প্রতীকী চিত্র।
এক দিকে কো-উইন অ্যাপে নানা সমস্যার অভিযোগ, অন্য দিকে ইন্টারনেট ব্যবহার নিয়ে অনেকেরই ধারণা কম— এই পরিস্থিতিতে অনলাইনে করোনা প্রতিষেধক নেওয়ার ‘স্লট বুক’ করতে গিয়ে অসুবিধায় পড়ছিলেন অনেকেই। সমস্যা মেটাতে গ্রামাঞ্চলে ফের অফলাইনে করোনা প্রতিষেধক দেওয়া শুরু করল বাঁকুড়া জেলা প্রশাসন। জেলার তিন শহর বাঁকুড়ায় ৭০ শতাংশ এবং বিষ্ণুপুর ও সোনামুখীকে ২০ শতাংশ বুকিং অনলাইনে নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে
রবিবার বাঁকুড়ার জেলাশাসক কে রাধিকা আইয়ার বলেন, “অনলাইনে বুকিং নিয়ে নানা সমস্যা হচ্ছে বলে আমাদের কাছে অভিযোগ এসেছে। তাই গ্রামাঞ্চলে ১০০ শতাংশ ও জেলার তিনটি পুরশহরে চাহিদা মতো অনলাইন বুকিং-এর বরাদ্দ রাখা হয়েছে।” তাঁর সংযোজন, “বাঁকুড়া ও বিষ্ণুপুর স্বাস্থ্য জেলার মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে অনলাইনে বুকিং নেওয়া শুরু করতে হবে দুপুর তিনটে থেকে। সর্বত্র যেন একই সময়ে বুকিং নেওয়া শুরু হয়।”
জেলাশাসক জানান, ইতিমধ্যে ১২ বছর পর্যন্ত বয়সের শিশু ও বালক-বালিকাদের মায়েদের বেশির ভাগের টিকাকরণ হয়ে গিয়েছে। এ বার অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে থাকা বিভিন্ন ধরনের মানুষকে টিকার দেওয়া লক্ষ নেওয়া হয়েছে।
ঘটনা হল, অফলাইনে প্রতিষেধক নিতে ভোর-রাত থেকে প্রতিষেধক কেন্দ্রগুলির সামনে সাধারণ মানুষকে লাইন দিতে দেখা যেত। টিকাকরণ কেন্দ্র খোলার সময় ব্যাপক ভিড় জমত। এ নিয়ে জেলার বহু প্রতিষেধক কেন্দ্রেই বিশৃঙ্খলা দেখে দেয়। কিছু ক্ষেত্রে পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশকেও হস্তক্ষেপ করতে হয়। এই সব ঘটনার জেরে মাসখানেক আগে প্রশাসনের তরফে অফলাইনে প্রতিষেধক দেওয়া বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।
নতুন করে অফলাইনে বুকিং চালু হওয়ায় প্রতিষেধক কেন্দ্রের সামনে ভিড় কী ভাবে এড়ানো যাবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। তাছাড়া অফলাইনে দ্রুত প্রতিষেধক পাইয়ে দেওয়ার নাম করে দালাল চক্র চালানোর অভিযোগে উত্তাল হয়েছিল বিষ্ণুপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্র। প্রশাসনের এই নির্দেশিকায় নতুন করে ফের দালাল চক্র মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে কি না, তা নিয়েও বিভিন্ন মহলে আশঙ্কা দানা বাধতে শুরু করেছে।
জেলাশাসক বলেন, “নতুন করে অফলাইন চালু হলেও কোথাও প্রতিষেধক নিতে লাইন দেওয়ার দরকার পড়বে না। শহরাঞ্চলের ক্ষেত্রে মহকুমাশাসক এবং গ্রামাঞ্চলের ক্ষেত্রে ব্লক অফিস প্রতিষেধক প্রাপকদের তালিকা তৈরি করবে। সেই তালিকা মোতাবেক টোকেন দেওয়া হবে প্রাপকদের। সেই টোকেন দেখালেই মিলবে প্রতিষেধক।”
বাঁকুড়া স্বাস্থ্য জেলার মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক শ্যামল সরেন বলেন, “স্বাস্থ্য দফতরের হাতে মজুত থাকা প্রতিষেধক আমরা বিভিন্ন কেন্দ্রে পাঠিয়ে দেব। ব্লক দফতরের দেওয়া তালিকা মোতাবেক মানুষজনকে প্রতিষেধক দেওয়া হবে।”
গোটা প্রক্রিয়াটি সুষ্ঠ ভাবে করতে পরিকল্পনা শুরু করেছে ব্লক প্রশাসন। বিডিও (বাঁকুড়া ১) অঞ্জন চৌধুরী বলেন, “আমাদের মূল লক্ষ প্রতিষেধক কেন্দ্রের সামনে ভিড় জমতে না দেওয়া ও টোকেন নিয়ে দালাল চক্রকে ঠেকানো। শীঘ্রই এ নিয়ে বৈঠকে বসে গোটা প্রক্রিয়াটি কী ভাবে হবে সে পরিকল্পনা করব।”
জেলা প্রশাসনের একটি সূত্রের খবর, কারা টিকা পাননি, সেই তালিকা অনেক পঞ্চায়েত ও পুরসভার কাছে রয়েছে। ব্লক অফিসের কাছে স্বনির্ভর গোষ্ঠী থেকে একশো দিনের শ্রমিকদের নামের তালিকাও রয়েছে। আপাতত এই রকম তালিকা ধরে টিকা দেওয়ার ভাবনা রয়েছে। আগ্রহীরা পঞ্চায়েত, পুরসভা বা ব্লক অফিসে গিয়ে তাঁরা যে টিকা নিতে ইচ্ছুক, তা জানাতে পারেন। ধাপে ধাপে সবাইকে টিকা দেওয়া হবে। অধৈর্য হলে চলবে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy