উল্লাসে বাম-রাম। পাশাপাশি। জাজিগ্ৰাম পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠনের পরে শুক্রবার। ছবি: তন্ময় দত্ত।
জেলায় এই প্রথম জাজিগ্রাম ও শীতলগ্রামের পঞ্চায়েতের দখল নিল রাম-বাম জোট। এই নিয়ে কটাক্ষ শুরু করেছে তৃণমূল। যদিও সিপিএম, কংগ্রেস ও বিজেপি নেতৃত্ব জানিয়েছেন তাঁরা এ ধরনের জোটকে সমর্থন করেন না। বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শুক্রবার রামপুরহাট মহকুমার অধিকাংশ পঞ্চায়েত তৃণমূল বোর্ড গঠন করলেও মুরারই ২ ব্লকের জাজিগ্রাম ও নলহাটি ২ ব্লকের শীতলগ্রামে অন্য ছবি ধরা পড়ল। দু’টি পঞ্চায়েতের দখল নিল ‘রামধনু’ জোট। তিন দলের পতাকা নিয়ে উল্লাস করতে দেখা গেল কর্মী, সমর্থকদের।
জাজিগ্রাম পঞ্চায়েতে মোট আসন ২৪টি। বিজেপি ৭টি, সিপিএম ৩টি, কংগ্রেস ৪টি, তৃণমূল ৯টি ও নির্দল একটি আসন জেতে। সিপিএমের এক জন পরে দলবদল করেন। এ দিনের বিরোধীরা এক জোটে হন। কংগ্রেসের তুষার রাজবংশী প্রধান হন। বিজেপির উপপ্রধান হন বিজেপির বিনাপাণী রাজমল্ল। তিন দলের স্থানীয় নেতৃত্বের দাবি, দশ বছর পরে দুর্নীতি মুক্ত পঞ্চায়েত হল। জয়ের পরে কর্মীদের উচ্ছ্বাস ছিল চোখে পড়ার মতো। সিপিএম, কংগ্রেস ও বিজেপির পতাকা নিয়ে আবির খেলায় মাতেন তাঁরা।
এই ঘটনার পরে তৃণমূলের বিদায়ী উপপ্রধান রহিম মোল্লা বলেন, ‘‘ব্লক সভাপতি, জেলা নেতৃত্বেরা নিজেদের ইচ্ছেমতো প্রার্থী দিয়েছেন। তাই এই ফল।’’ তাঁর দাবি, ‘‘সিপিএম ও কংগ্রেসের বেশ কয়েক জন জয়ী প্রার্থী যোগাযোগ করলেও নেতৃত্ব কর্ণপাত করেননি।তাই পঞ্চায়েত হাতছাড়া হল।"
একই কায়দায় নলহাটি ২ ব্লকের শীতলগ্রাম পঞ্চায়েতের দখল নিল সিপিএম, কংগ্রেস ও বিজেপির ‘রামধনু’ জোট। এই পঞ্চায়েতে মোট আসন ২২টি। তৃণমূল ৫টি, সিপিএম-কংগ্রেস জোট ৯টি ও বিজেপি ৪টি আসনে জয়ী হয়। নির্বাচনে প্রধান হন কংগ্রেসের সাহিনা খাতুন, উপপ্রধান হন বিজেপির সুভদ্রা লেট।
এ নিয়ে কটাক্ষ করেছেন তৃণমূলের জেলা সম্পাদক ত্রিদিব ভট্টাচার্য বলেন, " রাম, বাম, ডান এক সঙ্গে কাজ করছে। তার ছবি এই দু’টি পঞ্চায়েতে দেখা গেল।"
যদিও ঘটনাটি নিয়ে ক্ষুব্ধ সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সঞ্জীব বর্মণ। তিনি বলেন, "দলের নির্দেশ ছিল যে পঞ্চায়েত আমাদের দখলে আসেনি সেই পঞ্চায়েতে ভোট দান থেকে বিরত থাকবেন জয়ী প্রার্থীরা। যাঁরা এই ঘটনা ঘটিয়েছেন। তাঁদের দল থেকে বহিষ্কার করা হবে। আমরা বিজেপি ও তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই করছেন। কয়েক জনের জন্য দলের আদর্শ নষ্ট করা যাবে না।’’
কংগ্রেসের জেলা সভাপতি মিল্টন রশিদ বলেন, ‘‘বিষয়টি জানা ছিল না। দুই ব্লক সভাপতিকে এই বিষয় নিয়ে তদন্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি কোনও ভাবেই মেনে নেওয়া যাবে না।’’ যদিও কংগ্রেসেরই নবনিযুক্ত প্রধান সাহিনা খাতুন এ দিন বলে দিলেন,
‘‘দলের মত না থাকলেও এলাকাবাসী দুর্নীতিগ্রস্ত তৃণমূলের পঞ্চায়েত চাইছিলেন না। তাই বাধ্য হয়ে তৃণমূল ছাড়া সকলে এক হয়ে পঞ্চায়েত গঠন করতে বাধ্য হলাম।" সিপিএমের সুরমা খাতুন, তনিমা খাতুনদেরও বক্তব্য, ‘‘দলের নিষেধ সত্ত্বে পঞ্চায়েতকে দুর্নীতি মুক্ত করার লক্ষে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’
বিজেপির বীরভূম সাংগঠনিক জেলার মহিলা মোর্চার সভা নেত্রী রেশমি দে বলেন, ‘‘এটি সাধারণ মানুষের লড়াই। তৃণমূলের দুর্নীতি থেকে রেহাই পাওয়া জন্য নিচু তলার কর্মীদের এই জোট। তবে বিজেপি দল কখনই এই জোটকে সমর্থন করে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy