চুলের পোরোসিটি পরীক্ষা করলে কী বোঝা যাবে? ছবি: সংগৃহীত।
‘হেয়ার পোরোসিটি’। সহজ কথায় বললে বোঝায় চুলের জল ধারণ করার ক্ষমতা। চুল রুক্ষ, নির্জীব না রেশমের মতো, তা অনেকটা নির্ধারণ করা যায় এই পোরোসিটি দেখে। শীতের রুক্ষ বাতাস, সূর্যের অতিবেগনি রশ্মি চুলের কিউটিকল কতটা আলগা করে দিয়েছে তা খালি চোখে বোঝার উপায় নেই। তবে কেশসজ্জা শিল্পীরা বলছেন, হেয়ার পোরোসিটি টেস্ট-এর মাধ্যমে চুলের আর্দ্রতা সম্পর্কে সম্যক ধারণা পাওয়া সম্ভব।
খুব সহজে বাড়িতে নিজে নিজেই একটি পরীক্ষা করে দেখা যেতে পারে। পরিষ্কার, শ্যাম্পু করা চুলে একটু জল স্প্রে করুন। খেয়াল করুন, চুলের গায়ে কত ক্ষণ জলের বিন্দু দাঁড়িয়ে থাকছে। এই পরীক্ষার পোশাকি নাম ‘হেয়ার পোরোসিটি টেস্ট’।
কী ভাবে বুঝবেন চুল কতটা রুক্ষ?
কেশসজ্জা শিল্পীরা বলছেন, তার জন্য বাড়িতেই একটি পরীক্ষা করে দেখা যেতে পারে। একেই ‘হেয়ার পোরোসিটি টেস্ট’ বলা হয়।
· এই পরীক্ষাটি করার জন্য প্রথমে কাচের একটি পাত্রে জল ভরে নিন।
· তার পর মাথা থেকে ঝরে পড়া কয়েকটি চুল সংগ্রহ করুন।
· চুলগুলিকে শ্যাম্পুর সাহায্যে ভাল করে ধুয়ে নিন। চুলের গায়ে যেন তেল, খুশকি বা হেয়ার মাস্কের কোনও পরত না জমে থাকে।
· শ্যাম্পু করা চুলগুলি ভাল করে শুকিয়ে নিন। প্রয়োজনে হেয়ার ড্রায়ারও ব্যবহার করতে পারেন।
· এ বার কাচের পাত্রে রাখা জলের মধ্যে চুলগুলি রেখে দিন। হালকা করে ভাসিয়ে দিলেই হবে। হাতের সাহায্যে ডুবিয়ে দেওয়ার প্রয়োজন নেই।
· দু’-চার মিনিট পাত্রটি ওই ভাবে রেখে দিন। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যাবে নির্দিষ্ট সময় পরেও চুলগুলি জলের উপর ভেসে রয়েছে। কারও ক্ষেত্রে তা পুরোপুরি ডুবেও যেতে পারে। আবার, চুলগুলি কাচের পাত্রের ভিতর পুরোপুরি না ডুবে মাঝামাঝি ভেসেও থাকতে পারে।
১) লো পোরোসিটি:
কাচের পাত্রে রাখা জলের উপর যদি চুলগুলি ভেসে থাকে, সে ক্ষেত্রে ধরে নেওয়া যেতে পারে চুলগুলি ‘লো পোরোসিটি’ গোত্রের, অর্থাৎ চুল খুব রুক্ষ নয়। কিউটিকলের ময়েশ্চার ধরে রাখার ক্ষমতাও রয়েছে যথেষ্ট পরিমাণে। চিকিৎসকেরা বলছেন, কারও চুল ‘লো পোরোসিটি’ গোত্রের হবে কি না, তা অনেকটা জিনের উপর নির্ভর করে। কেশসজ্জা শিল্পীরা কিন্তু সেই বুঝেই চুলে হালকা, কম ঘনত্বযুক্ত প্রসাধনী মাখার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
২) মিডিয়াম পোরোসিটি:
এ ক্ষেত্রে চুলে কিউটিকলের স্তর খানিকটা আলগা হয়ে থাকে। ফলে জল, হাওয়া সহজেই চুলের গায়ে থাকা ছোট ছোট ছিদ্র দিয়ে প্রবেশ করতে পারে। কাচের পাত্রে রাখা জলের উপর চুলগুলি দীর্ঘ ক্ষণ ভেসে থাকতে পারে না। আবার পুরোপুরি ডুবে যাবে, এমন অবস্থাও থাকে না। এই গোত্রের চুলে কোনও ধরনের রাসায়নিক ব্যবহার করার আগে সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। চুলের আর্দ্রতা বজায় রাখতে হলে কন্ডিশনার ব্যবহার করা আবশ্যক। সপ্তাহে অন্তত এক বার ‘ডিপ কন্ডিশনিং ট্রিটমেন্ট’ করা যেতে পারে।
৩) হাই পোরোসিটি:
চুল ভীষণ রুক্ষ? শ্যাম্পু, কন্ডিশনার মাখার কিছু ক্ষণের মধ্যেই চুল উস্কোখুস্কো হয়ে পড়ছে? তার মানে ধরে নেওয়া যেতে পারে চুলগুলি হাই পোরোসিটি গোত্রের অন্তর্গত। কেশসজ্জা শিল্পীরা বলছেন, কাচের পাত্রে ভাসিয়ে দেওয়া চুলের গোছা কিছু ক্ষণের মধ্যেই যদি ডুবে যায়, তা হলে ধরে নেওয়া যেতে পারে কিউটিকলের সেই (বন্ড)জোর নেই। তাই ময়েশ্চার সহজেই তার মধ্যে দিয়ে প্রবেশ করে যেতে পারে।
চুলের প্রসাধনী নির্বাচনের ক্ষেত্রে ‘পোরোসিটি’ নির্ধারণ কতটা সাহায্য করে?
ধরা যাক, কারও চুল ভীষণ রুক্ষ। চুলে রাসায়নিক দেওয়া রং ব্যবহার করে তা আরও নির্জীব হয়ে পড়েছে। তিনি যে ধরনের প্রসাধনী ব্যবহার করবেন, অন্যদের ক্ষেত্রে কিন্তু সেই একই নিয়ম খাটবে না। ‘লো পোরোসিটি’-র ক্ষেত্রে যেমন কেশসজ্জা শিল্পীরা কাঠবাদাম, অ্যাভোকাডো কিংবা আর্গন অয়েল মাখার পরামর্শ দেন, মিডিয়াম পোরোসিটির ক্ষেত্রে অলিভ অয়েল, হোহোবা অয়েল কিংবা রোজ়হিপ অয়েল মাথা যেতে পারে। আবার, হাই পোরোসিটির ক্ষেত্রে নারকেল তেল, ক্যাস্টর অয়েলের মতো বেশি ঘনত্বযুক্ত তেল মাখার পরামর্শ দেওয়া হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy