Advertisement
১২ অক্টোবর ২০২৪
Purnima Kandu Death Case

তপন কান্দুর স্ত্রী পূর্ণিমাকে ‘বিষপ্রয়োগ করে খুন করা হয়েছে’! সিবিআই দাবি করে অভিযোগ পরিবারের

শুক্রবার সন্ধ্যায় বাড়িতে ছিলেন ঝালদা ১২ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস কাউন্সিলর পূর্ণিমা। ছেলেমেয়েরা ঠাকুর দেখতে বেরিয়েছিলেন। তাঁরা ফিরে এসে মাকে অচৈতন্য অবস্থায় দেখতে পেয়ে প্রতিবেশীদের খবর দেন।

(বাঁ দিকে) পূর্ণিমা কান্দু। তপন কান্দু (ডান দিকে)।

(বাঁ দিকে) পূর্ণিমা কান্দু। তপন কান্দু (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
ঝালদা শেষ আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০২৪ ১৯:২০
Share: Save:

নিহত ঝালদার কংগ্রেস নেতা তপন কান্দুর স্ত্রী পূর্ণিমার মৃত্যু ঘিরে ঘনাচ্ছে রহস্য! পরিবারের অভিযোগ, তাঁর শরীরে আস্তে আস্তে বিষপ্রয়োগ করা হয়েছে। আর সেই কারণেই মৃত্যু হয়েছে তাঁর। পূর্ণিমার দেহ ময়নাতদন্তের পর এমনই অভিযোগ তুলে সিবিআই তদন্তের দাবি জানালেন তপনের ভাইপো মিঠু কান্দু।

শুক্রবার সন্ধ্যায় বাড়িতে ছিলেন ঝালদা ১২ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস কাউন্সিলর পূর্ণিমা। পরিবারের লোকজন ঠাকুর দেখতে বেরিয়েছিলেন। তাঁরা ফিরে এসে তাঁকে অচৈতন্য অবস্থায় দেখতে পেয়ে প্রতিবেশীদের খবর দেন। পূর্ণিমাকে নিয়ে যাওয়া হয় ঝালদা ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। কিন্তু চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। পূর্ণিমার মৃত্যুতে চাঞ্চল্য ছড়ায় এলাকায়। কী ভাবে তাঁর মৃত্যু হল, তা নিয়ে পরিবারের মধ্য ধন্দ দেখা দেয়। তার পরই তাঁর দেহ ময়নাতদন্ত করানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

শনিবার পুরুলিয়ার সরকারি মেডিক্যাল কলেজে পূর্ণিমার ময়নাতদন্ত হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন কংগ্রেসের পুরুলিয়া জেলার সভাপতি নেপাল মাহাতো এবং ঝালদার ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মিঠু। সেখানেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, ‘‘কাকিমাকে (পূর্ণিমা কান্দু) স্লো পয়জনিং করে খুন করা হয়েছে।’’ কেন তাঁকে খুন করা হল, সে প্রশ্নের উত্তরে মিঠু বলেন, ‘‘আমার কাকু (তপন কান্দু) এক ব্যক্তিকে টাকা ধার দিয়েছিলেন। সেই টাকা যাতে শোধ করতে না হয় তার জন্যই আমার কাকিমাকে বিষপ্রয়োগ করে খুন করা হয়েছে।’’ কার দিকে অভিযোগের তির? মিঠু জানান, সময় এলেই তাঁর নাম প্রকাশ্যে আনবেন। এমনকি, পুলিশের কাছেও অভিযোগ জানানো হবে। তার পরই সিবিআই তদন্তের দাবি তুললেন তপনের ভাইপো।

সিবিআই তদন্তের কথা শোনা গিয়েছে কংগ্রেস নেতার নেপালের মুখেও। তিনি বলেন, ‘‘তপন কান্দু খুনের ঘটনার সিবিআই তদন্ত চলছে। সেই তদন্তের আবেদনকারী ছিলেন তপনের স্ত্রী পূর্ণিমা। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত কংগ্রেসের গুরুত্বপূর্ণ কর্মী ছিলেন। তাই এই মৃত্যু রহস্যের অবশ্যই তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। তপন খুনের তদন্তের সঙ্গে এই রহস্যমৃত্যু যুক্ত করে সিবিআইয়ের উচিত তদন্ত করে দেখা।’’ তবে এই প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত পূর্ণিমার মৃত্যু নিয়ে থানায় কোনও অভিযোগ জমা পড়েনি।

পুরভোটের পরে ২০২২ সালের ১৩ মার্চ সান্ধ্যভ্রমণে বেরিয়ে ঝালদা-বাঘমুণ্ডি রাস্তায় গোকুলনগরের অদূরে রাস্তার উপরে আততায়ীদের গুলিতে নিহত হন তপন। ঘটনার পরে জেলা পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) তদন্তে নামে। সিট প্রথমেই গ্রেফতার করে তপন কান্দুর ভাইপো দীপক কান্দুকে। তিনি পুরভোটে তপনের বিরুদ্ধে তৃণমূলের প্রার্থী ছিলেন। তার পরে ওই ঘটনায় জড়িত অভিযোগে ঝাড়খণ্ডের বোকারোর গাইছাঁদ গ্রাম থেকে কলেবর সিংহকে গ্রেফতার করে সিট। দীপকের বাবা তথা তপনের দাদা নরেন কান্দু ও ঝালদারই কুটিডি গ্রামের বাসিন্দা মহম্মদ আশিক খান গ্রেফতার হন। ওই হত্যাকাণ্ডে সিট ও সিবিআই এখনও পর্যন্ত মোট সাত জনকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতার হওয়া বাকি দু’জন হল সুপারি কিলার অভিযোগে ধৃত জাবির আনসারি ও শশিভূষণ সিংহ। ধৃতদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধেই আদালতে চার্জশিট জমা দিয়েছে সিবিআই। তবে মামলা এখনও বিচারাধীন। সেই আবহে পূর্ণিমাকে খুনের অভিযোগ তুলল পরিবার।

অন্য বিষয়গুলি:

Tapan Kandu Congress Death Jhalda
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE