রঘুনাথপুরের ১ নম্বর ওয়ার্ডে নর্দমার জল মিশছে পুকুরে। ছবি: সঙ্গীত নাগ
সাম্প্রতিক অতিবৃষ্টিতে পুরুলিয়া ও বাঁকুড়া, দু’জেলার বিস্তীর্ণ গ্রামাঞ্চল যেমন ভেসেছে, তেমনই জলবন্দি হয়েছে শহর এলাকাগুলিও। সময়ের সঙ্গে শহরগুলি বহরে বাড়লেও নিকাশি-সমস্যার দিকে নজর না দেওয়ায় এই পরিণতি বলে অভিযোগ। খামতি কোথায়, খোঁজ নিল আনন্দবাজার
ভারী বৃষ্টি হলেই জলমগ্ন হয়ে পড়ে পুরুলিয়ার রঘুনাথপুর শহরের বেশ কিছু ওয়ার্ড। বুধ ও বৃহস্পতিবারের বৃষ্টিতেও একই ছবি দেখা গিয়েছে ওই এলাকায়। জলমগ্ন হয়ে পড়েছিল ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মহারানি পল্লি, ২ নম্বর ওয়ার্ডের কেওট বস্তি। ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের পশ্চিমপল্লি ও বিবেকানন্দ পল্লি। এ ছাড়া, শহরের ৩, ৬ এবং ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কিছু এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়েছিল। পুরকর্মীরা পাম্প চালিয়ে জল বার করেছেন।
এমন পরিস্থিতির জন্য ‘বেহাল’ নিকাশি ব্যবস্থাকেই দায়ী করছেন শহরের বাসিন্দাদের একাংশ এবং বিরোধীরা। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে শহরের জনবসতি। কিন্তু তার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নিকাশি ব্যবস্থা তৈরি হয়নি বলে অভিযোগ শহরবাসীর বড় অংশের।
যদিও পুরসভার দাবি, এই পরিস্থিতির জন্য শুধু নিকাশি ব্যবস্থার দিকে আঙুল তুললেই হবে না। নিচু এলাকায় অপরিকল্পিত ভাবে বাড়ি তৈরি হওয়ায় কিছু এলাকা জলমগ্ন হয়েছে। তবে পরিকল্পিত ভাবে নিকাশি ব্যবস্থা যে তৈরি হয়নি, তা অবশ্য মেনেছেন পুর-কর্তৃপক্ষ।
পুরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের শেখ নওশাদ, শেখ শামিমদের ক্ষোভ, ‘‘পাশের ডমনসায়র পুকুর উপচে গেলে যে নালা দিয়ে জল বার হওয়ার কথা, সেটা বুজে গিয়েছে। ফলে, লোকালয় জলমগ্ন হচ্ছে।” ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের এবিটিএ ভবনের পাশের পাড়ার বাসিন্দা রবিলোচন নন্দী ও বিমলচন্দ্র মণ্ডলদের অভিযোগ, ‘‘পাড়ায় কোনও নালাই তৈরি করেনি পুরসভা। ভাগাবাঁধের জল পাড়ায় ঢুকলে, তা বেরনোর রাস্তা পাচ্ছে না।”
বিজেপির রঘুনাথপুর শহর সভাপতি স্বপ্নেশ দাসের অভিযোগ, ‘‘নিয়মিত পরিষ্কার না হওয়ায় নর্দমাগুলি বুজে গিয়েছে। সে কারণে, ভারী বৃষ্টি হলে জলমগ্ন হয়ে পড়ে বসতি এলাকা। বাড়িতে জল ঢুকে যায়।” শহর কংগ্রেসের সভাপতি তারকনাথ পরামাণিক বলেন, ‘‘পরিকল্পিত নিকাশি ব্যবস্থা তৈরি না হওয়ায় বারবার একই সমস্যা তৈরি হয়। সে জন্য মাস্টার প্ল্যান জরুরি। কিন্তু তা তৈরি করতে পারেনি পুরসভা।”
নিকাশির সমস্যার কথা মেনে নিলেও পুর-প্রশাসক তরণী বাউড়ি বলেন, ‘‘সীমিত আর্থিক ক্ষমতার মধ্যে যতটা সম্ভব নিকাশি ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে।” নর্দমা সাফাইয়ে গাফিলতির অভিযোগ অবশ্য মানতে নারাজ তিনি।
পুর-আধিকারিকদের একাংশ মনে করছেন, পরিকল্পিত নিকাশি ব্যবস্থা তৈরি না করলে এই সমস্যা থেকে মুক্তি মিলবে না। কারণ, নর্দমাগুলি মিশেছে বিভিন্ন পুকুরে। ভারী বৃষ্টি হলে এমনিতেই পুকুরের জল বাড়ে। তখন নর্দমার জল পুকুরে পড়লে তা উপচে লোকালয়ে ঢুকে পড়ে। পুকুরের বদলে জল শহরের বাইরে বুন্দলা ও উতলার জোড়ে ফেলার ব্যবস্থা করা গেলে এই সমস্যা হবে না।
তরণীবাবু বলেন, ‘‘এই পরিকল্পনা আছে। কিন্তু সে ব্যবস্থা গড়ে তুলতে যা অর্থ প্রয়োজন, সেটা পুরসভার নেই।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy