Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Coronavirus

ইদের খরচায় অন্য ইদ মিলনদের

ইন্দাসের জিনকড়া-লাগোয়া শ্রীরামপুর, ভাসাপুর, ধাড়াপাড়ার মতো এলাকাগুলিতে প্রচুর বাসিন্দার দিনগুজরান হয় দিনমজুরি করে।

ত্রাণ নিয়ে।নিজস্ব চিত্র।

ত্রাণ নিয়ে।নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ইন্দাস শেষ আপডেট: ০৩ মে ২০২০ ০০:৫৪
Share: Save:

কারও ইচ্ছে ছিল এ বার ইদে কিনবেন চিকনের পাঞ্জাবি। কেউ ভেবেছিলেন, একটা স্মার্ট ফোন কিনবেন। কিন্তু রমজান মাস শুরুর আগেই শুরু হয়েছে ‘লকডাউন’। বাঁকুড়ার ইন্দাসের জিনকড়া গ্রামের প্রান্তিক কৃষক পরিবারের যুবক শেখ মিলন বলেন, ‘‘আমাদের পাড়াপড়শিই যদি কষ্টে থাকেন, তা হলে কিসের খুশি? কিসের আনন্দ?’’ ইদের জন্য জমিয়ে রাখা টাকা দিয়ে অসহায় পরিবারগুলির পাশে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তাঁরা কয়েকজন বন্ধু। মিলন দেন পাঞ্জাবির জন্য তুলে রাখা হাজার টাকা। ইতিমধ্যেই দু’দফায় বাড়ি-বাড়ি ত্রাণ পৌঁছে দিয়ে এসেছেন তাঁরা।

ইন্দাসের জিনকড়া-লাগোয়া শ্রীরামপুর, ভাসাপুর, ধাড়াপাড়ার মতো এলাকাগুলিতে প্রচুর বাসিন্দার দিনগুজরান হয় দিনমজুরি করে। ‘লকডাউন’-এ কাজ না পেয়ে ঘোরতর সমস্যায় পড়েছেন তাঁরা। জিনকড়ার শেখ হাসান কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে ডাক্তারি পড়েন। হাজার তিনেক টাকা জমিয়েছিলেন তিনি। ইচ্ছা ছিল, বাড়ি থেকে আরও কিছু টাকা নিয়ে একটা ফোন কিনবেন। তিনি বলেন, ‘‘পরিচিত মানুষজন অভাবে থাকবেন আর আমি বিলাসিতা করব— তা-ও কি হয়!’’ উৎসবে ভাল জুতো কিনবেন বলে পাঁচশো টাকা রেখেছিলেন শেখ সুরজ। সেই টাকাও দিয়েছেন ত্রাণে। এ ভাবে আট হাজার টাকার তহবিল নিয়ে কাজ শুরু হয়েছিল।

উদ্যোক্তাদের অন্যতম শেখ নাসিরুদ্দিন মণ্ডল জানান, চাল, আলু, ডাল, সয়াবিন, পেঁয়াজ, চিঁড়ে, খেজুর, সাবান প্যাকেটে ভরে বাড়িতে বাড়িতে পৌঁছে দিয়েছেন তাঁরা। প্রথম দফায় ত্রাণ দেওয়া হয়েছে ষাটটি পরিবারকে। দ্বিতীয় দফায় আশিটিকে। কাজের সময়ে কী-কী সাবধানতা নিতে হবে, তা বুঝিয়ে দিচ্ছেন ডাক্তারি পড়ুয়া হাসান। এলাকার শিক্ষক শেখ মনিরুদ্দিন বলেন, ‘‘ছেলেরা দারুণ কাজ করছে। জানতে পেরে প্রচুর মানুষ ওদের পাশে দাঁড়িয়েছেন।’’ জিনকড়ার স্বাস্থ্যকর্মী মহম্মদ ইউসুফ বলেন, ‘‘ওরাই প্রকৃত ধর্ম করছে। রমজান মাসের আগে থেকেই ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সব দুঃস্থ মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে।’’ এলাকার বাসিন্দা মালতি ধাড়া, গীতা ধাড়ারা বলছেন, ‘‘দুঃসময়ে খাবার জোগাচ্ছে ছেলেগুলো। কত যত্ন করে দিয়ে যায়। ওদের ভাল হোক।’’

মিলন-হাসানরা জানাচ্ছেন, গ্রামের প্রচুর মানুষ যেচে তাঁদের হাতে তুলে দিচ্ছেন ইদের জন্য জমিয়ে রাখা টাকা।

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Health Coronavirus Lockdown Eid
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy