এখানেই পড়েছিল দেহ। পরিদর্শনে কমিশন। ছবি: রথীন্দ্রনাথ মাহাতো।
৩০ জানুয়ারি ঠিক কী ঘটেছিল? পুরুলিয়া জেলার নিহত পড়ুয়ার স্কুলে গিয়ে শুক্রবার সেই প্রশ্নেরই উত্তর খোঁজার চেষ্টা করলেন রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন তুলিকা দাস। জেলা শিশু সুরক্ষা কমিটির মতোই তাঁর নজরেও ওই আবাসিক স্কুলের নানা অব্যবস্থা ধরা পড়েছে।
পরে কমিশনের চেয়ারপার্সন তুলিকা বলেন, ‘‘রাজ্যে কোথায় কী ঘটছে, শিশুদের কী অবস্থা, তা নিয়ে আমরা নিয়মিত জেলার সঙ্গে যোগাযোগ রাখি। শিশুদের সুরক্ষার স্বার্থে পরিকাঠামোগত সমস্যাগুলি জানার পরে যাতে তা পরিবর্তন করা যায়, তা আমরা দেখছি।’’
কমিশনের চেয়ারপার্সনের সঙ্গে আরও এক সদস্য ছিলেন। ছিলেন জেলা শিশু সুরক্ষা কমিটির চেয়ারপার্সন নীলিমা দাস চৌধুরী-সহ অন্য সদস্যেরাও। পড়ুয়াদের ছুটি দেওয়ায় তাদের সঙ্গে কথা বলা যায়নি। পরে স্কুলের শিক্ষকদের নিয়ে তাঁরা বৈঠকে বসেন। সেখানে ছিলেন মানবাজারের এসডিপিও বরুণ বৈদ্য ও বিডিও (মানবাজার ১) দেবাশিস ধর।
কমিশন ও জেলা শিশু সুরক্ষা কমিটির সদস্যেরা প্রথমে স্কুল চত্বর ঘুরে দেখেন। দেখেন ক্লাসঘর, ছাত্রাবাস। ঘণ্টা দুয়েক রুদ্ধদ্বার বৈঠকের পরে তাঁরা সেই পুকুরের ধারেও যান। যেখানে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় বছর ছয়েকের ওই খুদে পড়ুয়াকে উদ্ধার করা হয়েছিল।
তদন্ত করে পুলিশ জানিয়েছে, ৩০ জানুয়ারি টিফিনের সময় অষ্টম শ্রেণির এক আবাসিক পড়ুয়া শিঙাড়া খাইয়ে ফুসলিয়ে বছর ছয়েকের খুদে পড়ুয়াকে ওই পুকুরের ধারে নিয়ে গিয়ে পাথর দিয়ে থেঁতলে খুন করে। পরে সে একাই স্কুলে ফিরে আসে।টিফিনের পরে একটি ক্লাসে সে অনুপস্থিত থাকলেও পরেরগুলিতে সে ছিল। অথচ প্রথম শ্রেণির সেই পড়ুয়ার বই-ব্যাগ ক্লাসে পড়ে থাকলেও সে টিফিনের পরে কে স্কুলে আসেনি, তা নিয়ে কারও মনে প্রশ্ন জাগেনি কেন? সূত্রের দাবি, এ দিন সেই প্রশ্নগুলি বৈঠকে ওঠে। আবাসিক ছাড়া স্কুলের বাকি পড়ুয়াদের কেন শৌচকর্ম করতে পুকুরে যেতে হয়, তা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। মিশন নির্মল বাংলা প্রকল্পে শৌচাগার গড়ার আবেদন কি স্কুল কর্তৃপক্ষ প্রশাসনের কাছে করেছিলেন? বৈঠকে এমন নানা প্রশ্ন ওঠে। কিছু ক্ষেত্রে অর্থাভাব ছাড়া স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে এই প্রশ্নের কোনও সদুত্তর পাওয়া যায়নি বলে
সূত্রের দাবি।
টিফিনের সময় মূল গেট খুলে দেওয়ায় অনেক পড়ুয়ার অভিভাবক খাবার দিতে আসেন। তখন পরিচয়পত্র দেখার বালাই কেন নেই? কেই স্কুলে সিসিক্যামোর নজরদারি নেই, এমন বহু প্রশ্ন দু’দিন আগে জেলা শিশু সুরক্ষা কমিটির তদন্তে উঠে এসেছিল। এ দিনের বৈঠকেও সেই প্রসঙ্গ ওঠে। সিসি ক্যামেরা থাকলে হয়তো খুদে পড়ুয়াকে বাইরে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা নজরে আসত।
কমিশনের চেয়ারপার্সন বলেন, ‘‘খুদে পড়ুয়ার মৃত্যুর ঘটনার তদন্ত চলছে। শিশুদের সুক্ষার স্বার্থে বিষয়টি অবশ্যই আমরা গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও কথা বলেছি। পরে আমরা স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আবার বসব।’’ স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ওঠা গাফিলতির অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘বিষয়টি এখন বিচারাধীন। তাই এ নিয়ে মন্তব্য করব না। আরও পাঁচশো পড়ুয়া এই স্কুলে পড়াশোনা করে। তাই বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সঙ্গেই দেখব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy