছে ময়না-তদন্তে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শঙ্খর বাড়িতে রয়েছেন বৃদ্ধ বাবা-মা, স্ত্রী এবং নাবালক দুই ছেলে। পরিবারটির অল্প চাষের জমি আছে। তবে তা দিয়ে সংসার খরচ চলে না। দিনমজুরি করতেন শঙ্খ। বাড়িতে ছাগল ও মোষ প্রতিপালন করতেন। শনিবার বিকেলে একটি মোষের খোঁজেই জঙ্গলে ঢোকেন। হাতে ছিল লাঠি। রাত পর্যন্ত বাড়ি না ফেরায় চিন্তায় পড়ে যান পরিজনেরা। ভোরে খবর আসে, গভীর জঙ্গলে পড়ে রয়েছে দেহ। পাশে সেই লাঠি। পুলিশ জানিয়েছে, দেহের কাছ থেকে হাতির পায়ের চিহ্ন ছিল। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, হাতির আছাড়েই থেঁতলে গিয়েছে মাথা।
এ দিন চড়াই-উতরাই বেয়ে জঙ্গলে পৌঁছে দেহ উদ্ধার করতে যথেষ্ট বেগ পেতে হয় পুলিশ ও বনকর্মীদের। কয়েক ঘণ্টার চেষ্টায় দেহটি বের করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে পাঠানো হয়েছে পুরুলিয়া মেডিক্যালের মর্গে। পরে, নিহত যুবকের বাড়িতে যান বাঘমুণ্ডি থানার ওসি মুকুল কর্মকার। পুলিশের তরফে কিছু আর্থিক সহায়তা করা হয়। ডিএফও (পুরুলিয়া) দেবাশিস শর্মা বলেন, ‘‘মর্মান্তিক ঘটনা। তবে লোকালয়ে ঘটেনি। গভীর জঙ্গলে হাতির হানায় কারও মৃত্যু হলে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আগে রাজ্যের থেকে অনুমোদন নিতে হয়।’’ সব দিক খতিয়ে দেখে, শীঘ্রই সেই প্রক্রিয়া শুরু করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
গত ২৮ মে অধোয্যার বাঁধডি গ্রামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছিল হাতির হানায়। বন দফতর সূত্রে খবর, কয়েক মাস ধরে ঝাড়খণ্ড থেকে হাতির আনাগোনা শুরু হয়েছে বাঘমুণ্ডি-সহ লাগোয়া রেঞ্জ এলাকাগুলিতে। মাঝে কয়েকটি দলে ভাগ হয়ে যায় হাতিগুলি। ছড়িয়ে পড়ে অযোধ্যা ও বাঘমুণ্ডি রেঞ্জের বিভিন্ন জঙ্গলে। হাতির একটি বড় দল রবিবার বিকেল পর্যন্ত পাওয়া খবরে বাঘমুণ্ডি লাগোয়া মাঠা রেঞ্জের জঙ্গলে রয়েছে বলে জানিয়েছে দফতর। ঠিক কোন হাতির আক্রমণে এ দিন ওই যুবকের মৃত্যু হতে পারে, তা নিয়ে সন্দিহান বন দফতরের কর্মীরা। তবে এক আধিকারিক বলেন, ‘‘বাঘমুণ্ডির জঙ্গলে সেঁধিয়ে থাকা দলের কোনও দাঁতাল সামনে পেয়ে যুবককে আছড়ে মেরে থাকতে পারে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy