তড়িঘড়ি: জীবাণুমুক্ত করা হচ্ছে পুরুলিয়া নার্সিং হস্টেল। —নিজস্ব চিত্র।
পুরুলিয়ায় ফের এক দিনে একশো ছাড়াল করোনা-আক্রান্তের সংখ্যা। জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, মঙ্গলবার নতুন করে আরও ১২১ জন আক্রান্তের কথা জানা গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে জেলায় একটি পৃথক সরকারি কোভিড-হাসপাতাল গড়ার প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে। অন্য দিকে, বুধবার সংক্রমণ ধরা পড়েছে পুরুলিয়ার দেবেন মাহাতো সরকারি মেডিক্যাল কলেজের ১১ জন নার্সের।
পুরুলিয়া মেডিক্যালের সুপার সুকোমল বিষয়ী জানান, হস্টেলের আবাসিকদের লালারসের নমুনা পরীক্ষা করতে গিয়ে ১১ জন নার্সের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। তাঁদের কয়েকজন অপারেশন থিয়েটার, মেল সার্জিক্যাল ওয়ার্ড ও শিশু বিভাগে কর্মরত ছিলেন। তবে এই ঘটনায় হাসপাতালের কোনও বিভাগ বন্ধ হয়নি। আক্রান্তদের সবাইকে হোম আইসোলেশনে পাঠানো হয়েছে। স্যানিটাইজ় করা হচ্ছে হস্টেল। কাজের সূত্রে তাঁদের সংস্পর্শে আসা লোকজনকে চিহ্নিত করে করোনা পরীক্ষার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। দুই রোগীর সংক্রমণ ধরা পড়ায় দিন দু’য়েক আগে হাসপাতালের ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। সুপার জানিয়েছেন, স্যানিটাইজ় করার পরে, মঙ্গলবারই তা খুলে দেওয়া হয়েছে।
গত সোমবার ১১৫ জন আক্রান্তের হদিস মিলেছিল পুরুলিয়ায়। মঙ্গলবার আক্রান্তের সংখ্যা আরও বেড়েছে। জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, মঙ্গলবার পর্যন্ত জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৯৭০ জন। তবে অনেকেই সুস্থ হয়ে উঠেছেন। প্রশাসন জানিয়েছে, মঙ্গলবার ‘অ্যাক্টিভ’ করোনা রোগীর সংখ্যা ছিল ৪৬২ জন। এই পরিস্থিতিতে জেলায় পৃথক একটি সরকারি কোভিড-হাসপাতাল করার দাবি জোরদার হয়েছে। ইতিমধ্যেই এই নিয়ে সরব হয়েছেন বাঘমুণ্ডির কংগ্রেস বিধায়ক নেপাল মাহাতো ও বিধানসভার স্বাস্থ্য বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য কংগ্রেসের সুদীপ মুখোপাধ্যায়। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ‘আইসিএমআর’-এর গাইডলাইন অনুসারে করোনা চিকিৎসার চারটি স্তর রয়েছে। তার মধ্যে প্রথম দু’টি স্তরের চিকিৎসা পুরুলিয়ায় হয়। তৃতীয় ও চতুর্থ স্তরের চিকিৎসার জন্য রোগীদের পাঠানো হয় বাঁকুড়ার ওন্দার কোভিড-হাসপাতালে।
বুধবার রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের কোভিড বিষয়ক ‘অফিসার অন স্পেশ্যাল ডিউটি’ গোপালকৃষ্ণ ঢালি পুরুলিয়ায় এসে বৈঠক করেন। বৈঠকে ছিলেন জেলাশাসক রাহুল মজুমদার, অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) আকাঙ্ক্ষা ভাস্কর, জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অনিলকুমার দত্ত, মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ পীতবরণ চক্রবর্তী প্রমুখ। বৈঠকের পরে, তাঁরা হাসপাতালের ক্যাম্পাসে নতুন তৈরি হওয়া একটি ভবনে আইসোলেশন ওয়ার্ড পরিদর্শন করেন। শহরের যে বেসরকারি হাসপাতালটিকে কোভিড-হাসপাতাল করা হয়েছিল, সেটিও ঘুরে দেখেন। পরিদর্শন হয় হাতোয়াড়ায় মেডিক্যাল কলেজের নবনির্মিত ক্যাম্পাসেও।
গোপালকৃষ্ণবাবু জানান, জেলার রোগীদের যাতে জেলাতেই তৃতীয় ও চতুর্থ স্তরের করোনা চিকিৎসা দেওয়া যায়, সে চেষ্টা চলছে। তিনি বলেন, ‘‘পুরুলিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে আমরা এই জেলাতেও একটি কোভিড-হাসপাতাল করার ভাবনা নিয়ে এ দিনের বৈঠক করেছি।’’ তিনি জানান, পৃথক কোভিড-হাসপাতালের জন্য কী পরিকাঠামো, যন্ত্রপাতি, স্বাস্থ্যকর্মী লাগবে, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কোনও রোগীর জন্য বিশেষজ্ঞের পরামর্শ দরকার হলে টেলি-মেডিসিনের মাধ্যমে তা দেওয়া হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy