(বাঁ দিকে) শ্রেয়সী ও মৌমিতা। নিজস্ব চিত্র।
তাঁদেরও পরিবার পরিজন আছে। তা সত্ত্বেও করোনার সময় জীবন বাজি রেখে তাঁরা রোগীদের শুশ্রূষা করে চলেছেন। আন্তর্জাতিক নার্স দিবসের কথা বললেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে পিপিই কিট পরা স্বাস্থ্যকর্মীদের কথা। তাই আজ, বুধবার আন্তর্জাতিক নার্স দিবস হলেও করোনা আবহে প্রতিটা দিনই যেন তাঁদের।
তাঁদের ছাড়া আজ মানুষ অসহায়। চিকিৎসা ক্ষেত্রে চিকিৎসকরা যতটা গুরুত্বপূর্ণ, ঠিক ততটাই নার্সরাও। কোভিড পরিস্থিতিতে রোগীদের সুস্থ করতে চিকিৎসকরা যেমন দিনরাত এক করে পরিশ্রম করছেন, ঠিক তেমনই রোগীদের শুশ্রূষা করে সুস্থ করে তুলতে নিরলস পরিশ্রম করছেন নার্সরা। প্রত্যেক রোগী তাঁদের পরিবার, আপনজন। বোলপুর কোভিড হাসপাতালে কর্মরত শ্রেয়সী মণ্ডল এবং সিউড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের মৌমিতা মুখোপাধ্যায় (বন্দ্যোপাধ্যায়)।
রামপুরহাটের বাসিন্দা শ্রেয়সী। গত বছর কোভিড পরিস্থিতির মধ্যে তিনি প্রথমে নাকড়াকোন্দা বিপিএইচসির অন্তর্গত পাঁচড়া প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যোগদান করেন। সেখানে করোনা পরীক্ষার জন্য রোগীদের নমুনা সংগ্রহ এবং ভ্যাকসিন প্রদানের দায়িত্ব পালন করেছেন। এরপর গত একমাস ধরে তিনি বোলপুরের কোভিড হাসপাতালে কাজ করছেন। সেখানে কোভিড রোগীদের সুস্থ করে তুলতে নিরলস পরিশ্রম করে চলেছেন। নিজের বাড়ি যাওয়ার সময়টুকু নেই। তবু অসুস্থ রোগীদের সামনে মুখের হাসিটুকু মিলিয়ে যায়নি আজও। শ্রেয়সীর কথায়, ‘‘টানা ছ'ঘন্টা পিপিই কিট পরে কোভিড হাসপাতালে রোগীদের সেবা শুশ্রূষা করতে হয়। তাঁর কথায়, ‘‘পিপিই কিট পরে ডিউটি করা অত্যন্ত কষ্টদায়ক। কিন্তু যে সমস্ত রোগীরা আসছেন তাঁরাও তো কারও না কারও পরিবারের মানুষ। সকলে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরলে মানসিক শান্তি পাই। মনে হয় নিজের কেউ ফিরলেন।’’ অন্যদিকে, সিউড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডের ফ্লোর কো-অর্ডিনেটর মৌমিতা। তিনি করোনার প্রথম ঢেউয়ের সময় বোলপুরের গ্লোকাল হাসপাতালে সিস্টার ইনচার্জ ছিলেন। ঘরে তাঁর অপেক্ষায় দিনের পর দিন অপেক্ষা করত সাড়ে তিন বছরের শিশুকন্যা। তিনি বলেন, ‘‘প্রথম দিকে মেয়ের সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলতাম। কিন্তু তাতে সে আরও কান্নাকাটি করত। তখন ভিডিও কল করাও বন্ধ করে দিলাম। কেবল স্বামীর সঙ্গে একটা মুহুর্তে ফোনে কথা বলতাম। তবু মন শান্তি পেত সুস্থ করে কাউকে বাড়ি ফেরাতে পারলে।’’
চারিদিকে এমন শ্রেয়সী আর মৌমিতার সংখ্যা কম নয় বলেই হয়তো এখনও আক্রান্তদের মধ্যে সুস্থতার হার বেশি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy