রাষ্ট্রীয় শিক্ষকের সম্মান পেলেন পাঠভবনের শিক্ষক নিলয় রায়। তাঁর এই কৃতিত্বে খুশি পাঠভবনের শিক্ষক, শিক্ষিকা ও পড়ুয়ারা। গত ডিসেম্বর মাসে ভারত সরকারের ন্যাশনাল এডুকেশন ফোরামের তরফে কলকাতার একটি প্রেক্ষাগৃহে শিক্ষকতার এই শ্রেষ্ঠ সম্মান তাঁর হাতে তুলে দেওয়া হয়।
শান্তিনিকেতনের বাসিন্দা নিলয় রায় ১৯৯৭ সাল থেকে তাঁর শিক্ষকতা জীবন শুরু করেন। প্রথম চার বছর মণীন্দ্রচন্দ্র বিদ্যাপীঠ (বহরমপুর) ও ২০০১ সাল থেকে বিশ্বভারতীর পাঠভবনে শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। দৈনন্দিন পঠন পাঠনের বাইরে পাঠভবনের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের সঙ্গে তাঁর নিবিড় যোগ তৈরি হয়। ২০১৬ সালে অধ্যয়ন ও সংস্কৃতির আদান প্রদান বিষয়ক একটি অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার জন্য পাঠভবনের ছাত্র-ছাত্রীদের একটি দল নিয়ে তিনি পাড়ি দেন জার্মানিতে। ভাষা-শিক্ষা উন্নয়ন শীর্ষক কর্মশালায় আমন্ত্রিত সদস্য হিসেবেও যোগ দেন তাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়ায়। স্নাতকোত্তর স্তরে ইতালির মিলান বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের শিক্ষাচিন্তা বিষয়ক একটি যৌথ প্রকল্পে উপদেষ্টার ভূমিকাও পালন করেছেন তিনি। রবীন্দ্রনাথের শিক্ষাচিন্তা বিষয়ক আন্তর্জাতিক আলোচনাচক্রে আমন্ত্রিত বক্তা হিসেবে বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারি কলেজে গিয়েছেন নিলয়।
জাতীয় স্তরে বিভিন্ন আলোচনাচক্রেও অংশ নেওয়ার পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন ঐতিহ্যশালী প্রতিষ্ঠান এশিয়াটিক সোসাইটি, কেন্দ্রীয় ভারতীয় ভাষা সংস্থান, ভারত সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে বিভিন্ন শিক্ষা বিষয়ক কাজে আমন্ত্রিত সদস্য হিসেবে উপস্থিত থেকেছেন। তবে সব কিছুই প্রচারের আলোর বাইরে থেকেই তিনি এই কাজ করে গিয়েছেন। পাঠভবনে পড়ানোর পাশাপাশি অনলাইন প্রযুক্তিতে শিক্ষাদানের মাধ্যমেও তিনি পাঠভবনকে এক অন্য মাত্রায় নিয়ে গিয়েছিলেন। তাই শিক্ষাক্ষেত্রে তাঁর ব্যতিক্রমী নিষ্ঠা, দক্ষতার কারণেই তাঁকে রাষ্ট্রীয় শিক্ষকের সম্মানে ভারত সরকারের অধীনস্থ ন্যাশনাল এডুকেশন ফোরামের তরফে নির্বাচিত করা হয়।
নিলয় বলেন, “রাষ্ট্রীয় শিক্ষক সম্মানের জন্য আমার নাম নির্বাচন করা হবে, তা আমি ভাবতে পারিনি। এই সম্মান পেয়ে খুবই ভাল লাগছে। এর জন্য প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রতিষ্ঠানের প্রতি আমার বিনম্র শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করি। ” পাঠভবনের অধ্যক্ষ বোধিরূপা সিংহ বলেন, “বহুদিন যাবৎ তিনি শিক্ষাঙ্গনে অনেক ভাল কাজ করে চলেছেন। তাঁর এই সম্মান প্রাপ্য ছিল। এতে আমরা গর্বিত।”
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)