শিবপুরে চলছে মাটি কাটার কাজ। (ডান দিকে) দলীয় কর্মীদের সঙ্গে কথা অনুব্রতর। —নিজস্ব চিত্র।
দাবিদাওয়া নিয়ে আলোচনার পথ খোলা থাকছে। তবে, তা কোনও ভাবেই প্রকল্পের কাজ বন্ধ করে নয়।
শাসকদলের পক্ষ থেকে আন্দোলনকারীদের ওই বার্তা দিয়েই মঙ্গলবার গোটা এলাকা র্যাফ ও কম্বাট ফোর্স দিয়ে মুড়ে ফের শুরু হল বোলপুরের শিবপুর মৌজার অধিগৃহীত জমিতে প্রস্তাবিত গীতবিতান থিমসিটি ও বিশ্ববাংলা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ। তার আগে অবশ্য সকাল থেকেই এলাকার বিভিন্ন গ্রামে নিজেদের দাবির সপক্ষে মিছিল বের করেন আন্দোলনকারীরা।
পরে প্রকল্প এলাকায় বহিরাগতদের উপস্থিতি দেখে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের আলোচনার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন আন্দোলনকারীরা। যদিও পরে সংবাদমাধ্যমের কাছে তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল দাবি করেন, ‘‘শিবপুরে উন্নয়নের কাজ থেমে থাকবে না। ওখানে তো শিল্পই হচ্ছে। তবে, আলোচনার পথ খোলা আছে। আজ, বুধবার আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসব।’’
শিল্প, কর্মসংস্থান ও ন্যায্য ক্ষতিপূরণের দাবিতে সোমবার সকালে প্রকল্প এলাকায় ঢুকে বিভিন্ন অংশে নির্মীয়মাণ প্রাচীর ভাঙা, টায়ার জ্বালিয়ে অগ্নি সংযোগ করে আন্দোলনকারীরা। আর তার পরেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এলাকার পরিস্থিতি। নিরাপত্তার অভাবে শ্রমিকেরা কাজ বন্ধ করে দেন। আইন শৃঙ্খলার পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে এ দিন তাই সকাল থেকেই অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) সুবিমল পালের নেতৃত্বে এসডিপিও (বোলপুর) অম্লানকুসুম ঘোষ-সহ আশপাশের একাধিক থানা এলাকার আইসি, ওসিরা বিশাল পুলিশ বাহিনী নিয়ে প্রকল্প এলাকায় হাজির ছিলেন। আবার তাঁদেরই পাশাপাশি আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে হাজির হয়েছিলেন স্থানীয় তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য, দলের অঞ্চল নেতৃত্ব এবং শ্রীনিকেতন-শান্তিনিকেতন কৃষিজমি বাঁচাও কমিটির লোকজন। আন্দোলনকারীরা অবশ্য সকাল থেকে স্থানীয় নুরপুর, সুপুর, সাবিরগঞ্জ, বেনেপুকুর, উলুপুকুর ও রামচন্দ্রপুর এলাকায় মিছিল করেন।
আলোচনার প্রস্তাব নিয়ে ওই আন্দোলনকারীদের কাছে দুপুর থেকে একাধিক বার গিয়েও তেমন সাড়া পাননি তৃণমূল নেতৃত্ব। এমনকী, প্রশাসনের ডাকেও তাঁরা সাড়া দেননি। তৃণমূলের রাইপুর-সুপুর অঞ্চল সহ-সভাপতি তথা শ্রীনিকেতন-শান্তিনিকেতন কৃষিজমি বাঁচাও কমিটির সভাপতি মোজাম্মেল হক, স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য জামাল খান, সুবল পাল দুপুরে আলোচনায় বসার জন্য বার কয়েক সাবিরগঞ্জে জড়ো হওয়া আন্দোলনকারীদের কাছে যান। কিন্তু তাতেও ফল মেলেনি। আন্দোলনকারীদের দাবি, ‘‘আমাদের দাবি নিয়ে আলোচনার জন্য অনুব্রত মণ্ডল আসবেন বলে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব আশ্বাস দিয়েছিল। তার বদলে কয়েকশো বহিরাগত লোক নিয়ে তৃণমূল নেতৃত্ব এলাকায় জড়ো হয়। নিরাপত্তার অভাব দেখেই আমরা আলোচনায় যেতে রাজি হয়নি।’’
এ দিকে, বিকেলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, এসডিপিও-র উপস্থিতিতে সাবিরগঞ্জের যুবসঙ্ঘ দিক থেকে জেসিবি মেশিন দিয়ে প্রকল্প এলাকায় মাটি কাটা এবং সীমানা প্রাচীর দেওয়ার জন্য দাগ দেওয়ার কাজ শুরু হয়। আরও পরে আউশগ্রাম থেকে একটি জনসভায় যোগ দিয়ে ফেরার পথে শিবপুর মৌজায় বোলপুর-ইলামবাজার বাইপাস রাস্তায় দাঁড়িয়ে দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে দেখা করে পরিস্থিতির খোঁজ নেন অনুব্রত। তাঁর সঙ্গে কথাবার্তার পরে মোজাম্মেলরাও বলেন, ‘‘আন্দোলনকারীদের জন্য আলোচনার রাস্তা খোলা রেখেই উন্নয়নের কাজ চলবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy