নদী তীরের জঙ্গলে। নিজস্ব চিত্র
পায়ে হেঁটে এ রাজ্যে চলে আসা কিছু পরিযায়ী শ্রমিককে ঝাড়খণ্ডের রাঁচীতে ফিরিয়ে দিল পুলিশ।
স্থানীয় এবং পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার ভোরে দশ জন শ্রমিক তুলিন সীমানার কিছুটা দূরে, সুবর্ণরেখা পেরিয়ে পুরুলিয়ার ঝালদায় ঢুকে পড়েন। নদীর তীরে একটি জঙ্গলে এসে পড়েন। খবর পেয়ে পুলিশ ও সিভিক ভলান্টিয়ারেরা গিয়ে ফিরে যেতে বলেন তাঁদের। কিন্তু ও পারে, ঝাড়খণ্ডের বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দাদের বাধায় আবার ঝালদার জঙ্গলে চলে আসেন তাঁরা। দুপুরের পরে পুলিশ গিয়ে ঝাড়খণ্ডে ফিরিয়ে দেয় ওই শ্রমিকদের। এসডিপিও (ঝালদা) সুমন্ত কবিরাজ বলেন, ‘‘সীমানা সিল করে দেওয়া হয়েছে। শ্রমিকেরা যে ভাবে অন্য রাস্তা দিয়ে এ রাজ্যে ঢুকেছেন, তা ঠিক হয়নি। তাঁরা যেখানে ছিলেন সেখানকার প্রশাসনেরই ওঁদের যাবতীয় দায়িত্ব নেওয়ার কথা।’’
এ দিন ওই শ্রমিকেরা জানান, তাঁদের মধ্যে চার জন মুর্শিদাবাদের। তিন জনের বাড়ি পুরুলিয়ার নিতুড়িয়ায়। বাকি তিন জন ঝাড়খণ্ডের বোকারোর চন্দনকিয়ারির বাসিন্দা। জায়গাটি পুরুলিয়া লাগোয়া। তাই এই জেলা দিয়েই বাড়ি ফেরার চেষ্টা করছিলেন তাঁরা। ভিন্ রাজ্য থেকে শ্রমিকদের আসার খবর পেয়েই স্থানীয় মাঘা, ডড়পা, বনডি-সহ বিভিন্ন গ্রাম থেকে কিছু মানুষ এ দিন ওই জঙ্গলে যান। পুরুলিয়ার এক শ্রমিক বলেন, ‘‘সারা রাত হেঁটেছি। সঙ্গে শুকনো খাবার যা ছিল, শেষ হয়ে গিয়েছে। আমরা ঘরে ফিরতে চাই।’’ উপস্থিত লোকজন তাঁদের কিছু মুড়ি এনে দেন।
এ দিকে, ভিড়ের খবর পেয়ে জঙ্গলে হাজির হন দু’জন পুলিশ কর্মী ও কয়েকজন সিভিক ভলান্টিয়ার। ওই শ্রমিকেরা অভিযোগ করেন, রাঁচীতে স্থানীয় লোকজন তাঁদের এলাকা ছাড়ার জন্য চাপ দিচ্ছিলেন। আবার সেখানে ফিরে গেলে থাকতে না-ও দেওয়া হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তাঁরা। পুলিশের কথায় ঝাড়খণ্ডে ফেরার চেষ্টা করলে, আবার ও পারের লোকজনের বাধায় ফিরে জঙ্গলেই চলে আসতে হয় তাঁদের। শেষ পর্যন্ত দুপুরে ঝাড়খণ্ডে ফেরানো হয় তাঁদের।
পুরুলিয়ার জেলাশাসক রাহুল মজুমদার জানান, যে সব জায়গায় পরিযায়ী শ্রমিকেরা আটকে রয়েছেন সেখানকার প্রশাসনেরই তাঁদের দেখভাল করার কথা। তিনি বলেন, ‘‘ওই শ্রমিকদের যাতে ঝাড়খণ্ডে সমস্যা না হয়, পুলিশকে তা খোঁজ নিয়ে দেখতে বলা হয়েছে।’’ জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ঝাড়খণ্ডের লোহারদাগায় আটকে রয়েছেন পুরুলিয়ার আট জন শ্রমিক। রান্নার ঠাকুরদের সহকারীর কাজ করেন তাঁরা। খাওয়াদাওয়ার সমস্যার কথা জানতে পেরে পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন সেখানকার প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করে। বৃহস্পতিবার ওই শ্রমিকদের এক জন জানান, তাঁদের কাছে ত্রাণ পৌঁছেছে। জেলাশাসক বলেন, ‘‘ওই শ্রমিকেরাও ফিরতে চেয়েছিলেন। কিন্তু যেখানে আছেন সেখানেই থাকতে বলা হয়েছে তাঁদের।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy