Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

রানি, আল আমিনদের ভিড় সম্প্রীতির উৎসবে

এতদিন ভাইফোঁটার কথা শুনেই এসেছিলেন পোশলার আলআমিন সেখ, সরডাঙার চাঁদ সেখরা। তাঁদের কপালেও যে কেউ ফোঁটা দিতে পারে তা ভাবেননি কোনওদিন। এ বারই তাঁদের কপালে ফোঁটা দিল দীঘলডাঙার মৌ হাজরা, কীর্ণাহারের প্রমিতা বন্দ্যোপাধ্যায়রা।

চন্দন: বোনেরা ফোঁটা দিচ্ছে ভাইদের কপালে। নিজস্ব চিত্র

চন্দন: বোনেরা ফোঁটা দিচ্ছে ভাইদের কপালে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কীর্ণাহার শেষ আপডেট: ২২ অক্টোবর ২০১৭ ০১:১৫
Share: Save:

এতদিন ভাইফোঁটার কথা শুনেই এসেছিলেন পোশলার আলআমিন সেখ, সরডাঙার চাঁদ সেখরা। তাঁদের কপালেও যে কেউ ফোঁটা দিতে পারে তা ভাবেননি কোনওদিন। এ বারই তাঁদের কপালে ফোঁটা দিল দীঘলডাঙার মৌ হাজরা, কীর্ণাহারের প্রমিতা বন্দ্যোপাধ্যায়রা। প্রায় শতাধিক ভাইকে এ দিন ফোঁটা দিলেন ২০ বোন। কীর্ণাহার ২ নং তৃণমূল কংগ্রেস কমিটির পক্ষ থেকে দলীয় কার্যালয়ে ওই গণভাইফোঁটার আয়োজন করা হয়।

এ দিন সকাল থেকেই তাই ছিল সাজো সাজো রব। বোনেদের মধ্যে টিপটিপে বৃষ্টি মাথায় কেউ তুলছিলেন দুব্বো, কেউ বা বাঁটছিলেন চন্দন, আবার কেউ ভাজছিলেন ফুলকো ফুলকো লুচি। সকাল ১০টা থেকেই স্নান করে একে একে ভিড় জমান ভাইয়েরা। কচি কাঁচা থেকে প্রবীণ ভাইয়ের দলে ছিলেন সবাই। বোনেরাও তার ব্যতিক্রম নন। ৪ বছরের আবীর সেখ, ৩৮ তুলু সেখ, ৫৪ বছরের আল আমিন সেখদের পাশাপাশি ৬৫ বছরের গোপাল মুর্মু, ৫৫ বছরের স্বপন ঘোষদের কপালে ফোঁটা দিতে দিতেই ৭ বছরের রানি হাঁসদা, ৮ বছরের প্রসিদ্ধা চট্টোপাধ্যায়রা প্রচলিত রীতি অনুযায়ী দিব্যি আবৃত্তি করার মতো ‘যম দুয়ারে কাঁটা’ দেওয়ার ছড়া আউড়াল।

তখন শাঁক বাজিয়ে আর উলুধ্বনি দিয়ে উঠলেন খোদ কীর্ণাহার ২ নং পঞ্চায়েতের প্রধান সুলেখা সাহা, পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যা সরমনি হাঁসদা, পঞ্চায়েত সদস্যা কৃষ্ণা মেটে, নন্দিতা মণ্ডলরা।

ফোঁটা দেওয়া হয়ে গেলে বোনেরা ভাইদের এদিয়ে দিলে লুচি, ঘুগনি, মিষ্টি আর পায়েসের থালা। আর ভাইয়েরা সামর্থ্য অনুযায়ী বোনেদের হাতে তুলে দিলেন ২০/৫০ টাকার নোট। একাদশ শ্রেণির ছাত্রী অঙ্কিতা মণ্ডল, দেবিকা ঘোষরা জানায়, একসঙ্গে এত ভাইকে ফোঁটা দেওয়ার কথাটা কোনওদিন ভুলব না। সুযোগ পেলে প্রতিবছরই এই ভাইফোঁটায় সামিল হব। একই অভিব্যক্তি ভাইদেরও। চাঁদ সেখ, তুলু সেখরা জানান, হিন্দু ভাইদের মুখে ভাইফোঁটার কথা শুনেছিলাম। তা যে কোনওদিন আমাদের কপালে জুটবে ভাবিনি। এ দিনের ভাইফোঁটায় ছিলেন তৃণমূলের সংশ্লিষ্ট অঞ্চল কমিটির সভাপতি বিদ্যুৎ চট্টোপাধ্যায়, পঞ্চায়েত সমিতির শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়, মৎস কর্মাধ্যক্ষ প্রশান্ত দাসরাও। তাঁরা বলেন, ‘‘সম্প্রীতির এই ভাইফোঁটা উভয় সম্প্রদায়ের ভাইবোনেরা তো বটেই, ভাইবোন না থাকা অনেকে এই প্রথম ভাইফোঁটার স্বাদ পেলেন।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Communal harmony Bhai Phonta Hindu Muslim
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE