উদ্বিগ্ন: বোলপুর লায়েকবাজারে এক মৃৎশিল্পী। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী
করোনাভাইরাসের থাবা এবার কুমোর পাড়াতেও। করোনা আতঙ্কে লকডাউন চলার ফলে সঙ্কটে মৃৎশিল্পীরাও।
মৃৎশিল্পীরা জানাচ্ছেন, এই মুহূর্তে তাঁরা বুঝতে পারছেন না এ বার শারদোৎসব হবে কি না। হলেও তা কতটা বড় করে হবে তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। কারণ করোনাভাইরাসের প্রকোপে বিশ্বজুড়েই অর্থনীতিতে ব্যাপক ধাক্কা লেগেছে। তাছাড়া ইতিমধ্যেই সরকারের তরফ থেকে সমস্ত রকমের সামাজিক, ধর্মীয় ও রাজনৈতিক অনুষ্ঠান এবং জমায়েত বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।
দুর্গাপুজোও অনিশ্চয়তার মুখে দাঁড়িয়ে রয়েছে। লকডাউন ও পারস্পরিক দূরত্ব বিধির জেরে ইতিমধ্যেই বাসন্তী, অন্নপূর্ণা, গণেশ পুজো সহ বেশকিছু পুজো বাতিল করেছেন উদ্যোক্তারা। মূর্তি গড়েও বিক্রি করতে পারেননি অনেক শিল্পী। ফলে লোকসানের বোঝা বেড়েছে। গত বছরেও এপ্রিলের মাঝামাঝিই অনেক পুজো কমিটি বিভিন্ন থিমের উপরে প্রতিমা গড়ার বরাত দিয়েছিলেন শিল্পীদের। এবার একেবারেই বরাতহীন বোলপুরের কুমোরপাড়া। অনেক শিল্পী পেটের টানে পুজোর আয়োজকদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করলে তাঁরা পুজো হবে কিনা তা নিয়েই সংশয় প্রকাশ করেছেন। বোলপুরে ছোট-বড় সব মিলিয়ে প্রায় ১৫ থেকে ২০ ঘর মৃৎশিল্পীর বাস। সারা বছরই তাঁরা নানা রকম মূর্তি গড়েন। লকডাউনের ফলে মূর্তি গড়ার কাঁচামালও মিলছে না ঠিকমতো। ঘরে চাল, ডালও বিশেষ নেই। উপার্জন নেই। তাই বাধ্য হয়েই কেউ পুজো করবেন কিনা তার খোঁজ করছেন শিল্পীরাই। যদিও সরকারের তরফ থেকে, বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ও রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে মাঝেমধ্যে দেওয়া খাদ্যসামগ্রীতে কোনও রকমে গ্রাসাচ্ছাদনের ব্যবস্থা হলেও তা কতদিন চলবে ভেবে পাচ্ছেন না, আরাধ্য দেব-দেবীর মূর্তি গড়ার এই বিশ্বকর্মারা। জমানো টাকাও প্রায় শেষ। মৃৎশিল্পীরা বলেন, ‘‘মানুষ পাশে আছে এউ দুর্দিনে। তাই বেঁচে আছি। কিন্তু এভাবে কতদিন চলতে পারে!’’
সারাবছরই বিভিন্ন দেবদেবীর মূর্তি তৈরি করে চলে তাঁদের সংসার। মৃৎশিল্পী তপন পাল বলেন, ‘‘লকডাউনে সবকিছু বন্ধ থাকায় হাতে কাজ নেই, নেই কোন প্রতিমার বরাতও। এই অবস্থায় আমরা কি করে সংসার চালাবো তাই এখন ভেবে পাচ্ছি না। ’’ মৃৎশিল্পী বিপদতারণ পাল বলেন, ‘‘দুর্গা মূর্তি গড়াই তো আমাদের বড় কাজ। আর তার বয়না হয়ে যায় ১লা বৈশাখ থেকেই। কিন্তু এখনও পর্যন্ত দুর্গা প্রতিমার একটাও বরাত পাইনি। এবার পুজো হবে কিনা তাও বুঝতে পারছি না। সবই ঈশ্বরের ইচ্ছা। আমরা অপেক্ষা করছি সব যেন স্বাভাবিক হয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy